ওয়া
আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির
রহমানির রহিম।
জবাব,
যদি কেউ জাল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে চাকরি লাভ করে তাহলে এ ধরণের
জালিয়াতি কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।
হাদীসে এসেছে ,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ –ﷺ
– قَالَ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ
فَلَيْسَ مِنَّا وَمَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا
আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন, যে আমার উম্মতের উপর অস্ত্র উঁচু করে
সে আমার উম্মতভূক্ত নয়,
আর যে আমাদের সাথে ধোঁকাবাজী করে, সেও আমার উম্মতভূক্ত নয়। (সহীহ মুসলিম
২৯৪)
তবে ওই ব্যক্তি যদি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা রাখেন
এবং সে ওইসব দায়িত্ব ঠিকঠিক পালন করেন তাহলে তার বেতন হারাম হবে না। কেননা তা তার পরিশ্রমলব্ধ
আয়। (কিতাবুন নাওয়াজেল ১২/৫১৪, আহসানুল ফাতওয়া ৮/১৯৮)
পরীক্ষায় নকল করা কিংবা জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নেওয়া
মিথ্যা, খেয়ানত, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা এবং
যোগ্য ব্যক্তিদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার মতো গুনাহ। তাই পরীক্ষায় নকল করা শরয়ী দৃষ্টিকোণ
থেকে জায়েজ নয়। যারা এসব কর্মে লিপ্ত হয়, তাদের জন্য তওবা, ইসতিগফার করা আবশ্যক।
ইবনে মাসউদের (রা.) হাদিসটি যা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন: যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দেয়, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত
নয় এবং ষড়যন্ত্রকারী ও প্রতারক জাহান্নামে যাবে না। এবং আবু বকর সিদ্দিক রা. থেকে বর্ণিত ‘অভিশপ্ত সে
যে কোনো মুসলমানের ক্ষতি করে বা তার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে।’ তিরমিজি বর্ণনা করেছেন।
(জামিউল উলুম ওয়াল হিকামি: ৯/৩৫)
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় আপনি যদি নকল
সার্টিফিকেটের মাধ্যমে চাকরি পেয়ে যান, তাহলে আপনি গুনাহগার হবেন। ফলে আপনার জন্য
আন্তরিকভাবে তওবা করা আবশ্যক হবে। তবে আপনি
যদি সেই চাকরির জন্য যোগ্য হন এবং আপনার দায়িত্ব
পুরোপুরি পালন করতে পারেন, তাহলে সেই অবস্থায় বেতন গ্রহণ করা হালাল হবে। কারণ বেতন বা মজুরি
কর্মের বিনিময়ে হচ্ছে।
বেতন গ্রহণ করা হালাল নাকি হারাম হবে? সে বিষয়ে মূলনীতি
হচ্ছে যে, যদি
সেই ব্যক্তি তার সেই চাকরি ব্যাপারে যোগ্যতা রাখে এবং তিনি তার সব দায়িত্ব পুরোপুরি
পালন করতে পারে, তা
হলে সেই অবস্থায় বেতন গ্রহণ করা হালাল হবে। কেননা বেতন হালাল হওয়ার সম্পর্ক হলো
দায়দায়িত্ব সঠিকভাবে আদায় করার সঙ্গে।
আর যদি এমন হয় যে সেই ব্যক্তি ওই দায়িত্ব ও চাকরির যোগ্য না
হয় অথবা চাকরির যোগ্য কিন্তু সঠিকভাবে দ্বীনদারির সাথে কাজ করে না, তাহলে তার বেতন
গ্রহণ করা হালাল হবে না। (অর্থাৎ যে পরিমাণ খিয়ানত হবে সে পরিমাণ বেতন হালাল হবে না।)
আপনার তিনটি প্রশ্নের উত্তর একত্রে দেওয়া হয়েছে।