আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
99 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (14 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
আমি ইলেকট্রনিক্স ডিপার্টমেন্টে এ পড়াশোনা করেছি। কিছুদিন আগে আমি যখন জানতে পারলাম যে আমার এই ডিপার্টমেন্টের যে চাকরিগুলো হয় বেশিরভাগই হারাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই আমি ঠিক করেছিলাম আমি ইলেকট্রনিক্স এ পড়লেও আমি ইলেকট্রিক্যাল এর কাজ শিখবো এবং ইলেকট্রিক্যাল এর কোন বিভাগে চাকরি নেব।
আমার মনের মধ্যে একটি সন্দেহ কাজ করছে আমি শুনেছিলাম যদি অযোগ্য ব্যক্তি হয় ঘুষের মাধ্যমে চাকরি নিলে তার ইনকাম হারাম হয়। এখন আমি ইলেকট্রিক্যাল এর কাজ বিষয়ে জানি। আমি ইলেক্ট্রনিকস এর পরেও এইগুলা জেনেছি কারণ আমি ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ে চাকরি করতে চাই।
আমি একেবারে অযোগ্য না ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ে কাজ করার জন্য কারণ এই বিষয়ে কাজ করার জন্য আমি কাজ শিখেছি আমার শুধু পার্থক্য হল আমার কাছে ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সার্টিফিকেট নেই আর যে ইলেকট্রিকালে পড়াশোনা করবে তার কাছে সার্টিফিকেট আছে।

এখন আমার প্রশ্ন হল:
১.আমার মনের ভিতর একটু দুশ্চিন্তা কাজ করছে যে এখানে হয়তো কোন ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট চাকরি করতে পারত। সেখানে আমি ইলেকট্রনিক্স হয়ে ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট না হয়ে চাকরি করছি(কিন্তু আমি ইলেকট্রিক্যাল কাজ বিষয়ে জানা আছে শুধু ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সার্টিফিকেটটা নেই ইলেকট্রনিক্স এর সার্টিফিকেট আছে) আমার কোন আত্মীয়র মাধ্যমে তাদের বললাম যে আমি এরকম ইলেকট্রিক্যাল এর কাজগুলো করতে পারবো চাকরিটি যদি পাই(ঘুষ না দিয়ে) তাহলে আমার ইনকামকি হালাল হবে?

২. এখন আমি হারামের জন্য ইলেকট্রনিক্স এ চাকরি করতেও পারছিনা এখানে বেশিরভাগ চাকরিই হারাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই আমার সারা জীবন হালাল ভাবে চাকরি করতে হলে ইলেকট্রিকালে চাকরি করা লাগবে তো আমি আমার কোন আত্মীয়/ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত কোন বড় ভাই তাদেরকে বললাম যে আমি এমন ইলেকট্রনিক্স এ পড়াশোনা করেছি কিন্তু আমি ইলেকট্রিক্যাল এর কাজগুলো জানি আমি এমন কাজ করতে পারবো তাদের কাছে হেল্প চাইলাম তারা আমাকে ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ে চাকরিতে ঢুকিয়ে দিল। যদি চাকরি হালাল হয় ইনকাম কি হারাম হবে? কি অবস্থায় কি হক নষ্ট করার জন্য হারাম হবে?

৩. শুধু সার্টিফিকেট এইটুকু আমিল থাকার কারণে আমার পুরো চাকরি হালাল হবার পরেও কি হারাম হয়ে যাবে আমি ঘুষ দিয়ে চাকরি নিব না শুধু রেফারেন্স ব্যবহার করে নিব?

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

যদি কেউ জাল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে চাকরি লাভ করে তাহলে এ ধরণের জালিয়াতি কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।

হাদীসে এসেছে ,

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ –ﷺ – قَالَ  مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا وَمَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا

আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল ইরশাদ করেছেন, যে আমার উম্মতের উপর অস্ত্র উঁচু করে সে আমার উম্মতভূক্ত নয়, আর যে আমাদের সাথে ধোঁকাবাজী করে, সেও আমার উম্মতভূক্ত নয়। (সহীহ মুসলিম ২৯৪)

তবে ওই ব্যক্তি যদি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা রাখেন এবং সে ওইসব দায়িত্ব ঠিকঠিক পালন করেন তাহলে তার বেতন হারাম হবে না। কেননা তা তার পরিশ্রমলব্ধ আয়। (কিতাবুন নাওয়াজেল ১২/৫১৪, আহসানুল ফাতওয়া ৮/১৯৮)

পরীক্ষায় নকল করা কিংবা জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নেওয়া মিথ্যা, খেয়ানত, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা এবং যোগ্য ব্যক্তিদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার মতো গুনাহ। তাই পরীক্ষায় নকল করা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে জায়েজ নয়। যারা এসব কর্মে লিপ্ত হয়, তাদের জন্য তওবা, তিগফার করা আবশ্যক।

ইবনে মাসউদের (রা.) হাদিসটি যা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন: যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দেয়, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং ষড়যন্ত্রকারী ও প্রতারক জাহান্নামে যাবে না।  এবং আবু বকর সিদ্দিক রা. থেকে বর্ণিত ‘অভিশপ্ত সে যে কোনো মুসলমানের ক্ষতি করে বা তার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে।’ তিরমিজি বর্ণনা করেছেন। (জামিউল উলুম ওয়াল হিকামি: ৯/৩৫)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় আপনি যদি নকল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে চাকরি পেয়ে যা, তাহলে আপনি গুনাহগার হবে। ফলে আপনার জন্য আন্তরিকভাবে তওবা করা আবশ্যক  হবে। তবে আপনি যদি সেই চাকরির জন্য যোগ্য হন এবং আপনার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে পারেন, তাহলে সেই অবস্থায় বেতন গ্রহণ করা হালাল হবে। কারণ বেতন বা মজুরি কর্মের বিনিময়ে হচ্ছে।

বেতন গ্রহণ করা হালাল নাকি হারাম হবে? সে বিষয়ে মূলনীতি হচ্ছে যে, যদি সেই ব্যক্তি তার সেই চাকরি ব্যাপারে যোগ্যতা রাখে এবং তিনি তার সব দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে পারে, তা হলে সেই অবস্থায় বেতন গ্রহণ করা হালাল হবে। কেননা বেতন হালাল হওয়ার সম্পর্ক হলো দায়দায়িত্ব সঠিকভাবে আদায় করার সঙ্গে।

আর যদি এমন হয় যে সেই ব্যক্তি ওই দায়িত্ব ও চাকরির যোগ্য না হয় অথবা চাকরির যোগ্য কিন্তু সঠিকভাবে দ্বীনদারির সাথে কাজ করে না, তাহলে তার বেতন গ্রহণ করা হালাল হবে না। (অর্থাৎ যে পরিমাণ খিয়ানত হবে সে পরিমাণ বেতন হালাল হবে না।)

আপনার তিনটি প্রশ্নের উত্তর  একত্রে দেওয়া হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...