আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
197 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
(On Behalf-post)(যার কাহিনী সে অনেক ঝামেলায় আছে)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্। আমি মেয়ে, মেডিকেল স্টুডেন্ট,পাশাপাশি আইওএম এর একজন তলিবাহ(ব্যাচ:২৩১০)। আমাদের পরিবার ইসলামিক জানতাম ছোটবেলায়, কারণ আব্বু আম্মু অনেক আমল করতেন এখনো করেন। যখন আমি হেদায়েত পাই, পর্দা শুরু করি তখন তেমন সমস্যা করেনি, কিন্তু আস্তে আস্তে মানুষের প্ররোচনায় আমার দ্বীন পালনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় সবাই।  আমি নাকি বেশি হাদিস জেনে গেছি, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করি, এতো পর্দা করলে ১৪ টা কাজের লোক রেখে কাজ করানো লাগবে। জমিদার পরিবারে বিয়ে দিবে কিভাবে, এমন করলে ডাক্তার হওয়া লাগবে না। পর্দা করে গাইরে-মাহরাম এর সামনে যাওয়া যাবে না এটা নাকি আমরা মানুষেরা বানিয়েছি, আল্লাহ যদিও বানাতো তাহলে হজ্জ করতে গেলে পুরুষ মহিলা একসাথে তাওয়াফ করে কিভাবে?  ওখানে পর্দা করে না কেনো?
আমি আমার বোনের সাথে থাকি তার জামাইর সামনে পর্দা করি যখন তিনি দেশে আসেন।  এখন একেবারে দেশে চলে আসবে সেজন্য আমাকে আগে থেকেই তার সামনে পর্দা না করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে প্রচন্ডভাবে, পড়াশোনার জন্য ওখানে থাকা, না পড়াশোনা ছাড়তে পারছি না তাদের আমার অবস্থা বুঝাতে পারছি।
আমার আম্মা বলে নামাজ পড়তে তো না করতেছে না এটাই তো অনেক, পর্দা নিয়ে কি বাড়াবাড়ি শুরু করছি, তাদের মান সম্মান নাকি আমার জন্য ডুবে যাচ্ছে।  আমার আব্বু ঠিক ছিল তাকেও আমার পর্দার বিরুদ্ধে বুঝানো হইছে এখন তিনি বলতেছেন অন্তরে কুচিন্তা থাকলে এতো ঢেকে চললে লাভ কি?  আম্মু বলে শরীয়তের জন্য মানুষ কাপড় পড়ে নাহলে উলঙ্গ থাকতো,
তাদের  এক কথায় আমি পর্দা করতে পারবো না, শরীর দেখিয়ে চলা নাকি নরমাল এমনে ঢেকে চলা যাবে না, বেদ্বীন পরিবারে বিয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করতেছে তোড়জোড় ভাবে যেন আমি বদলে যাই,,পরদা করতে না পারি।

আমি আমার বায়ো বানিয়ে দিয়েছিলাম কেমন পাত্র চাই, সেটা দেখে উল্টো আমাকে গালাগালি করেছে যে গরু ছাগলের মতো আচরণ শুরু করছি নাকি, মেরেই ফেলবে যদি নিজেকে আগের মতো না বানাই, আমি কি করবো
আমার প্রশ্ন:

১.এখন পরিবারে থাকা মানে নিজের দ্বীন বিসর্জন দেওয়া। বাসা থেকে চলে গেলে যাবোই বা কোথাই? আর বেদ্বীন ঘরে বিয়ে ঠিক করলে আমার পালানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না,,কিছুদিন আগেও বেদ্বীন একছেলে এসে আমাকে দেখে গিয়েছি,জোড় করে পর্দা না করে উনার সামনে আমাকে বসানো হয়েছে। আমার এ অবস্থায় শরীয়তের বিধান কি? দরুদ, ইস্তেখারা করেও কোনো সমাধান পাচ্ছি না উল্টো দিন দিন আমার উপর চাপ বেড়েই চলছে।আমি মানসিক ভাবে বিদ্দধস্ত,শারীরিক ভাবেও অনেক অসুস্থ হয়ে গিয়েছি।

