আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
118 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহ। আমি একটা সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পদার্থবিজ্ঞানের  শিক্ষার্থী। আল্লাহর রহমতে আমি বাহিরে কালো বোরকা, সুন্নতি হিজাব,নিকাব,হাত মোজা, পা মোজা পরেই চলি। কিছুটা ইন্ট্রুভার্ট হওয়াতে আমি প্রথম বর্ষে পড়া অবস্থায় ক্লাসের কারোর সাথে খুব একটা মিশতাম না। কিন্তু ২য় বর্ষে আমার ডিপার্টমেন্ট মাত্র ১১ জন প্রমোশন পায়।এর মধ্যে মেয়ের সসংখ্যা ছিল আমি সহ মাত্র ৪জন।বাকি ৩জনের সাথে খুব একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি পড়া লেখা নিয়ে।কিন্তু ওইসময় আমার ক্লাসের ৩/৪ জন ছেলের সাথে পড়া লেখা নিয়ে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।আমি ওনাদের সবার ছোট হওয়াতে প্রথম থেকেই ওনাদেরকে আমি ভাই বলে ডাকি আর ওনারা আমাকে আপা বলে ডাকে।ওনাদের সাথে সম্পর্কটা ভাই বোনের মতোই। ওনাদের সাথে আমার ভবিষ্যতে যোগাযোগ রাখার কোনো ইচ্ছা নাই ইনশাআল্লাহ। এখনো আমাদের মধ্যে জরুরি কোনো দরকার ছাড়া কোনো কথা বার্তা হয়না।
আমি সম্পুর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে চলতে চাই আবার আমার পড়া লেখাও শেষ করতে চাই।এখন আমার অবস্থান থেকে আমার পর্দা কতটুকু ছহিহ হচ্ছে, ইসলাম এটাকে কিভাবে দেখছে আর আমার করনীয় কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।দয়া করে আমাকে সঠিক মাসয়ালা দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন।

জাযাকুমুল্লাহু খইর।

1 Answer

0 votes
by (59,340 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাব

https://ifatwa.info/82416/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

 

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান) তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

 

উক্ত আয়াত সমূহে পরিষ্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিষ্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, ইমো ইত্যাদিতে প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়।

দ্বীনী অথবা প্রয়োজনীয় কোন বিষয় থাকলে কম কথায় শেষ করে নিবে।  (শর্ত হলো ফিতনাহ এর আশংকা মুক্ত থাকা।) অযথা কথা বলা হারাম।

 

https://ifatwa.info/4094 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,-

অন্তরের নারীর কামনা বাসনাকে লালন করা নিকৃষ্টতম গোনাহ। ইসলামি শরিয়তে এ ধরনের গুনাহগুলোকেও ব্যভিচার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যদিও এ গোনাহের উপর যিনার শাস্তি আপতিত হবে না।

 

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত

قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ، فَزِنَا العَيْنِ النَّظَرُ، وَزِنَا اللِّسَانِ المَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي، وَالفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ كُلَّهُ وَيُكَذِّبُهُ»

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় আল্লাহ বনি আদমের উপর যতটুকু যিনা লিখে রেখেছেন সে তা করবেই; এর থেকে কোন নিস্তার নেই। চোখের যিনা হচ্ছে- দেখা; জিহ্বার যিনা হচ্ছে- কথা, অন্তর কামনা করে ও উত্তেজিত হয় এবং যৌনাঙ্গ সেটাকে বাস্তবায়ন করে অথবা বাস্তবায়ন করে না। (সহীহ বুখারী-৬২৪৩)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

বিশেষ প্রয়োজনে ফিতনাহ এর আশংকা না থাকার শর্তে পরিপূর্ণ পর্দার সাথে শুধুমাত্র পড়া বুঝিয়ে দেয়া বা নেওয়া ব্যতিত অন্য কোনো কথা প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বলা জায়েজ হবেনা। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পড়া সংশ্লিষ্ট ছাড়া অন্য কোনো কথা বলা, গল্প করা, ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করা থেকে বিরত থাকবেনএগুলো জায়েজ হবে না।

 

উল্লেখ্য যে, গায়রে মাহরামের সাথে কখনো ভাই-বোনের সম্পর্কে থাকতে পারে না। তাই এর ফলে তাদের সাথে সরাসরি বা ফোনে, ফেইসবুকে কথা-বার্তা বলা,  বা তাদের সামনে যাওয়া জায়েজ হবে না বরং তা হারাম হবে।

 

উল্লেখ্য যে, আপনার জন্য উত্তম হবে একান্ত প্রয়োজন না হলে তাদের সাথে কথা বলা থেকে পরিহার করা। এভাবে কথা-বার্তা বলতে থাকলে আস্তে আস্তে ফিতনার আশংকাও রয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...