بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
সউদী আরবের বড় আলেমগণ ভিসা ব্যবসাকে হারাম বলে ফতোয়া
প্রদান করেছেন। কারণ, এতে মিথ্যার
আশ্রয় নেয়া এবং সরকারী আইন লঙ্ঘন করা হয়। আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রহঃ
ভিসা হল একটি পারমিট। কোন ব্যক্তি মন্ত্রণালয় থেকে একজন শ্রমিক আনার পারমিট উঠালো।
তারপর অন্যের নিকট তা বিক্রয় করে দিল। এটা হারাম-নাজায়েজ। আমরা তাকে বলব, তোমার যদি শ্রমিক প্রয়োজন হয় তাহলে ভিসা তো তোমার
হাতে। আর যদি দরকার না থাকে তাহলে তুমি যেখান থেকে ভিসা উঠিয়েছিলে সেখানে ফেরত দাও। তোমার জন্য তা বিক্রয় করা
হালাল নয়।
আমরা একাজ করলে তো মানুষ ভিসা কেনাবেচা করে পয়সা
কামানো শুরু করবে। অথচ এখানে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। সে শ্রমিক আনবে বলে ভিসা উঠানোর
পর সেটা বিক্রয় করলে সে মিথ্যুকে পরিণত হল।
তাকে ভিসা দেয়া হয়েছে এই শর্তে যে, সে নিজে শ্রমিক আনবে। ভিসা উঠানোর পর যদি দেখে যে, দরকার নাই তাহলে সে তা ফেরত দিবে। কারণ হয়ত অন্য
লোকেরা এই ভিসার জন্য অপেক্ষা করছে। (লিকাউল বাবিল মাফতূহ ১৫/১৭০)
ইমাম মালিক রাহ থেকে বর্ণিত রয়েছে,
ﻭﺳﺌﻞ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﺃﺟﺮ ﺍﻟﺴﻤﺴﺎﺭ
ﻓﻘﺎﻝ : ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﺬﻟﻚ
ইমাম মালিক রাহ কে দালালী ব্যবসা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করা হলে তিনি বলেন এতে কোনো সমস্যা নেই। (আল-মুদাওয়ানাতুল কুবরাঃ৩/৪৬৬)
ইমাম বোখারী রাহ বলেনঃ
" ﺑَﺎﺏ ﺃَﺟْﺮِ ﺍﻟﺴَّﻤْﺴَﺮَﺓِ . ﻭَﻟَﻢْ
ﻳَﺮَ ﺍﺑْﻦُ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ ﻭَﻋَﻄَﺎﺀٌ ﻭَﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢُ ﻭَﺍﻟْﺤَﺴَﻦُ ﺑِﺄَﺟْﺮِ ﺍﻟﺴِّﻤْﺴَﺎﺭِ ﺑَﺄْﺳًﺎ
.ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ : ﻻ ﺑَﺄْﺱَ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮﻝَ : ﺑِﻊْ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺜَّﻮْﺏَ ﻓَﻤَﺎ ﺯَﺍﺩَ
ﻋَﻠَﻰ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻓَﻬُﻮَ ﻟَﻚَ .
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ : ﺇِﺫَﺍ ﻗَﺎﻝَ
ﺑِﻌْﻪُ ﺑِﻜَﺬَﺍ ﻓَﻤَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻦْ ﺭِﺑْﺢٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻟَﻚَ ، ﺃَﻭْ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻚَ ﻓَﻠَﺎ
ﺑَﺄْﺱَ ﺑِﻪِ .ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤُﻮﻥَ
ﻋِﻨْﺪَ ﺷُﺮُﻭﻃِﻬِﻢ)
তরজমাঃইবনে সিরীন, আত্বা,ইবরাহিম,হাসান, রাহ এর মত যুগশ্রেষ্ট ইমামগণ দালালী ব্যবসায় শরয়ী কোনো সমস্যা মনে করেন না।ইবনে
আব্বাস রাহ,বলেনঃকোনো অসুবিধা নেই এরকম কোনো চুক্তিতে যে, কেউ কাউকে বলল,তুমি এই মাল এত টাকায় বিক্রি কর,এর(পুর্ব নির্ধারিত মূল্যর) চেয়ে বেশী যা লাভ হবে তা তোমার।ইবনে সিরীন রাহ বলেনঃযখন
কেউ কাউকে বললঃতুমি এই মাল এত টাকায় বিক্রি কর, যা লাভ হবে অথবা
এর চেয়ে বেশী যা লাভ হবে, তা তোমার অথবা তা আমার এবং তোমার মধ্যে বন্টিত হবে।এরকম
চুক্তিতে কোনো সমস্যা নেই।নবী কারীম সাঃ বলেনঃ-মুসলমানগন তাদের কৃতচুক্তির আওতাধীন।অর্থাৎ শরীয়ত বিরোধী চুক্তি
না হলে তা অবশ্যই পূরণীয় এবং পূরণ করতে হবে,এবং দালালীও একটি
চুক্তি বিধায় তা বৈধ ও পূরণীয় ।(সহীহ বোখারী-৩/৯২, হাদীস নং ২২৭৪ এর শিরোনাম)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/44
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. যদি
বৈধ পদ্ধতিতে উক্ত ভিসা গ্রহণ করা হয় তাহলে তা জায়েয আছে।
২. ভিসা মূলত একটি হককে মুজাররাদ বা নিরেট একটি হক। নিরেট হক শরয়ী দৃষ্টিতে ক্রয়বিক্রয়
জায়েজ নয়। তবে যদি কোন ব্যক্তি ভিসা অর্জনের জন্য অর্থ ও সময়
ব্যয় হয়,
তাহলে ভিসার জন্য খরচকৃত টাকার অতিরিক্ত মেহনতের মজুরী হিসেবে
নির্ধারিত টাকা ফি হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে যদি ভিসাটি পেতে কোন প্রকার মেহনত বা অর্থব্যয় না হয়ে থাকে, বরং কোন কোম্পানী বা সরকারের পক্ষ থেকে ভিসা প্রদান করে থাকে কাউকে কাংখিত দেশে
আনার জন্য, তাহলে উক্ত ভিসা বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা কামানো
জায়েজ নয়।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি কোনো ধোকা মূলক
কাজ না করেন, মিথ্যার আশ্রয় না নেন, সন্তুষ্টি চিত্তেই কাউকে ম্যানেজ করে এই অতিরিক্ত টাকা গ্রহন করে থাকেন, তাহলে এটি গ্রহন আপনার জন্য জায়েজ হবে।