আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
153 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (58 points)
যদি স্ত্রীকে এমন কথাবার্তা দ্বারা বা এমন কোন পরিস্থিতি দ্বারা স্বামী গৃহে না আসার জন্য প্রভাবিত করা হয় (সরাসরি বাধা না দিয়ে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল), সেক্ষেত্রে কি
১।স্বামীর হক বিনস্ট হবে?
২। আল্লাহর ফয়সালা কিরূপ হতে পারে?
৩।এক্ষেত্রে কি স্বামীর বদদুয়া কাজে লাগবে?

৪। স্বামী কি কাফির হয়ে গেছে? (একটি ঘটনার কারণে স্বামী তার স্ত্রীর পরিবারকে কাফির ও মুনাফিক বলেছে। কারণ, সদাচরণ ও আল্লাহর বিধান জানানোর পরেও তারা স্বামীর সাথে দুর্ব্যবহার করেছে আর আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে নিজেদের চাওয়া প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে কথায় এবং কাজে। এ ঘটনার বিস্তারিত নিচে উল্লেখ করা হয়েছে)।


সতর্কতার জন্য:

১। সমস্ত দোষ স্বামীকে দেয়া হোক। তবে স্বামীর ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দাম্পত্য দায়িত্ব পালন না করার এবং অবাধ্যতার অভিযোগ রয়েছে।

২। স্বামী সদ্ভাবে সংসার করতে আগ্রহী।
৩। স্বামী চেস্টা করেও স্ত্রীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেনা। (ফোন ধরেনা)। স্ত্রী বাপের বাড়িতে আছে। স্ত্রী ও যোগাযোগ করতে চায়না (হয়ত অভিমানের কারণে, বা প্রভাবিত হয়ে)

৪। স্বামীর পরিবার থেকে যোগাযোগের সুযোগ আছে। কিন্ত পরিবার নির্দোষ। স্বামী চাচ্ছেনা তার পরিবার কে ছোট করতে। উপরন্তু, আলোচনায় বসতে গেলে নিরাপত্তা ও মানহানির আশংকা রয়েছে।
৫। স্ত্রীর পরিবারকে আল্লাহর বিধান জানানো হয়েছে। যেমন: স্বামীর অনুমতি ব্যতীত স্ত্রী গৃহের বাইরে অবস্থান করতে পারবেনা এবং মুমিনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আল্লাহর বিধান শুনল এবং মেনে নিল কিন্তু নিজের মত প্রদান থেকে বিরত থাকল।

৬। এরপরেও কোন লাভ হয়নি। উলটো তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।

৭। সদাচরণ ও আল্লাহর বিধান জানানোর পরেও যখন তারা আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করে ফেলল, তখন স্বামী তাদের কাফির ও মুনাফিক বলে ফেলেছে। যদিও সে বোঝাতে চেয়েছে যে এমন বৈশিষ্ট্য মুমিনের নয় বরং কাফিরদের। মূলত আল্লাহর বিধান জানানোর পরেও তারা নিজের মত প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে কথায় এবং কাজে। যেমন: একবার স্বামী তার স্ত্রী কে বাবার বাড়ি যাবার অনুমতি দেয়নি। তখন আল্লাহর বিধান জানিয়েছিল। কিন্তু স্ত্রীর পিতা এরপরেও স্ত্রীকে নিয়ে যেতে উদ্যত হয়। আরেকবার, স্বামী তার স্ত্রীকে আনার জন্য ফোন দিয়েছিল। স্বামীর চাকরি না থাকায় স্বামী আর তার মা কে আঘাত করে কথা বলা হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে। তখন স্বামী আল্লাহর বিধান জানায় যে স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাইরে যেতে পারবেনা। এরপর শ্বশুর বলে, আমি সব ই জানি কিন্তু তোমার তো চাকরি নাই। এছাড়াও উনু বলেছেন, বউ এর জন্য পাগল কিন্তু চাকরির জন্য পাগল না? অথচ সে সমিয় স্বামীর চাকরি প্রসেসিং এ ছিল। মূলত শ্বশুরবাড়ি আল্লাহর বিধান মানতে চায়না বলে মনে হয় স্বামীর কাছে। সেজন্যই কাফির ও মুনাফিক বকেছে। কারণ, তারা বাইরে নিজেদের দ্বীনঅদার বলে প্রকাশ করে কিন্তু ইসলামের বিধান কেবল নিজেদের সুবিধামত মানে।


৮। উল্লেখ্য, বিয়ের পূর্বে স্বামী যখন বায়োডাটা দিয়েছিল তখন স্বামী নিজের বৈশিষ্ট্য হিসেবে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য গুলো উল্লেখ করেছিল। আর এটাও উল্লেখ করেছিল স্ত্রীকেও অনুরূপ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হবে। এক্ষেত্রে, উপরোক্ত ঘটনাগুলোর জন্য স্বামী নিজেকে প্রতারিত মনে করছে।


৯। উল্লেখ্য, তারা আল্লাহর বিধান অস্বীকার করেনি আবার মেয়েকে আসতেও বাধা দেয়নি। ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করেছে। আর আল্লাহর বিধান বর্ণনা করার পরেও কথায় এবং কাজে নিজেদের প্রবৃত্তিকে অনুসরণ করেছে।


