بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
https://ifatwa.info/4851/
নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, শরীয়তের বিধান হলো কোন মুসলমানকে গালি দেওয়া জায়েজ নয়। এটি ফাসেকী। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে
বেঈমান বলে গালি দেওয়া জায়েয হবেনা। তবে এরকম গালি দেওয়া কুফরী নয়,তাই ঈমান চলে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে সতর্ক করেছেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا
لَا یَسْخَرْ قَوْمٌ مِّنْ قَوْمٍ عَسٰۤی اَنْ یَّكُوْنُوْا خَیْرًا مِّنْهُمْ وَ
لَا نِسَآءٌ مِّنْ نِّسَآءٍ عَسٰۤی اَنْ یَّكُنَّ خَیْرًا مِّنْهُنَّ وَ لَا
تَلْمِزُوْا اَنْفُسَكُمْ وَ لَا تَنَابَزُوْا بِالْاَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ
الْفُسُوْقُ بَعْدَ الْاِیْمَانِ وَ مَنْ لَّمْ یَتُبْ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ
الظّٰلِمُوْنَ.
হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে
উপহাস না করে; কেননা
যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর নারীকেও
যেন উপহাস না করে; কেননা
যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি
দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি মন্দ। যারা এসব থেকে বিরত না হবে
তারাই যালেম। -সূরা হুজুরাত (৪৯) : ১১
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ،
وَقِتَالُهُ كُفْرٌ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ থেকে বর্ণিত।
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুসলমানকে
গালি দেয়া ফাসেকী। আর তাকে হত্যা করা কুফরী। {বুখারী, হাদীস নং-৬০৪৪]
মুমিন অশ্লীল কথাও বলে না,
গালিও দেয় না। এ স্বভাব মুমিনের সাথে
যায় না। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ،
وَلَا اللَّعَّانِ، وَلَا بِالْفَاحِشِ، وَلَا بِالْبَذِيءِ.
মুমিন (অন্যের) দোষ চর্চাকারী হয় না,
লানতকারী,
অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না (বাজে কথা
বলে না)। -জামে তিরমিযী, হাদীস
১৯৭৭
আর কোনো মুসলিমকে গালি দেওয়া তো অনেক
বড় অন্যায়।
একসাথে চলতে গিয়ে মতের অমিল হতেই পারে।
বাক-বিত-া হতেই পারে। কিন্তু এ সকল সময়ে গালিগালাজ করা- এটা মুমিনের জন্য শোভনীয়
নয়। অন্যজন গালি দিলেও মুমিন গালি দিবে না। নবীজী
বলেছেন, এটা
মুনাফিকের স্বভাব।
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ
مُنَافِقًا خَالِصًا، وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ
خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا: إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ، وَإِذَا
حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ.
চারটি (মন্দ) স্বভাব আছে,
এগুলো যার মাঝে থাকবে সে খালেছ মুনাফিক
বলে গণ্য হবে। আর যার মাঝে এই চার স্বভাবের কোনো একটি থাকল,
তার মাঝে মুনাফেকির একটি স্বভাব থাকল;
যতক্ষণ না সে তা বর্জন করে।
১. আমানত রাখলে খেয়ানত করে।
২. কথা বলে তো মিথ্যা বলে।
৩. প্রতুশ্রুতি দিলে ভঙ্গ করে।
৪. তর্কের সময় গালাগালি করে।
-সহীহ বুখারী,
হাদীস ৩৪
শরীয়তের বিধান হলো কোন মুসলমানকে কাফের
বলা জায়েজ নয়
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا
إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ
أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ
الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ
قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا
تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:٩٤
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর
কর,তখন যাচাই করে
নিও এবং যে,তোমাদেরকে
সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি
মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি
ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর
আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের
খবর রাখেন। {সূরা
নিসা-৯৪}
হাদীসে রাসূল সাঃ যে ব্যক্তি কাফের না
তাকে কাফের বললে, সেই
কুফরী নিজের দিকে প্রত্যাবর্তন করে মর্মে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন-
عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع
النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا
ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك )
হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ
বলেছেন যে, তোমাদের
কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা
কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮}
কত মারাত্মক হুশিয়ারী,
তাই কাউকে কাফের,
মুশরিক, নাস্তিক বলার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি
ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত
ছুরতে আপনার জন্য তওবা করা আবশ্যক। খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা
অতীতের গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে
তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।
তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে, েবা তার
কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)
এক. পূর্বের
গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা
মাফ চেয়ে নেওয়া।
দুই. ভবিষ্যতে
গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।
তিন. আল্লাহ্
তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/7936/