بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1197 নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি
যে, ফেকহী মাকালাত (আল্লামা তাকী উসমানী দাঃবাঃ)-১/২৩৬
এ বর্ণিত রয়েছে।তথা সত্ত্বর ক্রয়-বিক্রয় এবং অন্যান্য সম্পত্তির মত সত্ত্ব সংরক্ষিত
কি না? সে সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা
রয়েছে। আমি নিম্নে সারসংক্ষেপ মূলক কিছু আলোচনা তুলে ধরছি।প্রয়জনে উক্ত কিতাবকে অধ্যয়ন
করা যেতে পারে। আবিস্কার এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয় আবিস্কার সত্ত্ব এমন একটি
সত্ত্বকে বলা হয়, যা প্রচলিত
নিয়মানুসারে কিংবা আইনগত দিক দিয়ে ওই ব্যক্তির অনুকূলে থাকে,যে ব্যক্তি নতুন কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে
বা কোনো জিনিষের নতুন আকৃতি বা রূপ দান করেছে।আর আবিস্কার সত্ত্বের অর্থ হল,এককভাবে ওই ব্যক্তির জন্যই নিজের আবিস্কৃত
জিনিষ বানানোর এবং বাজারজাত করার অধিকার থাকবে।আবার কোনো কোনো সময় আবিস্কারক তার আবিস্কার
সত্ত্ব অন্য কারো কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর সত্ত্ব ক্রয়কারী তখন আবিস্কারকের মত
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওই জিনিষ প্রস্তুত করে থাকে।এমনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কিতাব, বই লিখে কিংবা সংকলন করে, তাহলে ওই কিতাব-বই, প্রকাশ-প্রচার ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বাজারজাত
করার অধিকার লেখক বা সংখকলকের জন্য সংরক্ষিত থাকে।আবার কোনো কোনো সময় কিতাবের লেখক
ওই সত্ত্ব অন্যের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর ওই সময় ক্রেতা এই কিতাবের প্রকাশ-প্রচার
এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করার সত্ত্বাধিকারী হয়ে যায়।যে অধিকার পূর্বে লেখকের ছিল,সেই অধিকার চলে আসে ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে।
এ ক্ষেত্রে আমাদের
প্রশ্ন হল এই যে, আবিস্কার
সত্ত্ব, লেখার সত্ত্ব এবং প্রকাশনা
সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয় শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয হবে কি? এই ব্যাপারে সমকালীন ফুকাহায়ে কিরামের
মধ্যে দুইটি অভিমত পরিলক্ষিত হয়। কোনো কোনো ফুকাহায়ে কিরাম এ জাতীয় সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয়
কে জায়েয বলেছেন। আবার কোনো
কোনো ফুকাহায়ে কিরাম এ জাতীয় সত্ত্বের বেচাকেনাকে নাজায়েয বলেছেন।
এ ব্যাপারে মৌলিক
প্রশ্ন হল এই যে,আবিস্কার
লেখা ও প্রকাশনা সত্ত্বকে কি ইসলামী শরীয়ত সত্ত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে? এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর হল এই যে, যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম কোনো জিনিষ আবিস্কার
করেছে,তার আবিস্কৃত জিনিষ অস্তিত্বমান
বস্তু হোক বা অস্তিত্বহীন, নিঃসন্দেহে
সেইব্যক্তি অন্যের তুলনায় তা থেকে উপকৃত হওয়ার, প্রস্তুত করার এবং মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে
বাজারজাত করার বেশী অধিকারী।কেননা, আবু দাউদ শরীফে
হযরত আসমুর ইবনে মুদরাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত
হয়েছে যে, 'আমি নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে তার হাতে বাইআত গ্রহণ করি।এ সময় নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু
অালাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,' যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হল, যে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয়
নাই,তাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির।
(যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।) (আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)
আল্লামা মুনাবী
রাহ[আব্দুর রউফ আল মুনাবী, মৃত্যু:১০৩১হি,] যদিও এই হাদীসটিকে পতিত ও
অনাবাদী জমিন ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তোলার অর্থে প্রয়োগের বিষয়কে প্রধান্য দিয়েছেন, তথাপি তিনি কোনো কেনো উলামায়ে কেরাম থেকে
এ বর্ণনাও উদ্ধৃত করেছেন যে,এই হাদীসটির মর্মে যাবতীয় ঝরণা, কূপ এবং খণিজসম্পদ অন্তর্ভুক্ত। আর যে
ব্যক্তি এসবের কোনো একটিতে প্রথম অগ্রসর হবে,ওই জিনিসটির সত্ত্বাধিকারী ওই ব্যক্তিই সাব্যস্ত হবে।এ
বিষয়ে কোনো সংশয় নেই যে,যে কোনো
বাক্যে শব্দের ব্যাপকতাই গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে,তা কোনো নির্দিষ্ট কারণের প্রেক্ষিতে বলা হলেও সেই কারণের
মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ হয় না।(ফায়জুল কাদীর:৬/১৩৮)
**পাইরেটেড সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে যদি
সফটওয়্যার কোম্পানির পক্ষ থেকে ছাড় দেওয়া থাকে যে, এই পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারে তাদের
কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তাহলে সেই
সফটওয়্যার ব্যবহার করাতে কোনো অসুবিধা নেই। আর যদি তাদের পক্ষ থেকে এর কোনো অনুমতি
না থাকে, তাহলে এমন
সফটওয়্যার ব্যবহার করা হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি
অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা
পরস্পর রাজি হয়ে ব্যবসা করা বৈধ’ (আন-নিসা, ৪/২৯)। ইবনু উমার রযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেউ যেন কোনো
ব্যক্তির পশুর দুধ তার অনুমতি ব্যতীত দোহন না করে। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে
যে, তার কুটিরে
কিছু সঞ্চিত হোক, তারপর অন্য কেউ
তার ভাণ্ডার ভেঙ্গে খাদ্য সামগ্ৰী বের করে নিয়ে যাক? এমনিভাবে পশুদের স্তন তাদের ধনাগার
স্বরূপ, তাতে তারা
তাদের খাদ্য সামগ্ৰী সঞ্চয় করে। অতঃপর কেউ যেন কারো পশুর দুগ্ধ মালিকের বিনা
অনুমতিতে দোহন না করে’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৪৩৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭২৬)।
উপরের আলোচনা
থেকে বুঝতে পারলাম যে, কোনো প্রকাশনা
নতুন হেক বা পুরাতন হোক, সংরক্ষিত
প্রকাশনায় প্রকাশকের অনুমতি ব্যতীত ঐ প্রকাশনার কোনো কপি করা যাবে না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে, কোন ওয়েবসাইট থেকে তাদের কোন আর্ট বা ছবি যদি
টাকা দিয়ে ক্রয় করে ব্যবহার করার শর্ত থাকে তাহলে উক্ত ছবি বা আর্ট বিনা টাকায় তাদের
অনুমতি ছাড়া স্ক্রীন শর্ট দিয়ে ব্যবহার করা জায়েয হবে না এবং উল্লেখিত পদ্ধতিতে ঐ আর্ট
দিয়ে ব্যবসা করাও জায়েয হবে না। তবে যদি তাদের অনুমতি থাকে তাহলে তা ব্যবহার করা ও
তা দিয়ে ইনকাম করাও জায়েয।