১০। উল্লেখ্য, স্ত্রীর নিরাপত্তা, ভরণপোষণ, পর্দা ও বাসস্থান নিয়ে কোন শংকা নেই। তবে বনিবনায় সমস্যা আর ঝগড়া হয়। তখন স্বামী বেশি বেশি বলে ফেলে। গালিও দেয়।যদিও পরে ভালবাসা দিয়ে শুধরে নেয়। তবে স্বামি স্ত্রীকে অনেক ভালবাসে আর সদ্ভাবেই থাকতে চায়।

১১। স্বামী ওসিডিতে আক্রান্ত। সাইকিয়াট্রিস্ট বুলেছে ওসিডির কারণে স্বামীর আচরণে সমস্যা হচ্ছে। এর জন্য সাইকোথেরাপি প্রয়োজন অবশ্য এ সমস্যা বিয়ের পূর্বেই স্ত্রী ও পরিবার কে জানানো হয়েছিল


এমতাবস্থায়, স্বামীর হক বিনস্ট করা হচ্ছে কি? আর আল্লাহ যেমনটা ফয়সালা করেন বান্দার হক বিনস্টের ব্যাপারে তেমনটাই কি স্বামী আশা করতে পারেন?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيْ النِّسَاءِ خَيْرٌ؟ قَالَ: «الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَلَا مَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَان

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, কোন্ রমণী সর্বোত্তম? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে স্বামী স্ত্রীর প্রতি তাকালে তাকে সন্তুষ্ট করে দেয়, স্বামী কোনো নির্দেশ করলে তা (যথাযথভাবে) পালন করে এবং নিজের প্রয়োজনে ও ধন-সম্পদের ব্যাপারে স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করে না।
হাসান :
(নাসায়ী ৩২৩১, আহমাদ ৭৪২১, ইরওয়া ১৭৮৬, সহীহাহ্ ৮৩৩৮, সহীহ আল জামি‘ ৩২৯৮.মিশকাত ৩২৭২।)

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِي نَفَرٍ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ فَجَاءَ بِعِيرٌ فَسَجَدَ لَهُ فَقَالَ أَصْحَابُهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ تَسْجُدُ لَكَ الْبَهَائِمُ وَالشَّجَرُ فَنَحْنُ أَحَقُّ أَنْ نَسْجُدَ لَكَ. فَقَالَ: «اعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَأَكْرِمُوا أَخَاكُمْ وَلَوْ كُنْتُ آمُرُ أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَلَوْ أَمَرَهَا أَنْ تَنْقُلَ مِنْ جَبَلٍ أَصْفَرَ إِلَى جَبَلٍ أَسْوَدَ وَمِنْ جَبَلٍ أَسْوَدَ إِلَى جَبَلٍ أَبْيَضَ كَانَ يَنْبَغِي لَهَا أَن تَفْعَلهُ» .

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসারগণের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। তখন একটি উট এসে তাঁকে সিজদা করল। এটা দেখে সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকে জীব-জন্তু, গাছপালা সিজদা করে, সুতরাং আপনাকে সিজদা করা আমরা বেশী হকদার। এতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা তোমাদের রবে্র ‘ইবাদাত (সিজদা) কর এবং তোমাদের ভাইকে (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যথাযোগ্য) সম্মান কর। আমি যদি (দুনিয়াতে) কারো প্রতি সিজদা করতে নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সিজদা করার অনুমতি দিতাম। স্বামী যদি স্ত্রীকে (ন্যায়সঙ্গত ও প্রয়োজনে) হলুদ বর্ণের পর্বত হতে কালো বর্ণের পর্বতে এবং কালো বর্ণের পর্বত হতে সাদা বর্ণের পর্বতে পাথর স্থানান্তরের নির্দেশ করে, তবে তার দায়িত্বনিষ্ঠার সাথে তা পালন করা।
(আহমাদ ২৪৯৭৫, ইবনু মাজাহ ১৮৫২.মিশকাত ৩৩৭০।)

إذا دعا الرجل زوجته لحاجته فالتأته، وإن  كانت على التنور

স্বামী যখন নিজ প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকবে তখন সে যেন তাতে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় (রান্নার কাজে) থাকে (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬০; সুনানে নাসাঈ, হাদীস : ৮৯৭১)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এমতাবস্থায় স্বামীর হক বিনষ্ট করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে স্বামী মাফ না করলে স্ত্রীর উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে লা'নত হতে পারে 
এক্ষেত্রে স্বামীর বদদুয়া কাজে লাগবে,ইনশাআল্লাহ (তবে বদ দুয়া না করার পরামর্শ থাকবে) ।

আল্লাহ যেমনটা ফয়সালা করেন বান্দার হক বিনষ্টের ব্যাপারে, তেমনটাই স্বামী আশা করতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
শায়খ, একটা প্রশ্নের উত্তর পাই নি। স্বামী কি কাফির হয়ে গেছে? যেহেতু, একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে স্ত্রীর পরিবার কে কাফির ও মুনাফিক বলেছে। মূলত স্বামী বোঝাতে চেয়েছে আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয় বরং তা কাফির ও মুনাফিক দের বৈশিষ্ট্য। ঘটনার কথা প্রশ্নে উল্লেখ আছে।
by (574,050 points)
না,স্বামী কাফির হয়ে যায়নি।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...