আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
254 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)
edited by
ক্লাস ৭/৮ এ থাকতে আমি এক হারাম সম্পর্কে ছিলাম।তখন আমি নামাজ, রোজা কিছুই করতাম না।মনে কিছুটা অবিশ্বাস,সন্দেহ ছিল বলা যায়। ফরয বিধান গুলোই অস্বীকার করতাম এমনকি এগুলো নিয়ে হাসি তামাশা ও করেছি। আল্লাহ মাফ করুক। ওই সময় পর্যন্ত আমি নামাজ পড়তেই পারতাম না,পড়া তো দূরে থাক।আল্লাহ মাফ করুক।এমনকি আল্লাহর কসম করে জেনে শুনেই মিথ্যা বলেছি নির্দ্বিধায়।

তো এরকম অবস্থায় একদিন ক্লাস এ আমার সমবয়সী অন্য কিছু ছেলেদের সামনে আমরা কবুল বলি তিনবার। কিন্তু এক্সাকটলি কি কি কথা হয়েছিল আমি ঠিকভাবে মনে করতে পারিনা। অনেক ছোট ছিলাম ১৩/১৪ বছর হবে। এখন আমি ১৮+। মনেও নাই ঠিকভাবে কি কি হয়েছিল। এভাবে কি আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে আসলেই?
যদি হয়ে থাকে তাহলে এর পরে যেয়ে আমি পুরপুরি নাস্তিক হয়ে যায়। এতে কি তাহলে বিয়ে আবার ভেঙ্গে গেছে? উল্লেখ্য যে তারপর আমার হিদায়াত হয় এবং আমি সেই সম্পর্ক থেকে পুরপুরি সরে আসি। কিন্তু এখন সেই ছেলের সাথে যদি আমি পুনরায় বিয়ে করতে চায় তাহলে কি পারবোনা?
এতদিন আসলে এটা নিয়ে আমার মাথায় কোনো প্রশ্নই আসেনি কখনো। কারণ এভাবে ফ্রেন্ড দের সামনে কবুল বলে যারা আমার মতন ১৩/১৪ বছরের.. বিয়ে হওয়ার কোনো চান্স আসে এটা কখনো মাথায় ও আসেনি। আর তখন আমি ইসলাম নিয়ে কিছু জানতাম ও না মানতাম ও না। রিসেন্টলি একটা শায়খ এর ভিডিও তে দেখলাম যে নাটকে যে ছেলে মেয়েরা বিয়ে করে ঐটা নাকি বিয়ে হয়ে যায়। তখন থেকে আমি দুশ্চিন্তায় ভুগছি। কোনোভাবেই মনস্থির করতে পারছিনা।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://www.ifatwa.info/35134/ নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

وَ الۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ اِذَاۤ اٰتَیۡتُمُوۡہُنَّ اُجُوۡرَہُنَّ مُحۡصِنِیۡنَ غَیۡرَ مُسٰفِحِیۡنَ وَ لَا مُتَّخِذِیۡۤ اَخۡدَانٍ ؕ وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالۡاِیۡمَانِ فَقَدۡ حَبِطَ عَمَلُہٗ ۫ وَ ہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ

আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল যদি তোমরা তাদের মাহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। আর কেউ ঈমানের সাথে কুফরী করলে তার কর্ম অবশ্যই নিষ্ফল হবে এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুরা মায়েদা ০৫)

 বিবাহ কেবল সামাজিক বন্ধন নয়। মুসলমানদের জন্য এটি একটি ইবাদতও। নবীজী সা. এক হাদিসে বলেছেন। “বিবাহ করা আমার সুন্নাত আর যে আমার সুন্নাত থেকে (অবজ্ঞার সাথে) দূরে থাকবে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয় (বুখারী শরীফ-হাদিস নং-৪৭৭৬)

আর ইবাদত সহীহ হবার জন্য মুসলমান হওয়া আবশ্যক। সুতরাং মুসলমানদের জন্য কোন নাস্তিক-মুরতা, কাফের-মুশরিকের সাথে বিবাহ করা জায়েজ নয়। যদি বিবাহ করেও তাহলে এই বিবাহ সহীহ হবেনা। বিবাহের পর স্বামী বা স্ত্রী যদি নাস্তিক-মুরতাদ বা কাফের হয়ে যায় (আল্লাহ তায়ালা আমাদের হিফাযত করুন) তাহলে তাদের মাঝের বিবাহ বন্ধন বাতিল হয়ে যায়।

নাস্তিক-মুরতাদের সাথে বিবাহ করা জায়েজ নয়। কোন ব্যক্তি মুসলমান অবস্থায় বিবাহ করার পর নাস্তিক মুরতাদ হয়ে গেলে তার বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। নাস্তিক-মুরতাদের জন্য মুসলিম , কাফের , নাস্তিক-মুরতাদ কোন মহিলাকেই বিবাহ করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে শামী-৪/৩৭৬, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/২৮২, আল বাহরুর রায়েক-৩/২০৯)

