আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
219 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (-1 points)
আসসালামু আলাইকুম,

বদরের আটককৃত কাফেরদের ব্যাপারে হুকুম কী হবে, এ নিয়ে যখন আলোচনা হচ্ছিলো তখন-

ওমর (রাঃ)  ইজতিহাদ করে ফয়সালা দিলেন যে, তাদেরকে হত্যা করতে হবে।

অন্যদিকে,

আবু বকর (রাঃ)  ইজতিহাদ করে ফয়সালা দিলেন যে, তাদের থেকে জরিমানা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দিতে।

রাসূল (সাঃ) আবু বকরের মতের উপর রায় দিয়ে দিলেন যদিও পরবর্তীতে আল্লাহপাক ওমরের মতের স্বপক্ষে আয়াত নাযিল করে রাসূলকে সংশোধন করে দিলেন।

কিন্তু,
প্রশ্ন: রাসূল(সাঃ) থাকতে কী সাহাবীদের ইজতিহাদ গ্রহনযোগ্য হবে?

1 Answer

+1 vote
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই কিছু হাদীস লক্ষ্য করিঃ
,
حدثني عمر بن الخطاب رضى الله تعالى عنهما، قال: لما كان يوم بدر فهزم الله المشركين، فقتل منهم سبعون وأسر منهم سبعون، استشار رسول الله صلى الله عليه وسلم "ما ترى يا ابن الخطاب؟" قال: فقلت: أرى أن تمكنني من فلان قريب لعمر، فأضرب عنقه، وتمكن عليا من عقيل فيضرب عنقه، وتمكن حمزة من فلان فيضرب عنقه، حتى يعلم الله عز وجل أنه ليس في قلوبنا هوادة للمشركين، هؤلاء صناديدهم وأئمتهم وقادتهم، فلم يهوَ رسول الله صلى الله عليه وسلم ما قلت، فأخذ منهم الفداء، قال عمر: فلما كان من الغد غدوت إلى النبي صلى الله عليه وسلم، فإذا هو قاعد وأبو بكر، وإذا هما يبكيان، فقلت: يا رسول الله، أخبرني ماذا يبكيك أنت وصاحبك؟ فإن وجدت بكاء بكيت، وإن لم أجد بكاء تباكيت لبكائكما، قال النبي صلى الله عليه وسلم: "الذي عرض علي أصحابك من الفداء، لقد عرض علي عذابكم أدنى من هذه الشجرة، لشجرة قريبة"، فأنزل الله تعالى: "مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَن يَكُونَ لَهُ أَسْرَىٰ حَتَّىٰ يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ ۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ الدُّنْيَا وَاللَّهُ يُرِيدُ الْآخِرَةَ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ (67) لَّوْلَا كِتَابٌ مِّنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (68) فَكُلُوا مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ (69)" (سورة الأنفال) ثم أحل الله لنا الغنائم. (القصة أخرجها أبو داوود وابن حبان وأبي عوانة والبيهقي وأبو نعيم وغيرهم عن ابن عباس).
,
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ وَجِيءَ بِالأُسَارَى قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَقُولُونَ فِي هَؤُلاَءِ الأُسَارَى " . فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْفَلِتَنَّ مِنْهُمْ أَحَدٌ إِلاَّ بِفِدَاءٍ أَوْ ضَرْبِ عُنُقٍ " . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِلاَّ سُهَيْلَ بْنَ بَيْضَاءَ فَإِنِّي قَدْ سَمِعْتُهُ يَذْكُرُ الإِسْلاَمَ . قَالَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَمَا رَأَيْتُنِي فِي يَوْمٍ أَخْوَفَ أَنْ تَقَعَ عَلَىَّ حِجَارَةٌ مِنَ السَّمَاءِ مِنِّي فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ قَالَ حَتَّى قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِلاَّ سُهَيْلَ ابْنَ بَيْضَاءَ " . قَالَ وَنَزَلَ الْقُرْآنُ بِقَوْلِ عُمَرَ : ( وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الأَرْضِ ) إِلَى آخِرِ الآيَاتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَأَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِيهِ .

হান্নাদ (রহঃ) ..... আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, বদরের সময় যখন বন্দীদের নিয়ে আসা হয় তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এই বন্দীদের সম্বন্ধে তোমাদের মতামত কি? এরপর রাবী এ হাদীস একটি ঘটনা বর্ণনা করেনঃ

وَمَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الأَرْضِ

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মুক্তিপণ প্রদান বা শিরোচ্ছেদ ব্যতিরেকে এরা কেউ ছুটতে পারবে না। আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তবে সুহায়ল ইবন বায়যা ছাড়া। কেননা, আমি তাঁকে ইসলামের আলোচনা করতে শুনেছি।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই কথা শুনে নীরব রইলেন। আমার মাথার উপর আসমান থেকে পাথর ভেঙ্গে পড়বে এই আশংকার চেয়েও আজকের দিন আমি বেশী শঙ্কিত ছিলাম। অবশেষে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সুহায়ল ইবন বায়যা ছাড়া। ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহ বলেনঃ এই সময় উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর বক্তব্যের সমর্থনে কুরআনের এই আয়াত নাযিল হয়ঃ

لَوْلاَ كِتَابٌ مِنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ

কোন নাবীর জন্য সঙ্গত নয় শক্রকে ব্যাপকভাবে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী রাখা ...... আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩০৮৪ [আল মাদানী প্রকাশনী]
,
وروى الإمام أحمد في مسنده بإسناده إلى عمر بن الخطاب رضي الله عنه في حديث طويل منه قول عمر: "... فلما كانوا يومئذ التقوا فهزم الله المشركين، فقُتل منهم سبعون رجلاً، وأُسر منهم سبعون رجلاً، فاستشار رسول الله صلى الله عليه وسلم أبابكر وعمر وعلياً، فقال أبوبكر: يا رسول الله، هؤلاء بنو العم والعشيرة والإخوان، وإني أرى أن تأخذ منهم الفدية، فيكون ما أخذناه منهم قوة لنا على الكفار، وعسى أن يهديهم الله فيكونوا لنا عضداً، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ما ترى يا ابن الخطاب؟ قال: قلت: والله ما أرى ما رأى أبوبكر، ولكني أرى أن تملكني من فلان -قريب لعمر- فأضرب عنقه، وتمكن علياً من عقيل فيضرب عنقه، وتمكن حمزة من فلان أخيه فيضرب عنقه، حتى يعلم الله أن ليس في قلوبنا هوادة للمشركين، هؤلاء صناديدهم وقادتهم وأئمتهم. قال: فهوى رسول الله صلى الله عليه وسلم ما قال أبوبكر، ولم يهو ما قلت: وأخذ منهم الفداء" وذكر نزول الآيات السابقة يعاتب الله فيها نبيه صلى الله عليه وسلم هو والمؤمنين بما أصابهم في غزوة أحد
,
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ وَجِيءَ بِالأُسَارَى قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَقُولُونَ فِي هَؤُلاَءِ الأُسَارَى " . فَذَكَرَ قِصَّةً فِي هَذَا الْحَدِيثِ طَوِيلَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَأَبِي أَيُّوبَ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ وَأَبُو عُبَيْدَةَ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ أَبِيهِ . وَيُرْوَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَكْثَرَ مَشُورَةً لأَصْحَابِهِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .

হান্নাদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের সময় যখন বন্দীদের আনা হল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই বন্দীদের সম্পর্কে তোমরা কি বল? পরে দীর্ঘ রিওয়ায়াত বর্ণনা করেন। যঈফ, ইরওয়া ৫/৪৭-৪৮, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৭১৪ [আল মাদানী প্রকাশনী]

এই বিষয়ে উমার, আবূ আইয়ুব, আনাস, আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটি হাসান। আবূ উবায়দা তার পিতা আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদীস শুনেন নি। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা নিজ সঙ্গীদের সাথে অধিক পরামর্শ গ্রহণকারী কাউকে দেখিনি।
(তিরমিজি ১৭২০)
,
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ وَجِيءَ بِالأُسَارَى قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَقُولُونَ فِي هَؤُلاَءِ الأُسَارَى " . فَذَكَرَ قِصَّةً فِي هَذَا الْحَدِيثِ طَوِيلَةً .
আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, বদর যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে আসা হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এসব বন্দীর ব্যাপারে তোমাদের কি মত? এরপর রাবী দীর্ঘ ঘটনা বর্ণনা করেন।
(তিরমিজি ১৭১৪)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
রাসুল সাঃ যেকোনো কাজে ছাহাবায়ে কেরামদের সাথে মাশওয়ারা করতেন,তারপর সকলের মত নিয়ে কোনো এক সিদ্ধান্ত নিতেন।  
উল্লেখিত ঘটনাতেও রাসুল সাঃ ছাহাবায়ে কেরামদের থেকে মাশওয়ারা নিয়েছেন,যেটা উপরে উল্লেখিত হাদীস থেকে বুঝা যায়।
,
সুতরাং ওমর রাঃ এই কথা পরামর্শ হিসেবে ছিলো,যাহা খোদ রাসুল সাঃ এর আদেশেই তিনি ব্যাক্ত করেছিলেন।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...