আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
১/ কেউ গিবত করলে আমি তা শুনে ফেললে তাতে কি আমার গুনাহ হবে?

২/ কোনো জামা বা তার অংশবিশেষ যা আমার কাছে আছে পরে যদি তা কোনো বিধর্মীদের গায়ে দেখি তাহলে কি পড়া যাবে?

৩/পুতি-চুমকি যুক্ত পোশাক কি পড়া যাবে?

৪/স্বামির অনুমতি ছাড়া কি যাওয়া যাবে

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

★★১.  গীবত করা কবীরা গোনাহ। এটি হারাম। তাই এটি শোনাও হারাম। কারণ যে কাজ করা হারাম। সে কাজ করতে সহযোগিতা করাও হারাম।


কারণ যে শুনছে, সে যদি না শুনতো, তাহলে গীবতকারী গীবত করতে পারে না। যদি যে শ্রোতা সে যদি বাঁধা দেয়, তাহলে গীবতকারী গীবত করতে পারে না। তাহলে শ্রোতা শোনার দ্বারা গীবতকারীকে গীবতের মত কবীরা গোনাহ করতে সহযোগিতা করছে। আর গোনাহের সহযোগিতা করাও নিষিদ্ধ। তাই উভয় কাজই নিষিদ্ধ ও হারাম।


وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ [٤٩:١٢] 


তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী,পরম দয়ালু। [সূরা হুজুরাত-১২}


وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 


সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা মায়িদা-২] 

সুতরাং অনিচ্ছায় কারো গীবত কানে আসলে গুনাহ হবে না।  তবে এই পরিস্থিতিতে আপনি তাদেরকে টপিক পাল্টিয় অন্য প্রসঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দিবেন। তারা না মানলে আপনি উক্ত মজলিস ত্যাগ করবেন।

★★২.  যে জিনিস বিজাতির প্রতীক, যে জিনিস দেখলে তাদেরকে বিজাতি বলে সহজে চিহ্নিত করা যায়, কেবল সেই জিনিসেই সাদৃশ্য অবলম্বন নিষেধ। তাছাড়া যে জিনিস মুসলিম অমুসলিম এর মাঝে কোন পার্থক্য নির্ধারণ করে না, বরং সকলের মাঝে ব্যাপক, তাতে সাদৃশ্য অবলম্বন প্রশ্নই থাকে না। যদিও সে জিনিস মুলতঃ কাফেরদের নিকট থেকে আগত সভ্যতা কিন্তু ইসলামে তা হারাম নয় এবং জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সর্ব সাধারণের মাঝে প্রচলিত হয়ে গেছে। 

সুতরাং পোশাকটি যদি ইসলামে নিষিদ্ধ পোশাক না হয় তাহলে বিধর্মীদের শরীরে উক্ত পোশাক থাকলেও কোন সমস্যা হবে না। আপনি উক্ত পোশাক পরিধান করতে পারবেন। 

★★৩. 

মেয়েদের পোশাক এমন হওয়া চাই যা পরিধান করার দ্বারা তাদের সতর পরিপূর্ণ ভাবে আবৃত হয়। আর মেয়েদের সতর হলো চেহারা, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা ছাড়া বািকি সবটুকু। সুতরাং তারা এমন পোশাক ব্যবহার করবে যার দ্বারা তাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢেকে যায়। আর বর্তমানে মেয়েদের অধিক সতর ঢেকে রাখা সম্ভব হয় সেলোয়ার কামিজ ও ওড়নার মাধ্যমে। তবে সেলোয়ার কামিজ ঢিলেঢালা ও মোটা কাপড়ের হওয়া বাঞ্চনীয়। যাতে শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ ফুটে না উঠে এবং কামিজ ফুলহাতা বিশিষ্ট ও হাঁটুর নীচ পর্যন্ত লম্বা হওয়ার সাথে সাথে বড় ওড়না ব্যবহার করা। [আবু দাউদ শরীফ: ২/৫৬৭, কিফায়াতুল মুফতি:৫/৪৩১ ]

এমন পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ, যেগুলোকে শরীয়ত অহংকারীদের নিদর্শন সাব্যস্ত করেছে এবং তা পরিধান করতে নিষেধ করেছে। যেমন পুরুষের জন্য রেশমী কাপড় ব্যবহার করা। হযরত আবু মুসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশম এবং স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে। আর মহিলাদের জন্য এগুলো হালাল করা হয়েছে। (জামে তিরমিযী ১/৩০২ হাদীস ২৭৯) 

সুতরাং পুতি বা চুমকী বিশিষ্ট পোশাকে যদি উপরোল্লিখিত শর্তগুলো পাওয়া যায় তাহলে তা পরিধান করা জায়েয।  অন্যথায় জায়েজ নেই।

★তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, এমন কিছু পরিধান করা যেনো না হয়, যেটি পরিধানের কারনে যুবকরা আকৃষ্ট হয় বা যেটি ফেতনার কারন হয়ে দাড়ায়।  আরো জানুন: https://www.ifatwa.info/43840/


★★৪.স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার বাসা থেকে বের হওয়া স্ত্রীর জন্য বৈধ নয়। কিন্তু অনেক সময় সে বাড়িতে না থাকলে পাশের বাসা অথবা কাছের মার্কেটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর উচিৎ,  স্বামীর নিকট থেকে আম (সাধারণ) অনুমতি নিয়ে রাখা। অতঃপর শরয়ী আদবের সাথে নিজের বা ছেলেমেয়ের প্রয়োজনে বাইরে কোথাও গেলে কোন ক্ষতি হবে না ইন শাআল্লাহ। অন্যাথায় জায়েজ হবে না। 



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...