আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
161 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)

আসসালামু আলাইকুম, সম্মানিত মুফতী সাহেব দামাত বারাকাতুহুম, আমার দুইটা প্রশ্ন- 

১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যদি কেউ এই অবস্থায় স্বপ্নে দেখে যে তার সাথে সালাম বিনিময় এবং মুসাফাহা হয়েছে। হুযুরের চেহারা মোবারক যেভাবে কিতাবে বর্ণিত আছে ঠিক সেভাবে হয়তো নয়। পাঞ্জাবী পাজামা পড়া অবস্থা। স্বপ্নে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি সেই ব্যক্তিকে দেখে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বেশি বেশি এবং অসংখ্য তাওবা করতে বলেন, তাহলে এই স্বপ্ন কি ভালো?

২. আপনাদের পেইজে মুযাকারায়ে তালাকের বিবরণে দেখলাম লিখা, “যদি স্বামী তালাক দেয়ার উপর ধমক দিতে থাকে,বা স্ত্রী তালাক চায়,বা সেখানে অন্য কোনো ব্যাক্তি সেই স্বামীকে তালাক দেয়ার উপর উদ্ভুদ্ধ করে,তাহলে সেটিকে তালাকের মজলিস,মুযাকারায়ে তালাক বলা হবে।“- এখানে স্বামী ধমক দিতে থাকার অর্থ কি? স্পষ্টভাবে কি তালাক কথা উচ্চারণ করে ধমকের মত দিতে হবে, নাকি অন্য কিছু? একটু বুঝেয়ে দিলে উপকার হয়। অনেক সময় ঝগড়ার সময় অনেকে এভাবেও বলে যে, আমার মুখ কিন্তু ঠিক থাকবে না অথবা আমি কিন্তু সাবধান করে দিচ্ছি। এই দুই রকম কথা বার্তা কি মুযাকারায়ে তালাক?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আপনার স্বপ্ন খুবই মুবারক স্বপ্ন। রাসূল সাঃ কে দেখেছেন মানে আপনার আমল সুন্দর। আপনি আরো বেশি বেশি সুন্নতের পাবন্দ হতে চেষ্টা করুন। বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে রাসূল সাঃ এর একজন সাচ্চা উম্মত ও প্রিয়ভাজনদের কাতারে শামিল করেই ইনশাআল্লাহ হাশর করাবেন।

বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা না হয়। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন।
,
রাসূল সাঃ এর আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না। তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে প্রবল ধারনা হলে, বুঝতে হবে রাসূল সাঃ কেই দেখছে। অন্য কাউকে নয়।

তবে কথা হল স্বপ্নে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থা সম্পর্কে। স্বপ্নে পরিদৃষ্ট আকৃতিও অবস্থান কি রাসূল সাঃ এর প্রকৃত আকৃতি ও অবস্থান? নাকি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক?

ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, স্বপ্নযোগে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর চেহারার আকৃতি ও অবস্থান রাসূল সাঃ এর প্রকৃত চেহারা ও অবস্থান নয়। বরং এটি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক।

তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান দেখে একথা বলা যাবে না যে, স্বপ্নে যেমন দেখেছে হুবহু সেটাই রাসূল সাঃ এর আসল ও প্রকৃত চেহারা ও আকৃতি। বরং সেটি ছিল একটি প্রতিচ্ছবিমূলক আকৃতি।

তাই একাধিক ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান একাধিক ধরণের হতে পারে।

তবে যেহেতু শয়তান রাসূল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না, তাই স্বপ্নে যদি ইয়াকিন হয় যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ, তাহলে বিশ্বাস করে নিবে ব্যক্তি রাসূল সাঃ কেই দেখছে। তবে আকৃতিটা হুবহু রাসূল সাঃ এর হওয়া জরুরী নয়।

আরেকটি বিষয় হল, স্বপ্নে রাসূল সাঃ কে তেমন দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ব্যক্তির ঈমান ও আমলের অবস্থা হয়ে থাকে। যদি রাসূল সাঃ এর অবস্থা ভাল দেখে স্বপ্নে, তাহলে স্বপ্ন দেখাকারী ব্যক্তির ঈমান ও আমল ভাল হওয়ার দলীল এটা। আর যদি খারাপ অবস্থায় রাসূল সাঃ কে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে দেখছে তার ঈমান বা আমলে সমস্যা আছে।

তেমনি কেউ যদি রাসূল সাঃ কে সুন্দর অবয়বে দ্বীনী কাজ করতে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে লোকটির ঈমানী কাজে আগ্রহ আছে। এক কথায় রাসূল সাঃ কে যে অবস্থায় পরিদৃষ্ট করবে স্বপ্নে, নিজের ঈমান ও আমলের হালাত তেমনি মনে করে নিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أن أبا هريرة قال : سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( من رآني في المنام فسيراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي 

হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নযোগে দেখল, সে যেন আমাকে বাস্তবেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৫৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬০৫৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬০৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫০২৫ , সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২১৩৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২৭৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার উক্ত স্বপ্ন ভালো।
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নির্দেশ মোতাবেক আপনি গুনাহ মুক্ত জীবন যাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন,অধিকহারে তওবা করবেন।

প্রতিদিন ৭০/১০০ বার তওবা করলে বেশ কিছু হাদীসের উপর আমল হবে। তাই অধিকহারে প্রত্যেহ তওবা করার পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
যেগুলো স্পষ্ট তালাকের বাক্য, অথবা যেসব বাক্য বললে নিয়ত ছাড়াই তালাক হয়ে যায়,এসব বাক্য বলে ধমক দেয়া এখানে উদ্দেশ্য। 

যেমন স্বামী বললো,
আমি কিন্তু তোমাকে ছেড়ে দিবো? আমি কিন্তু তোমাকে তালাক দিবো? আমি কিন্তু তোমাকে হারাম করে দিবো? 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
যেগুলো স্পষ্ট তালাকের বাক্য, অথবা যেসব বাক্য বললে নিয়ত ছাড়াই তালাক হয়ে যায়,এসব বাক্য বলে ধমক দেয়া এখানে উদ্দেশ্য। 

যেমন স্বামী বললো,
আমি কিন্তু তোমাকে ছেড়ে দিবো? আমি কিন্তু তোমাকে তালাক দিবো? আমি কিন্তু তোমাকে হারাম করে দিবো? 
.
এগুলা না বলে যদি ইঙ্গিতে বুঝায় আমি কিন্তু দিয়ে দিবো, বা বলে ফেলবো এমনটা বলে মানে স্পষ্ট শব্দ বাক্যের মধ্যে না থাকে তাহলে কি তালাকের মজলিস বা মুযাকারায় তালাক হবে? 

যেমন বললো: আমি কিন্তু দিয়ে দেবো বা আমি কিন্তু বলে ফেলবো। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...