بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির
সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী
শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক
জানুক বা না জানুক।
তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে
বিবাহ করে, যার
কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে
ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ https://www.ifatwa.info/4541/
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ
عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ:
«الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ
করেছেন, মেয়ে
তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু
দাউদ, হাদীস
নং-২০৯৮, সুনানে
দারেমী, হাদীস
নং-২২৩৪, সুনানে
তিরমিজী, হাদীস
নং-১১০৮, সুনানে
নাসায়ী, হাদীস
নং-৩২৬০, সহীহ
ইবনে হিব্বান, হাদীস
নং-৪০৮৪, সুনানে
দারাকুতনী, হাদীস
নং-৩৫৭৬}
عَنْ
أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ
اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ
أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ،
وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ:
صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে
রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত
ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে
দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা
বলে, মেয়েটি
সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল
সাঃ মেয়েটিকে বললেন,
“এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে
বিয়ে করে নাও”। {সুনানে
সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস
নং-৫৬৮, মুসন্নাফে
আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস
নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে
ইবনে আবী শাইবা, হাদীস
নং-১৫৯৫৩, দিরায়া
ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}
★★প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এমতাবস্থায় আপনি যদি মেয়ের অভিভাবক ছাড়া বিবাহ করে নেন, তাহলেও বিবাহ হয়ে যাবে এবং পরবির্ততে সেই বিয়ে রিপেয়ার করারও
কোন প্রয়োজন হবে না।
তবে এক্ষেত্রে এভাবে বিবাহ না করারই পরামর্শ থাকবে। যেহেতু মেয়ের পরিবার রাজি হয়নি, তাই সেই মেয়ে ব্যাতিত অন্যত্র বিবাহের ফিকর করারই পরামর্শ থাকবে। কেননা, এমন বিয়েতে
পরবর্তিতে ফিতনার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
মাতাপিতার পরামর্শেই বিয়েতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সকলের জন্য
উচিত হলো মাতাপিতা এবং পারিবারিক ভাবে প্রশ্নে
উল্লেখিত বিয়ে করা। যেকোনো মেয়েকে/ছেলেকে
বিবাহের ক্ষেত্রে পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করানো জরুরি। পারিবারিক ভাবে বিয়ে করার জন্য
সর্বাত্মক চেষ্টাকে অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা কাউকে পালিয়ে বা গোপন বিয়ের পরামর্শ কখনো
দিতে পারিনা।