بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
অনিচ্ছায় মনের অজান্তে হায়েজ
অবস্থায় যবান হতে কোনো আয়াত তিলাওয়াত হয়ে গেলে আল্লাহ তায়ালা পাকরাও করবেননা। ক্ষমা করবেন। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে তিলাওয়াত করা যাবেনা,
অনিচ্ছায় তিলাওয়াত চালু হয়ে গেলে সাথে
সাথেই চুপ হয়ে যেতে হবে, তিলাওয়াত
চালু রাখা যাবেনা। অনিচ্ছাকৃত
ত্রুটির দরুন মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
( رَبَّنَا
لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا )
হে আমাদের রব,আমাদের কে পাকরাও করবেন না,যদি আমি ভূলে যাই কিংবা অজ্ঞতা বশত কিছু করে ফেলি।
(সূরা বাকারা-২৮৬)
وقوله تعالى
: (وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا
تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا) الأحزاب/ 5
। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ
নেই, তবে
ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
وقوله صلى
الله عليه وسلم : ( إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ،
وَالنِّسْيَانَ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ) رواه ابن ماجه (2043)
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অজ্ঞতা ও ভূলভাল কে ক্ষমা করে দিবেন।এবং
অপারগতা বশত কৃত গোনাহকেও ক্ষমা করে দিবেন। (সুনানে ইবনে মা'জা,-২০৪৩)
**হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত
করা যাবে কি না? এ
সম্পর্কে উলামাদের মধ্যে মতবেদ রয়েছে।জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,
হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত
মহিলাদের জন্য হারাম, যতক্ষণ
না তারা পবিত্র হবে।তবে দু'আ যিকিরের নিয়তে কুরানের আয়াত পড়া যাবে।তেলাওয়াতের
নিয়তে পড়া যাবে না। যেমন, বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রাব্বানা আ'তিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ। এ জাতীয় কুরআনের আরো অন্যান্য
আয়াত। তারা দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেন, হায়েয অবস্থায় কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে না।
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عمر
رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم
قال : " لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئاً من القرآن
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,হায়েযা এবং জুনবী ব্যক্তি কুরআন থেকে কিছুই পড়তে পারবে
না। (সুনানু তিরমিযি-১৩১)
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি
ভাই/বোন!
১. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে
পিরিয়ডে দোয়া হিসেবে এমন সব আয়াত পড়া যাবে যেসব আয়াত দোয়ার অর্থ প্রকাশ করে অথবা আল্লাহর জিকির,
প্রশংসা,
বড়ত্ব বুঝায়। এ অবস্থায় এমন কোন আয়াত পড়া
যাবেনা যা দ্বারা আল্লাহর নির্দেশ এবং নিষেধাজ্ঞা, পূর্বের অথবা ভবিষ্যতের কোন ঘটনা অথবা ঘটনা সম্পর্কিত
তথ্য বুঝায়। মোটকথা, এ
অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াতের উদ্দেশ্যে কোরআন পড়া যাবেনা।
উল্লেখিত মূলনীতি অনুসারে,
আপনি যদি নিয়ত রাখেন আল্লাহর প্রশংসাপূর্ণ
আয়াতের মাধ্যমে জিন এবং শয়তানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষার জন্য পিরিয়ডের সময় ঘুমানোর আগে
আয়াতুল কুরসি, তিনকুল
(সুরা ইখলাস, ফালাক,
নাস) পড়বেন,
তাহলে দোয়া হিসেবে এটা পড়া যাবে। তবে আপনি
সুরা কাফিরুন পড়তে পারবেন না কারণ এটা উপরের উল্লেখিত শর্ত পূরণ করে না। সুতরাং ভুলে ইস্তিআযা বা বাসমালাহও যদি পড়ে ফেলেন তাহলে গুনাহ
হবে না বলে আশা করা যায়। তবে তেলাওয়াত মনে হওয়ার সাথে সাথেই চুপ হয়ে
যেতে হবে ।
২. উপরোক্ত স্বপ্ন থেকে একথা বুঝা যায়
যে, আল্লাহ তায়ালা আপনার মাধ্যমে অমুসলিম/মুসলিম সকলের মাঝে দাওয়াতের কাজ নিবেন ইনশাআল্লাহ।
আপনি ফিকির রাখবেন যে, আপনার আত্নীয়-স্বজন ও আশেপাশে যারা গুনাহ করছে, শিরিক করছে বা
ঈমানহারা অবস্থায় আছে তাদেরকে হেকমতের সাথে ধীরে ধীরে ইসলামের দাওয়াত দিবেন ইনশাআল্লাহ।