আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
174 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
আমার বন্ধুর পক্ষ থেকেঃ
আসসালামু আলাইকুম, আমি যে বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাচ্ছি সেটি হচ্ছে বিয়ে নিয়ে। আমি দীর্ঘদিন যাবত প্রায় দুই বছরের বেশি সময় একটি মেয়ের সাথে রিলেশনে আছি বর্তমানে সে এবং আমার মধ্যে খুবই গভীরভাবে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছি। আমাদের মধ্যে কোন প্রকার শারীরিক সম্পর্ক হয়নি, কিন্তু মানসিক অবস্থা এমনটাই যে আমরা কেউ কাউকে ছাড়া কোন কিছু ভাবতে পারি না । আমার পক্ষ থেকে আমার বাবা-মা সবই বিষয়গুলো জানে এবং মেয়ের পক্ষ থেকেও জানে কিন্তু মেয়ের বাবা-মা আমি বর্তমানে নাম মাত্র বেকার হওয়ার কারণে (পূর্বে এক সময় মেয়ের বাবা-মা দুইজনেই খুব ভালোভাবে রাজি ছিল এই বিষয়ে বর্তমানে হঠাৎ একটু ভালো মানের সরকারি চাকরিজীবীর প্রস্তাবে তারা এলোমেলো হয়ে গেছে কিন্তু আমার ফ্যামিলি আমাকে পুরোটাই সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে এবং আমি নিজেও তাকে ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখি কিন্তু আমি কোন চাকরি করতেছি না এই কারণেই হচ্ছে আমি বেকার) আমার সাথে বিবাহ দিতে নারাজ। কিন্তু আমার ফ্যামিলি আমাকে সম্পূর্ণভাবে সাপোর্ট দিতে রাজি আছেন , আমার আম্মা প্রতিনিয়ত এ বিষয়ে খোঁজখবর রাখতেছেন আমাদের বিয়ে দেওয়া নিয়ে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই সিচুয়েশনে আমি যদি ওই মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে আসি তার বাবা-মার অমতে সেক্ষেত্রে আমার বিবাহ সহি হবে কিনা ? এবং যদি না হয় তাহলে বিবাহর পরে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে যদি মেনে নেয় তাহলে কি পুনরায় বিবাহ করিয়ে আবার এটাকে রিপেয়ার করতে হবে কিনা?
দয়া করে জানালে খুবই উপকৃত হব এই অবস্থা নিয়ে খুবই পেরেশানির মধ্য দিয়ে দিন যাচ্ছে । আমাদের দুইজনেরই আমরা চাই দুজন দুজনাকে খুব দ্রুত বিয়ে করে হারাম থেকে হালালে রূপান্তর হতে।
জাযাকাল্লাহ খাইর।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ

হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এমতাবস্থায় আপনি যদি মেয়ের অভিভাবক ছাড়া বিবাহ করে নেন, তাহলে বিবাহ হয়ে যাবে এবং পরবির্ততে সেই বিয়ে রিপেয়ার করারও কোন প্রয়োজন হবে না।

তবে এক্ষেত্রে এভাবে বিবাহ না করারই পরামর্শ থাকবে। যেহেতু মেয়ের পরিবার রাজি হয়নি, তাই সেই মেয়ে ব্যাতিত অন্যত্র বিবাহের ফিকর করারই পরামর্শ থাকবে। কেননা, এমন বিয়েতে পরবর্তিতে ফিতনার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।

মাতাপিতার পরামর্শেই বিয়েতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সকলের জন্য উচিত হলো  মাতাপিতা এবং পারিবারিক ভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত  বিয়ে করা। যেকোনো মেয়েকে/ছেলেকে বিবাহের ক্ষেত্রে পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করানো জরুরি। পারিবারিক ভাবে বিয়ে করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টাকে অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা কাউকে পালিয়ে বা গোপন বিয়ের পরামর্শ কখনো দিতে পারিনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
জাযাকাল্লাহ খাইরান। অবশ্যই আমাদের পিতা-মাতার পরামর্শ নিয়েই আগানো উচিত । কিন্তু যেহেতু দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ রিলেশনশিপের মধ্যে তারা ছিল এবং অনেক কিছুই তাদের মধ্যে প্রকাশিত হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করতেছি তাদের হয়তো এক হয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করে ফিরে আসা উচিত হবে। এক্ষেত্রে আপনি কি বলেন?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...