আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি আমার বাবুর জন্যে সেকেন্ড হ্যান্ড ৩টা শীতের পোশাক কিনি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে। তিনি প্রতিটি পোষাক ২৫০ করে মোট ৭৫০ টাকা চাইলে আমি মোট ৩ টা ৬৫০ টাকা দিতে বললে রাজি হন। কিনে বাসায় আনার পর দেখি দাগ আছে। ছবি পাঠিয়ে অভিযোগ করলে বিক্রেতা নিজ থেকে আমাকে ২৫০ টাকা পাঠিয়ে দেন বিকাশে। এখন আমার কাছে ফেরত পাঠানো টাকা আর পোশাক দুটোই আছে। আমার জন্যে এই টাকা রাখা কি জায়েজ? এই পোশাকও কি রাখা জায়েজ উনি যেহেতু নিজ থেকে পোষাক দাবি করেনি?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم: «مَنْ أَقَالَ مُسْلِمًا بَيْعَتَهُ, أَقَالَهُ اللَّهُ عَثْرَتَهُ». رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ, وَابْنُ مَاجَهْ, وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ, وَالْحَاكِمُ - صحيح. رواه أبو داود (3460)، وابن ماجه (2199)، وابن حبان (7/ 243)، والحاكم (2/ 45)

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের (বা অনুতপ্ত ব্যক্তির অনুরোধে) চুক্তি ভঙ্গের সুযোগ দিলো, আল্লাহ তার ত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করবেন। (আবূ দাউদ ৩৪৬০, ইবনু মাজাহ ২১৯৯, আহমাদ ৭৩৮৩।)

ক্ৰয়-বিক্রয়ের মালামাল ফেরত প্ৰদানকারী ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়া মুস্তাহাব।

ব্যবসায়ীদের সমাজে একটি প্রথা প্রচলিত আছে, তা হলো, ‘বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া হয় না।’ অনেক দোকানদার তাদের দোকানে এ নিয়মটি বড় করে লিখে রাখেন। ‘বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া হয় না।’ এভাবে ফেরত না নেওয়ার শর্ত জুড়ে দিয়ে পণ্য বিক্রয় করা কি জায়েজ? জবাব হলো, এমন পূর্বশর্তে পণ্য বিক্রি করা জায়েজ। ক্রেতা এ শর্ত মেনে নিয়ে পণ্য ক্রয় করলে বিক্রেতা দায়মুক্ত হয়ে যাবেন। এবং ক্রেতাকেও অবশ্য পণ্যটি বুঝে নেওয়ার সময় ভালোভাবে যাচাই করে বুঝে নিতে হবে। কারণ পণ্য বুঝে নিয়ে চলে যাওয়ার পর কোনো ত্রুটি প্রকাশ পেলে তিনি বিক্রেতাকে ধরতে পারবেন না এবং বিক্রেতা পণ্য ফেরত বা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন না। (মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ, হাদিস : ৩৩৭; শরহু মুখতাসারিত তাহাবি : ৩/৭২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ৩/৬৯)

ইবনে উমর (রা.) সূত্রে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, যখন দুই ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয় করে, তখন তাদের উভয়ে যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হবে অথবা একে অপরকে ইখতিয়ার প্রদান না করবে, ততক্ষণ তাদের উভয়ের ইখতিয়ার থাকবে। এভাবে তারা উভয়ে যদি ক্রয়-বিক্রয় করে তবে তা সাব্যস্ত হয়ে যাবে। আর যদি তারা উভয়ে ক্রয়-বিক্রয়ের পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তাদের কেউ যদি তা পরিত্যাগ না করে তবে ক্রয়-বিক্রয় সাব্যস্ত হয়ে যাবে। (বুখারি, হাদিস : ২১১২)

কিন্তু কোনো ব্যবসায়ী যদি ক্রেতার যৌক্তিক অপারগতার কারণে ক্রয়-বিক্রয় সাব্যস্ত হয়ে যাওয়ার পরও মানবিক দৃষ্টিতে বিক্রীত পণ্য ফেরত নেয়, তবে সে এর জন্য মহান আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান পাবে। কারণ, ক্রয়-বিক্রয় নম্রতা অবলম্বন করার দ্বারা আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়।

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন যে নম্রতার সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয় করে ও পাওনা ফিরিয়ে চায়।’ (বুখারি, হাদিস : ২০৭৬)

সুবহানাল্লাহ, আর নম্রতার স্তর যদি এ পর্যায়ে পৌঁছে যে ক্রেতার যৌক্তিক অজুহাত আমলে নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাকে সহযোগিতা করার জন্য বিক্রীত পণ্য ফেরত নেয়, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের (অনুরোধে তার) সঙ্গে সম্পাদিত ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তি বাতিল করবে আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৬০)

""বিক্রি করার সময় কাস্টমারকে এ কথা অবশ্যই বলে দেয়া হয় যে নারকেল বা  ডিম নষ্ট হলে কোন প্রকার ক্ষতিপূরন বা পরিবর্তন দেয়া হবে না। কাস্টমার শর্তে রাজি হয়ে পণ্য কিনে নিয়ে যায়""

শরীয়তের বিধান হলো, বিক্রেতা প্রশ্নোক্ত কথাটি বলার পর ক্রেতা যদি তা মেনে নিয়ে পণ্য ক্রয় করে তাহলে পরবর্তীতে কোনো দোষের কারণে ঐ পণ্য ফেরত দেওয়ার অধিকার থাকবে না। (কিতাবুল আসল ২/৪৮৮; মাবসূত, সারাখসী ১৩/৯১; আলবাহরুর রায়েক ৬/৬৬; রদ্দুল মুহতার ৫/৪২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নেলিখিত ছুরতে বিক্রেতা আপনাকে যেই ২৫০ টাকা ফেরত দিয়েছে তা পণ্যের ক্রটির (দাগ) ক্ষতিপূরণ হিসেবে আপনাকে দিয়েছে। সুতরাং আপনার জন্য উক্ত টাকা গ্রহণ করা জায়েয আছে। এবং উক্ত ক্রয়কৃত কাপড়ের মালিক আপনি। আপনি যেভাবে ইচ্ছা তা ব্যবহার করতে পারেন। এতে কোন সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...