জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ভেঙ্গে না পড়ে কনে সাহস নিতে হবে। সত্যের উপর অটল অবিচল থাকতে হবে,এবং তাহা বাহ্যিকভাবেও প্রকাশ করতে হবে। যেকোনো চাপে আপনি মিথ্যা বিষয়টি স্বীকার করবেননা।
আপনার ঘনিষ্ঠ কলিগ দের সাহায্য নিতে পারেন।
আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাবেন।
(০২)
আপনি ধৈর্য ধারন করবেন,সত্যের উপর অটল থাকবেন,পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাবেন।
(০৩)
যালিমের উপর যুলুমের দরুণ বদদোয়া হাদীসে এসেছে, যেমন
ﻭﻋﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺯﻳﺪ ﻋﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺯﻳْﺪٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥّ ﺃﺭﻭﻯ ( ﺍﺳﻢ ﺍﻣﺮﺃﺓ ) ﺧﺎﺻﻤﺘْﻪ ﻓﻲ ﺑﻌْﺾ ﺩﺍﺭﻩ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺩﻋﻮﻫﺎ ﻭﺇﻳّﺎﻫﺎ ، ﻓﺈﻧّﻲ ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : ( ﻣﻦ ﺃﺧﺬ ﺷﺒْﺮًﺍ ﻣﻦ ﺍﻷﺭﺽ ﺑﻐﻴْﺮ ﺣﻘّﻪ ﻃﻮّﻗﻪ ﻓﻲ ﺳﺒﻊ ﺃﺭﺿﻴﻦ ﻳﻮْﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ) ، ﺍﻟﻠﻬﻢّ ﺇﻥ ﻛﺎﻧﺖ ﻛﺎﺫﺑﺔً ﻓﺄﻋﻢ ﺑﺼﺮﻫﺎ , ﻭﺍﺟﻌﻞْ ﻗﺒﺮﻫﺎ ﻓﻲ ﺩﺍﺭﻫﺎ ، ﻗﺎﻝ : ﻓﺮﺃﻳﺘﻬﺎ ﻋﻤﻴﺎﺀ ﺗﻠﺘﻤﺲ ﺍﻟﺠﺪﺭ ، ﺗﻘﻮﻝ : ﺃﺻﺎﺑﺘﻨﻲ ﺩﻋﻮﺓ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺯﻳﺪٍ ، ﻓﺒﻴﻨﻤﺎ ﻫﻲ ﺗﻤﺸﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﺪّﺍﺭ ، ﻣﺮّﺕ ﻋﻠﻰ ﺑﺌﺮٍ ﻓﻲ ﺍﻟﺪّﺍﺭ ﻓﻮﻗﻌﺖْ ﻓﻴﻬﺎ ﻓﻜﺎﻧﺖ ﻗﺒْﺮﻫﺎ . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ ( 1610 ) .
হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃযে আরওয়া নামী এক মহিলা একটি ঘর সম্পর্কে উনার সাথে অন্যায়ভাবে তর্কে উপস্থিত হল,তিনি উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃতাকে এবং তার দাবীকৃত ঘরকে ছেড়ে দাও, কেননা আমি নবী কারীম সাঃকে বলতে শুনেছি,যে যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমান জমি যুলুম করে নিবে,ক্বিয়ামতের দিন সাত জমিন তার গলায় বেড়ি বানিয়ে পড়িয়ে দেয়া হবে।অতঃপর তিনি বললেনঃ
হে আল্লাহ যদি সে মিথ্যুক হয় তাহলে তাকে অন্ধ করে দিন,এবং তার ক্ববরকে তার ঘরের পাশে রাখুন।রাবী বলেনঃআমি পরবর্তিতে উক্ত মহিলাকে অন্ধ অবস্থায় দেয়াল খুজতে দেখেছি,এবং সে প্রায় বলত সাঈদ ইবনে যায়েদের বদদোয়া আমার উপর লেগে গেছে,এরই মধ্যে সে হঠাৎ ঘরের অতি নিকটের একটি কুপে পড়ে মায় যায়,এবং তথায় তার ক্ববর হয়।
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﻓﻲ " ﺷﺮﺡ ﻣﺴﻠﻢ " ( 11/50 ) :
" ﻭﻓﻲ ﺣﺪﻳﺚ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺯﻳﺪٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻈﺎﻟﻢ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
ﻭﺇﺫﺍ ﺩﻋﺎ ﺍﻟﻤﻈﻠﻮﻡ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻇﻠﻤﻪ ، ﻓﻼ ﻳﺘﻌﺪَّ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﺘﺠﺎﻭﺯْ ﻣﺎ ﺷﺮﻋﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ .
ইমাম নববী বলেনঃঅত্র হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে যালিমের উপর বদদো'আ করা বৈধ আছে,যখন দো'আয় কোনো প্রকার সীমালঙ্ঘন হবে না,এবং অবৈধ দু'আ হবেনা।
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﺍﻟﺒﺼﺮﻱ :
( ﻻ ﻳﺪﻉ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭﻟﻴﻘﻞ : ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﻋﻨّﻲ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭﺍﺳﺘﺨﺮﺝ ﺣﻘّﻲ ﻣﻨﻪ ) .
ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔٍ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ( ﻗﺪ ﺃﺭﺧﺺ ﻟﻪ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻇﻠﻤﻪ ، ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺃﻥ ﻳﻌﺘﺪﻱ ﻋﻠﻴﻪ ) ﺍﻧﺘﻬﻰ . " ﺗﻔﺴﻴﺮ ﺍﺑﻦ ﻛﺜﻴﺮ " ( 1/572 )
ইমাম হাসান বসরী রাহ বলেনঃমাযলুম যালিমের উপর কখনো বদদু'আ করবেনা,বরং সে বলবেঃহে আল্লাহ তার কাছে থেকে আমার হক্বকে ফিরিয়ে দাও,কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়,তিনি বলেনঃতার জন্য অনুমতি রয়েছে, সে যালিমের বিপক্ষে সীমালঙ্ঘন ব্যতীত দু'আ করতে পারবে,(তাফসিরে ইবনে ক্বাসির, ১/৫৭২)
এই সমস্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় যালিমের বিপক্ষে দু'আ করা ও আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক যুলুম এর প্রতিশোধের অপেক্ষা করা বৈধ আছে,এতে কোনো প্রকার গোনাহ হবেনা।তবে সর্বাবস্থায় ক্ষমা করে দেয়াই উত্তম চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।
বিস্তারিত জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বদ দুয়া করতে পারবেন। আপনার বদ দুয়া কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ।