তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হিটার ব্যবহার করা কর্তৃপক্ষকে ধোকা দেয়া হবে,বিধায় তাহা জায়েজ হবেনা।
এক্ষেত্রে সে মান্নতের রোযারই শুধু নিয়ত রাখবে। তবে আল্লাহ তায়ালা চাইলে আইয়্যামে বীজ এর রোযা রাখারও ছওয়াব তাকে দিতে পারেন।
মেডিটেশন (meditation), যোগ ব্যায়াম (yoga) মূলতঃ একটি শয়তানী ফাঁদ; যা নিঃসন্দেহে হারাম।
মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতে লিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নাম হল কোয়ান্টাম মেথড। হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে “মেডিটেশন”।
এটি মূলতঃ হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম।
অথচ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى
যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)
মেডিটেশনের লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া। তাদের ভাষায়, ‘মেডিটেশনের মাধ্যমেই আপনি সংযোগ সাধন করতে পারেন আপনার ‘অন্তরের আমি’র সাথে, আপনার শক্তির মূল উৎসের সাথে।’
মেডিটেশনের এই দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। মূলতঃ ‘অন্তরের আমি’ হল নফসে আম্মারা; যার অনুসরণের পরিণতি হল জাহান্নাম। এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন,
أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَٰهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا-أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا
আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত। (সূরা ফুরক্বান ৪৩-৪৪)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
মুরাকাবার কথা যেটা শরীয়তে আছে,সেটা হলো কোনো হক্কানী শায়েখের অধিনে থেকে ছবক হিসেবে শরয়ী সীমারেখার আওতায় ধ্যান করা।
কোয়ান্টাম মেথডে ধ্যান করা এমনটি নয়।
,
এখানে আকীদা বিরোধী অনেক কিছু আছে,অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্যতা পূর্ণ কিছু বিষয় আছে,মোট কথা শরীয়ত বিরোধী বেশ কিছু থাকায় কোয়ান্টাম মেথডে ধ্যান করা জায়েজ নেই।
(০৫)
এক্ষেত্রে ঘুম থেকে উঠে সুরা আলে ইমরানের শেষ ১০ আয়াত পাঠ করার বিষয় হাদীস শরীফে আছে।
আকাশের দিকে তাকিয়ে আয়াত গুলি পাঠ করার কথাও এসেছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ: بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي مَيْمُونَةَ لَيْلَةً وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَهَا فَتَحَدَّثَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ فَلَمَّا كَانَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ أَوْ بَعْضُهُ قَعَدَ فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ فَقَرَأَ: (إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْل وَالنَّهَار لآيَات لأولي الْأَلْبَاب حَتَّى خَتَمَ السُّورَةَ ثُمَّ قَامَ إِلَى الْقِرْبَةِ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا ثُمَّ صَبَّ فِي الْجَفْنَةِ ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا حَسَنًا بَيْنَ الْوُضُوءَيْنِ لَمْ يُكْثِرْ وَقَدْ أَبْلَغَ فَقَامَ فَصَلَّى فَقُمْتُ وَتَوَضَّأْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ فَتَتَامَّتْ صَلَاتُهُ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ فَآذَنَهُ بِلَالٌ بِالصَّلَاةِ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ وَكَانَ فِي دُعَائِهِ: «اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا وَفِي بَصَرِي نُورًا وَفِي سَمْعِي نُورًا وَعَنْ يَمِينِي نُورًا وَعَنْ يَسَارِي نُورًا وَفَوْقِي نُورًا وتحتي نورا وأمامي نورا وَخَلْفِي نُورًا وَاجْعَلْ لِي نُورًا» وَزَادَ بَعْضُهُمْ: «وَفِي لِسَانِي نُورًا» وَذُكِرَ: وَعَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشِعَرِي وبشري) وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: «وَاجْعَلْ فِي نَفْسِي نُورًا وَأَعْظِمْ لِي نُورًا» وَفِي أُخْرَى لِمُسْلِمٍ: «اللَّهُمَّ أَعْطِنِي نورا»
ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, একবার আমি আমার খালা উম্মুল মু’মিনীন মায়মূনাহ্ (রাঃ)-এর বাড়ীতে রাত কাটালাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে রাত্রে তাঁর বাড়ীতে ছিলেন। ’ইশার পর কিছু সময় তিনি তাঁর স্ত্রী মায়মূনার সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। তারপর শুয়ে পড়েন। রাত্রের শেষ তৃতীয়াংশে অথবা রাতের কিছু সময় অবশিষ্ট থাকতে তিনি সজাগ হলেন। আকাশের দিকে লক্ষ করে এ আয়াত পাঠ করলেনঃإِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّموتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَأَۤيَاتٍ لِّأُوْلِي الْأَلْبَابِ অর্থাৎ ’’আকাশ ও জমিন সৃষ্টি করা, রাত ও দিনের ভিন্নতার (কখনো অন্ধকার কখনো আলোকিত, কখনো গরম কখনো শীত, কখনো বড়ো কখনো ছোট) মাঝে রয়েছে জ্ঞানীদের জন্যে আল্লাহর নিদর্শন’’- (সূরাহ্ আ-লি ’ইমরান ৩: ১৯০)। তিনি সূরাটি শেষ পর্যন্ত পাঠ করেন। তারপর উঠে তিনি পাত্রের কাছে গেলেন। এর বাঁধন খুললেন। পাত্রে পানি ঢাললেন। তারপর দু’ উযূর মাঝে মধ্যম ধরনের ভাল উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন।
হাদীস বর্ণনাকারী বলেন, (মধ্যম ধরনের উযূর অর্থ) খুব অল্প পানি খরচ করলেন। তবে শরীরে দরকারী পানি পৌঁছিয়েছেন। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন। (এসব দেখে) আমি নিজেও উঠলাম। অতঃপর উযূ করে তাঁর বাম পাশে দাঁড়িয়ে গেলাম। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কান ধরে তাঁর বাম পাশ থেকে ঘুরিয়ে এনে আমাকে তাঁর ডান পাশে দাঁড় করালেন। তার তের রাক্’আত সালাত আদায় করা শেষ হলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। শুয়ে পড়লে তিনি নাক ডাকতেন। তাই তাঁর নাক ডাকা শুরু হলো। ইতোমধ্যে বেলাল এসে সালাত প্রস্তুতির ঘোষণা দিলেন। তিনি সালাত আদায় করালেন। কোন উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন না। তার দু’আর মাঝে ছিল,
’’আল্ল-হুম্মাজ্’আল ফী ক্বলবী নূরাওঁ ওয়াফী বাসারী নূরাওঁ ওয়াফী সাম্’ঈ নূরাওঁ ওয়া’আই ইয়ামীনী নূরাওঁ ওয়া’আই ইয়াসা-রী নূরাওঁ ওয়া ফাওক্বী নূরাওঁ ওয়া তাহতী নূরাওঁ ওয়া আমা-মী নূরাওঁ ওয়া খলফী নূরাওঁ ওয়াজ্’আল্ লী নূরা-’’
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমার হৃদয়ে, আমার চোখে, আমার কানে, আমার ডানে, আমার বামে, আমার উপরে, আমার নিচে, আমার সম্মুখে, আমার পেছনে নূর দিয়ে ভরে দাও। আমার জন্যে কেবল নূরই নূর সৃষ্টি করে দাও।)।
কোন কোন বর্ণনাকারী এ শব্দগুলোও নকল করেছেন, ’’ওয়াফী লিসা-নী নূরা-’’ (অর্থাৎ- আমার জিহবায় নূর পয়দা করে দাও)। (অন্য বর্ণনায় এ শব্দগুলোও) উল্লেখ করেছেন, ’’ওয়া ’আসাবী ওয়া লাহমী ওয়াদামী ওয়া শা’রী ওয়া বাশারী’’ (অর্থাৎ- আমার শিরা উপশিরায়, আমার গোশতে, আমার রক্তে, আমার পশমে, আমার চামড়ায় নূর তৈরি করে দাও)। (বুখারী, মুসলিম)
বুখারী ও মুসলিমেরই আর এক বিবরণে এ শব্দগুলোও আছে, ’’ওয়াজ্’আল ফী নাফসী নূরাওঁ ওয়া আ’যিম লী নূরা-’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমার মনের মধ্যে নূর সৃষ্টি করে দাও এবং আমার মাঝে নূর বাড়িয়ে দাও)। মুসলিমের এক বিবরণে আছে, ’’আল্ল-হুম্মা আ’ত্বিনী নূরা-’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে নূর দান করো)।
(বুখারী ৬৩১৬, মুসলিম ৭৬৩.মিশকাত ১১৯৫)