উত্তরঃ-
শরীয়ত সম্মত জবাইয়ের পদ্ধতি হল,প্রতিটা প্রানী জবাইয়ের পূর্বে আলাদা আলাদা ভাবে বিসমিল্লাহ বলা ওয়াজিব।
এ প্রসঙ্গে কুরআনের কারীমের ঘোষনা হলঃ
ولا تأكلوا مما لم يذكر اسم اللّٰه عليه ،
তোমরা খওনা (ওইসব পশু)যাতে (জবাইকালে)আল্লাহর নাম নেয়া হয় নাই।এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে,প্রত্যেক প্রানী জবাইকালে 'বিসমিল্লাহ 'এবং বিসমিল্লাহ পড়ার সঙ্গে জবাই করা জরুরী। এরই ওপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম নিম্নোক্ত মাসাইল উদঘাটন করেছেন,যা আমাদের আলোচিত মাসআলার সাথে সম্পৃক্ত।এই আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলা বুঝে নিলে আমাদের মূল মাসআলা বুঝতে সুবিধা হবে।
যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছেঃ
وَأَمَّا الَّذِي يَرْجِعُ إلَى مَحَلِّ الذَّكَاةِ: (فَمِنْهَا) تَعْيِينُ الْمَحَلِّ بِالتَّسْمِيَةِ فِي الذَّكَاةِ الِاخْتِيَارِيَّةِ، وَعَلَى هَذَا يَخْرُجُ مَا إذَا ذَبَحَ وَسَمَّى، ثُمَّ ذَبَحَ أُخْرَى يَظُنُّ أَنَّ التَّسْمِيَةَ الْأُولَى تُجْزِئُ عَنْهُمَا لَمْ تُؤْكَلْ فَلَا بُدَّ أَنْ يُجَدِّدَ لِكُلِّ ذَبِيحَةٍ تَسْمِيَةً عَلَى حِدَةٍ.
তরজমা-সুতরাং ওই শর্তাবলী যা জবাইর স্থলের সাথে সম্পৃক্ত,তার মধ্যে থেকে একটি শর্ত হল,ইচ্ছাকৃতভাবে জবাইকালে বিসমিল্লাহর সঙ্গে সঙ্গে বিসমিল্লাহরর স্থানটিও নির্দিষ্ট করে নেয়া।সুতরাং এই শর্তের কারণে নিম্নোক্ত পদ্ধতিটি বৈধতার সীমারেখা থেকে বাদ পড়ে যাবে যে,এক ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলে একটি পশু জবাই করল,অতঃপর একটি পশু এই ধারনায় (বিসমিল্লাহ না বলে)জবাই করে নিল যে,প্রথমটির বিসমিল্লাহ'ই দ্বিতীয়টির জন্য যতেষ্ট,এই অবস্থাতে তার দ্বিতীয় পশুটি খাওয়া যাবে না।
সতরাং প্রত্যেক প্রানী জবাইকালে পৃথক পৃথকভাবে নতুন 'বিসমিল্লাহ'পড়া জরুরী।-৫/২৮৬
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে আরও বর্ণিত আছে যে.........
وَلَوْ أَضْجَعَ شَاةً وَأَخَذَ السِّكِّينَ وَسَمَّى، ثُمَّ تَرَكَهَا وَذَبَحَ شَاةً أُخْرَى وَتَرَكَ التَّسْمِيَةَ عَامِدًا عَلَيْهَا، لَا تَحِلُّ، كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.
তরজমা- যদি কোনো ব্যক্তি বকরী জবাইয়ের উদ্দেশ্যে বকরী শুইয়ে দেয় এবং হাতে ছুরি নিয়ে বিসমিল্লাহ পড়ে ছেড়ে দেয়।(অর্থ্যাৎ জবাই না করেই ছেড়ে দেয়)অতঃপর অন্য একটি বকরী ধরে জবাই করে নেয়,এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ পড়া ছেড়ে দেয় তাহলে এই বকরীটি হালাল হবে না।-৫/২৮৮
وَإِذَا أَضْجَعَ شَاةً لِيَذْبَحَهَا وَسَمَّى عَلَيْهَا، ثُمَّ كَلَّمَ إنْسَانًا أَوْ شَرِبَ مَاءً أَوْ حَدَّدَ سِكِّينًا أَوْ أَكَلَ لُقْمَةً أَوْ مَا أَشْبَهَ ذَلِكَ مِنْ عَمَلٍ لَمْ يَكْثُرْ حَلَّتْ بِتِلْكَ التَّسْمِيَةِ، وَإِنْ طَالَ الْحَدِيثُ وَكَثُرَ الْعَمَلُ كُرِهَ أَكْلُهَا وَلَيْسَ فِي ذَلِكَ تَقْدِيرٌ بَلْ يُنْظَرُ فِيهِ إلَى الْعَادَةِ-
তরজমা- যদি কেও জবাইয়ের উদ্দেশ্যে শুইয়ে দেয় এবং বিসমিল্লাহও পড়ে নেয়,এরপর কারো সঙ্গে কথা বলল,পানি পান করল,ছুরি শান দিল,কিংবা কিছু খাবার খেয়ে নিল,কিংবা এ জাতীয় সাধারণ অন্য কোনো কাজ করে নিল।(এরপর ওই বকরীকে জবাই করল)তাহলে এহেন অবস্থায় পূর্বেকার পঠিত বিসমিল্লাহ-এর দ্বারাই এই বকরীটি হালাল হিসেবে গন্য হবে।আর যদি বিসমিল্লাহ পড়ার পর দীর্ঘ কথাবার্তা হয়ে যায়,কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ চলে,এরপর বকরী জবাই করা হয় তাহলে ওই বকরীর গোশত খাওয়া মাকরুহ। আর সময় (كثير)'বেশী'এবং(قليل)'কম'হওয়ার সীমা নির্দিষ্ট নেই।বরং এক্ষেত্রে প্রচলনই প্রাধান্য পাবে।