 আপুর বর আসলে পর্দা করলে হয়তো আমায় মেরেই ফেলবে, আমার সব বই, নিজাব ফেলে দিতে বলা হইছে, আমি অনেক অসুস্থ এগুলো আর নিতে পারছি না।আমার ইসলামিক সব বই আমার বান্ধুবীদের দিয়ে দিয়েছি,এগুলো নিয়েও ঝামেলা হতো।আইওএম এর ক্লাস লুকিয়ে হেডফোন লাগিয়ে করতাম,কিতাব ও কিনতে পারিনি।
মুসলিম পরিবারে, মুসলিম দেশে চীনের কাশগড়ের হানসেনার দখলে আছি মনে হয়।

দু'আর দরখাস্ত।

সম্মানিত উস্তাদদের কাছে আমি উত্তম মাশোয়ারা চাচ্ছি,,

আমাকে দ্রুততম সময়ে সাহায্যের আর্যি৷

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- 
لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف
গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)
 
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী
তুমি দ্বীনদারীকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২,সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)


সম্মাণিত দ্বীনী বোন!
আপনি যে অবস্থানে অটল অবিচল রয়েছেন।
আপনি যথাযর্থ-ই আছেন। আপনি আপনার ফ্যমিলির সদস্যবৃন্দকে বুঝাতে থাকুন এবং আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকুন।বলা তো যায় না কখন আপনার দু'আ আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যাবে।

দ্বীনদার জীবনসঙ্গী-ই জীবনের অনেক বড় পাওয়া।নিজে নিজে পাত্র দেখে বিয়ে করাটা যদিও জায়েয।তবে তা অদ্য কোনো মুসলিমার জন্য সমুচিত হবে না।এক্ষেত্রে লজ্জার বিষয়টাও বিবেচ্য। হ্যা তারা যেরকম পাত্রর কথা বলছেন,সেরকম পাত্রকে বিয়ে করাটাও আবার নাজায়েয হবে না। কেননা শুধুমাত্র ঈমান এবং আক্বিদা-বিশ্বাস বিশুদ্ধ থাকলেই তার সাথে বিয়েশাদী করা যায়।যদিও তা উত্তমতার খেলাফ।

হেকমত এবং নরম ভাষায় তাদের বুঝাতে থাকুন।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ 
ﺍﺩْﻉُ ﺇِﻟِﻰ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺭَﺑِّﻚَ ﺑِﺎﻟْﺤِﻜْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﻋِﻈَﺔِ ﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔِ ﻭَﺟَﺎﺩِﻟْﻬُﻢ ﺑِﺎﻟَّﺘِﻲ ﻫِﻲَ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﻤَﻦ ﺿَﻞَّ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻠِﻪِ ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻬْﺘَﺪِﻳﻦَ
আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন হেকমত তথা জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও নরমভাবে উপদেশ শুনিয়ে, এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে।(সূরা নাহল-১২৫)

আপনার বা আপনার পরিচিত কারো যদি কোনো দ্বীনদার পাত্র সম্পর্কে জানা থাকে তবে সেই পাত্রকে আপনার ফ্যামিলির নিকট পাঠান।এবং কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকুন।আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন।

আল্লাহ তা'আলা বলেন
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺑُّﻜُﻢُ ﺍﺩْﻋُﻮﻧِﻲ ﺃَﺳْﺘَﺠِﺐْ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺴْﺘَﻜْﺒِﺮُﻭﻥَ ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺗِﻲ ﺳَﻴَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺩَﺍﺧِﺮِﻳﻦَ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে।(সূরা আল-মু'মিন-৬০)

নিতান্তই আপনি যদি চেষ্টা করে বিফল হয়ে যান তাহলে পাচঁ ওয়াক্ত নামায পড়ে এবং দাড়ী রয়েছে তবে আলেম নয়,এমন কারো কথা বললে মেনে নিতে পারেন। সর্বোপরি ধর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মুকাবেলা করুন। আল্লাহ-ই ভালো জানেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...