আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
সম্পূর্ণ প্রশ্নটি পড়ার অনুরোধ রইল-

একজন মুসলিমের আমল ইবাদাতে অনেক ভুল থাকে।

তাকে তার ভুল উল্লেখ করে সতর্ক করা সত্ত্বেও পাত্তা দেয় না,

কতক দিনের প্রতি বিরূপ হয়ে আরো দূরে সরে যায়।


তাদের পরিত্যাগ করলে আকিদা এক হওয়া সত্বেও হালাল হারাম আমলের তারতম্যে মুসলমানদের মধ্যে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।
বাস্তবে দেখা যায়--


তাদের ভুলগুলো উপেক্ষা করে তাদের সঙ্গে অন্যান্য দ্বীনী আলোচনা ও আন্তরিক চলাফেরা করলে পরবর্তীতে এক সময় সে নিজেই আল্লাহর ভয়ে তার গুনাহ থেকে ফিরে আসে।

যেমন তাবলীগীরা সরাসরি পর্দার দাওয়াত দেন না বরং তালিম-বয়ান চালিয়ে যাওয়ার বরকতে অনেকে নিজে থেকেই পর্দা শুরু করেন।


অপরদিকে, যদি বলা হয় :

তোমার এ কাজটি শরীয়ত বিরোধী।

তখন সে কাজটি তো ছারেই না বরং দ্বিনি মহল থেকে আরো দূরে সরে যায়।


১.হাদিসে এসেছে-

গুনাহগারদের সাথে উঠা-বসার কারণে আল্লাহ অন্তরকে গুনাহগারদের ন্যায় করে দেন।

 - ফাজায়েলে আমল
হিকমতের নামে সরাসরি তার ভুল না ধরে দুআর পাশাপাশি দিনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়এ তার সাথে আলোচনা করলে , তার সাথে সম্পর্ক রাখলে এ হাদিসের ধুমকির মধ্যে পরব?


২. বিরূপ হাওয়ার আশঙ্কায় 'সরাসরি ভুল ধরায় বিলম্ব করা'র পক্ষে কোন দলিল আছে কি?


৩. সরাসরি ভুল ধরে দেয়ায় যদি সে দিন থেকে দূরে সরে যায় তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?


৪.দুটো দ্বন্দ্ব আমার লেগেই থাকে-

কখন , কাকে, কি ধরনের অসৎ কাজে সাথে সাথে বাঁধা দিব আর কখন হিকমার নামে দাওয়াত বিলম্ব করবো?

চারটি প্রশ্নের উত্তর মেহেরবানী করে আলাদাভাবে দিলে উপকৃত হতাম।

জাযাকাল্লাহু খাইর।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বুদ্ধিমত্তার সাথে দাওয়াত দেওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ -
অর্থাৎ : আপনি পালনকর্তার পথের দিকে আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও শুনিয়ে উত্তম রুপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালন কর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তার পথ থেকে বিচ্যুতি হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে যারা সঠিক পথে আছে। (সূরা নাহল আয়াত ১২৫)

মন্দের মোকাবেলায় ভাল দিয়ে দাওয়াত দেওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ -
অর্থাৎ ভাল ও মন্দ সমান নয়। জওয়াবে তাই বলুন যা উৎকৃষ্ট। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শত্রুতা রয়েছে, সে যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। (সূরা হামিম সিজদাহ আয়াত- ৩৪)
 
মর্যাদাবান ব্যক্তির মর্যাদার দিকে লক্ষ্য রেখে দাওয়াত দান করতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
اذْهَبَا إِلَىٰ فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَىٰ ০ فَقُولَا لَهُ قَوْلًا لَّيِّنًا لَّعَلَّهُ يَتَذَكَّرُ أَوْ يَخْشَىٰ -
“ তোমরা ফেরাউনের কাছে যাও, কেননা সে সীমা লংঘন কারী হয়ে গেছে। তার সাথে নম্রভাবে কথা বলবে; সম্ভবতঃ সে উপদেশ গ্রহণ করবে কিংবা ভয় পেয়ে যাবে।” (ত্বাহা- ৪৩,৪৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)হাদিসে এসেছে-
গুনাহগারদের সাথে উঠা-বসা তথা আন্তরিক বন্ধুত্বের কারণে আল্লাহ তা'আলা অন্তরকে গুনাহগারদের ন্যায় করে দেন। তবে দাওয়াতের নিয়তে সাময়িক সম্পর্কে রাখলে, তাতে কোনো সমস্যা হবে না।

সুতরাং  হিকমতের নামে সরাসরি তার ভুল না ধরে দুআর পাশাপাশি দিনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সাথে আলোচনা করলে, তার সাথে সম্পর্ক রাখলে এ হাদিসের হুমকির মধ্যে পরবে না।

(২) সরাসরি ভুল ধরা যাবে না। সূরা হামিম সিজদাহর ৩৪ নং আয়াত থেকে এটাই বুঝা যাচ্ছে।

(৩)সরাসরি ভুল ধরে দেয়ায় যদি সে দিন থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে এজন্য যদিও আপনার গুনাহ হবে না।তবে ভূল না ধরাই উচিৎ ও কাম্য ছিলো।

(৪)আপনি সর্বদাই হিকমাহর সাথে ভুল না ধরে  দাওয়াত দিবেন। চেষ্টা করবেন যাতেকরে ভুল না ধরে সংশোধনে নিয়ে আসা যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...