আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
131 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ্,


উস্তাদজী ,


১. উস্তাদজী হায়েজ অবস্থায় আমলী সূরা আয়াতুল কুরসি, চার কুল পড়া জায়েয আছে? কেউ যদি দুআর নিয়তে পড়তে গিয়ে এই সূরাগুলোর শুরুতে ইস্তিআজা বাসমালা পড়ে ফেলে ভুলে তাহলে কি গোনাহ হবে?

 

 

২. স্বপ্ন সম্পর্কে ......


আমি কয়েকদিন আগে একটা স্বপ্ন দেখি, আমি এক জায়গায় থেকে যাচ্ছি,তো ওখানে চলতি পথে একটা জায়গায় বামদিকে দেখতে পেলাম কিছু লোকজন মূর্তি পূজা করছে, আমি মন খারাপ করে ভাবতেছি ওরা আল্লাহ্ কে রেখে এমন মূর্তি পূজা করছে কেন, ওদের কি আমার কিছু বলা বা দাওয়াত দেওয়া উচিত, এভাবে ভাবতে ভাবতে মনে খারাপ করে ওখানে থেকে চলে যাই তাদের কিছু না বলে।

 


আজ রাতে ,  আমি স্বপ্ন দেখি আমার পাশের আপন নয় চাচতো চাচাতো ভাবী একটু দূরে সম্পর্কে চাচতো চাচাতো ভাবী তার মেয়েকে নিয়ে অসুস্থ এ জন্য কবিরাজি করছে  এবং মূর্তি পূজা করছে আমি তাদের আড়ালে থেকে ঐ মূর্তি ধরে ফেলে দেই এবং মনে মনে ভাবি এহ আল্লাহ্ কে রেখে মূর্তি পূজা করছে , এটা ভেবে মূর্তি ফেলে দেই, তারা জানে না এবং একটু দূরে থেকে তাদের কাজ কর্ম দেখতেছিলাম তাদের আড়ালে আর এগুলো ভাবতেছিলাম এবং করতেছিলাম।


এটা থেকে কি কোন শিক্ষা বা সচেতনতা আছে উস্তাদজী?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

অনিচ্ছায় মনের অজান্তে হায়েজ অবস্থায় যবান হতে কোনো আয়াত তিলাওয়াত হয়ে গেলে আল্লাহ তায়ালা পাকরাও করবেননা। ক্ষমা করবেন। বে ইচ্ছাকৃতভাবে তিলাওয়াত করা যাবেনা, অনিচ্ছায় তিলাওয়াত চালু হয়ে গেলে সাথে সাথেই চুপ হয়ে যেতে হবে, তিলাওয়াত চালু রাখা যাবেনা। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির দরুন মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

 ( رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا )

হে আমাদের রব,আমাদের কে পাকরাও করবেন না,যদি আমি ভূলে যাই কিংবা অজ্ঞতা বশত কিছু করে ফেলি। (সূরা বাকারা-২৮৬)

وقوله تعالى : (وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا) الأحزاب/ 5

এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

وقوله صلى الله عليه وسلم : ( إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ، وَالنِّسْيَانَ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ) رواه ابن ماجه (2043)

নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অজ্ঞতা ও ভূলভাল কে ক্ষমা করে দিবেন।এবং অপারগতা বশত কৃত গোনাহকেও ক্ষমা করে দিবেন। (সুনানে ইবনে মা'জা,-২০৪৩)

**হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি না? এ সম্পর্কে উলামাদের মধ্যে মতবেদ রয়েছে।জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,

হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত মহিলাদের জন্য হারাম, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হবে।তবে দু'আ  যিকিরের নিয়তে কুরানের আয়াত পড়া যাবে।তেলাওয়াতের নিয়তে পড়া যাবে না। যেমন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রাব্বানা আ'তিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ। এ জাতীয় কুরআনের আরো অন্যান্য আয়াত। তারা দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেন, হায়েয অবস্থায় কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে না।

হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত

عن ابن عمر رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم  قال : " لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئاً من القرآن

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,হায়েযা এবং জুনবী ব্যক্তি কুরআন থেকে কিছুই পড়তে পারবে না। (সুনানু তিরমিযি-১৩১)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে পিরিয়ডে দোয়া হিসেবে এমন সব আয়াত পড়া যাবে যেসব আয়াত দোয়ার অর্থ প্রকাশ করে অথবা আল্লাহর জিকির, প্রশংসা, বড়ত্ব বুঝায়। এ অবস্থায় এমন কোন আয়াত পড়া যাবেনা যা দ্বারা আল্লাহর নির্দেশ এবং নিষেধাজ্ঞা, পূর্বের অথবা ভবিষ্যতের কোন ঘটনা অথবা ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য বুঝায়। মোটকথা, এ অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াতের উদ্দেশ্যে কোরআন পড়া যাবেনা।

উল্লেখিত মূলনীতি অনুসারে, আপনি যদি নিয়ত রাখেন আল্লাহর প্রশংসাপূর্ণ আয়াতের মাধ্যমে জিন এবং শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষার জন্য পিরিয়ডের সময় ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি, তিনকুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়বেন, তাহলে দোয়া হিসেবে এটা পড়া যাবে। তবে আপনি সুরা কাফিরুন পড়তে পারবেন না কারণ এটা উপরের উল্লেখিত শর্ত পূরণ করে না। সুতরাং ভুলে ইস্তিআযা বা বাসমালাহও যদি পড়ে ফেলেন তাহলে গুনাহ হবে না বলে আশা করা যায়। তবে তেলাওয়াত মনে হওয়ার সাথে সাথেই চুপ হয়ে যেতে হবে  

২. উপরোক্ত স্বপ্ন থেকে একথা বুঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা আপনার মাধ্যমে অমুসলিম/মুসলিম সকলের মাঝে দাওয়াতের কাজ নিবেন ইনশাআল্লাহ। আপনি ফিকির রাখবেন যে, আপনার আত্নীয়-স্বজন ও আশেপাশে যারা গুনাহ করছে, শিরিক করছে বা ঈমানহারা অবস্থায় আছে তাদেরকে হেকমতের সাথে ধীরে ধীরে ইসলামের দাওয়াত দিবেন ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...