قَوْله تَعَالَى { وَمَنْ يَكْفُرْ بِالْإِيمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الْآَخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ سورة المائدة-5)

আল্লাহ তায়ালা বলেন-ঈমান আনার পর যে ব্যক্তি কুফরী করে তার সকল আমল বাতিল হয়ে যায়। আর সে আখেরাতে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা মায়িদা-৫)

ولا يجوز للمرتد أن يتزوج مرتدة ولا مسلمة ولا كافرة أصلية وكذلك لا يجوز نكاح المرتدة مع أحد كذا في المبسوط(الفتاوى الهندية-1/282)

মৌলিকভাবে মুরতাদের জন্য মুরতাদকে, কোন মুসলিমকে, এবং কোন কাফেরকেও বিবাহ করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে আলমগীরী ০১/২৭২)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

যদি আপনার স্বামী নামাজ, রোজা, যাকাত ইত্যাদী আদায় না করে তাহলে ফাসেক হিসেবে বিবেচিত হবে, তবে কাফের হবে না। কিন্তু তিনি যদি শরিয়তের স্পষ্ট কোন বিধানকে অস্বীকার করেন তাহলে তিনি ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবেন। এমন পরিস্থিতিতে আপনার জন্য করণীয় হলো, আপনি আপনার স্বামীর হেদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট খুব দোয়া কান্না কাটি করবেন ও মুহাব্বতের সাথে তাকে বুঝাতে থাকবেন।

 সাথে সাথে কোন নির্ভরযোগ্য মান্যবর আলেমের সাথে তাকে কথা বলানোর চেষ্টা করবেন, যিনি তার বিভিন্ন সংশয় নিরসনের জন্য তাকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন। আল্লাহ তায়ালার একটি নাম মুকাল্লিবুল কুলুব (অন্তর পরিবর্তনকারী)। আল্লাহ তায়ালা চাইলে মহূর্তের মধ্যেই তার অন্তর পরিবর্তন করে তাকে হেদায়েত দিতে পারেন। পরিশেষে যদি কোন ভাবেই তিনি পূর্বের অবস্থান থেকে ফিরে না আসেন তাহলে পারিবারিক ভাবে উক্ত বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে যেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত মনে করেন তা করতে পারেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

যখন আপনারা বন্ধুদের সামনে ইজাব কবুল করেছেন যদি ঐ সময় আপনারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের বিয়ে হয়ে যাবে। তবে আপনার কথা অনুযায়ী যদি আসলেই আপনি নাস্তিক হয়ে যান তাহলে আপনাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। যদি আপনি ঐ ছেলেকেই বিয়ে করতে চান তাহলে নতুন ভাবে বিবাহ করতে হবে। আর যদি অন্য কোন দ্বীনদার ছেলেকে বিয়ে করতে চান তাহলে তাতেও কোন সমস্যা নেই। সর্বপরি তওবার কোন বিকল্প নেই। পূর্বের সকল গুনাহ থেকে খালেস দিলে তওবা করতে হবে। আরো জানুন: https://ifatwa.info/69174/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (16 points)
reshown by
কিন্তু তখন আমি ইসলাম এর কিছুই পালন করতাম না, অস্বীকার করতাম। সেক্ষেত্রে বিয়ে কি আদৌ হয়েছে? যদি হয়েও থাকে তাহলে পরে আমার নাস্তিক হয়ে যাওয়ার কারণে বিয়ে ভেঙে যায় তাহলে এখন আমি যদি আবার একই ছেলেকে বিয়ে করতে চাই তাহলে করতে পারবো? সমস্যা নেই কোনো?
by (16 points)
আমার কমেন্ট টার উত্তর দিবেন প্লিজ। এটা আমার জন্য খুবই গুরু্বপূর্ণ একটি বিষয়
by (58,830 points)
+1
জ্বী আপনি চাইলে একই ছেলেকে বিয়ে করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে নতুন করে মোহরানা নির্ধারণ করে বিবাহের আকদ করতে হবে।
by (16 points)
reshown by
আলহামদুলিল্লাহ।জাযাকাল্লাহু খাইর। আমার একটা প্রশ্ন ছিলো। সাধারণত তো জানতাম ডিভোর্স হলে আবার অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে ডিভোর্স হলে তারপর সেই একই ব্যক্তির সাথে বিয়ে করা যায়। তাহলে এক্ষেত্রে তেমন কিছুর দরকার হচ্ছেনা কেনো?
by
হযরত! কুফু মিল না হলেও কি তাদের বিয়ে হয়ে যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...