ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ওয়াদাকে পূর্ণ করার বিধান কি? ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এবং ওয়াদাকে ভঙ্গ করা হারাম না মাকরুহ?
সে সম্পর্কে ইমাম নববী রাহ বলেন,
উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,যদি কোনো মানুষ কারো সাথে এমন কোনো বিষয়ের ওয়াদা করে যা নিষিদ্ধ নয়,তাহলে তার জন্য উচিৎ হল সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা। ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এ সম্পর্কে অবশ্যই মতপার্থক্য রয়েছে।ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম আবু হানিফা এবং জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা মুস্তাহাব।যদি সে ওয়াদাকে ভঙ্গ করে ফেলে তাহলে যেন সে উত্তমতাকে পরিত্যাগ করল,এবং শক্ত মাকরুহে তানযিহি সম্ভলিত কাজে লিপ্ত হল।কিন্তু সে আবার গোনাহগার হবে না। অন্যদিকে এক দল উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব। ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবি মালিকি রাহ বলেন,যারা উক্ত মাযহাবের প্রবক্তা তাদের মধ্যে এটা উমর ইবনে আব্দুল আযিয রাহ শীর্ষে রয়েছেন।তিনি আরো বলেন,মালিকি মাযহাবের উলামাগণ তৃতীয় আরেকটি মাযহাবকে বর্ণনা করেছেন। সেটা হল যে,যদি কেউ কাউকে বলে, তুমি বিয়ে করবে বলে ওয়াদা করো তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে।অথবা তুমি ওয়াদা করো আমাকে গালি দেবে না তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে ইত্যাদি বাক্য। তাহলে এমতাবস্থায় ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব হবে।আর যদি স্বাভাবিক ওয়াদা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না।যারা ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব বলেন না তারা বলেন, যে ওয়াদা হলো হেবার সমার্থক। আর জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে হেবা কবজা ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না।তবে ইমাম মালিক রাহ এর মতে ওয়াদা কবজার পূর্বেও ওয়াজিব হয়ে যায়।(আল-আযকার-৩১৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ওয়াদা করার পর ঈমানদারের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য হল, ওয়াদাকে পূর্ণ করা।বিশেষ কোনো জরুরত ব্যতিত ওয়াদাকে ভঙ্গ না করা। বিশেষত যদি আল্লাহর সাথে ওয়াদা করা হয়, তাহলে সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা আরো বেশী জরুরী। কেননা ওয়াদাটা আল্লাহর সাথে হয়েছে। তবে যদি কখনো সেই ওয়াদাকে ভঙ্গ করে ফেলা হয়,তাহলে এজন্য তাকে কোনো প্রকার কাফফারা আসবে না। তবে আল্লাহর নামে কসম করে সেটা ভঙ্গ করলে,তখন কাফফারা দিতে হবে।
روح البيان (5/ 155):
"{وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ} سواء جرى بينكم وبين ربكم أو بينكم وبين غيركم من الناس، والإيفاء بالعهد والوفاء به هو القيام بمقتضاه بالمحافظة عليه."
تفسير ابن كثير (5/ 74):
"{ وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ } أي الذي تعاهدون عليه الناس والعقود التي تعاملونهم بها، فإن العهد والعقد كل منهما يسأل صاحبه عنه { إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا } أي: عنه."
تفسير الطبري = جامع البيان ط هجر (14/ 591):
"{إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا} يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ جَلَّ ثَنَاؤُهُ سَائِلٌ نَاقَضَ الْعَهْدِ عَنْ نَقْضِهِ إِيَّاهُ، يَقُولُ: فَلَا تَنْقُضُوا الْعُهُودَ الْجَائِزَةَ بَيْنَكُمْ، وَبَيْنَ مَنْ عَاهَدْتُمُوهُ أَيُّهَا النَّاسُ فَتَخْفِرُوهُ، وَتَغْدِرُوا بِمَنْ أَعْطَيْتُمُوهُ ذَلِكَ. وَإِنَّمَا عَنَى بِذَلِكَ أَنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَطْلُوبًا."
فقط واللہ اعلم
فتوی نمبر : 144205201194
دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن