আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
শায়েখ, আমি কিছুটা পেরেশানিতে আছি। আমি কিছুদিন আগে বিয়ে করি। আমি যাকে বিয়ে করি তার সাথে আমার অনেক বছর পরিচয় ছিল একজন অন্যজনকে পছন্দ করতাম। কিন্তু  আমরা কোন ধরনের হারাম রিলেশনে আর থাকতে চাইতেছিলাম না। কিন্তু ফ্যামিলি ভাবে বিয়ে করা এখন সম্ভব হইছিল না। কারণ মেয়ের বড় বোন আছে আর তার ঘর থেকে এখন বিয়ে দিবে না।
তাই আমরা নিজেরা বিয়ে করি। বিয়ের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে আমার আপন বড় ভাই ছিল আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু এবং আমার একজন বন্ধু ছিল। আর মেয়ের তরফ থেকে তার একজন বান্ধবী ছিল। মেয়ের তরফ থেকে আপন কোন সাক্ষী জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। এবং আমাদের বিয়ে একটি কাজী অফিসে হয়। একজন কাজি ধারা।
বিয়ের সময়ে আমার স্ত্রীকে প্রস্তাব দেওয়া হয় যেভাবে সাধারণত সব বিয়েতে দেওয়া হয় দেনমোহর সবকিছুরসহ।  এবং সেইটা কবুল করে নাই। কিন্তু সচরাচর যেটা আমরা দেখি যে মেয়েদেরকে প্রস্তাব পাঠানো হয় তারা কবুল করে এবং ছেলেদেরকেও প্রস্তাব পাঠানো হয় তারাও কবুল বলে। কিন্তু প্রস্তাব দিয়েছে তিনি আমাকে কোন ধরনের প্রস্তাব দেয়নি । এবং আমাকে কিছু বলেনি।  যখন আমার স্ত্রী কবুল বলে। সকলে আলহামদুলিল্লাহ বলে এবং আল্লাহর কাছে দোয়া পাঠ করে।

যিনি আমার স্ত্রীকে প্রস্তাব দেয় উনাকে আমি জিজ্ঞাসা করেছি যে আমাকে দেওয়া হয়নি এটা দিয়ে কোন সমস্যা হবে কি। উনি বলেছেন না এটা সুন্নত তরিকায় হবে।
কিছু মাস চলে যায়। এখন আমি বিয়ে নিয়ে অনেকের কাছে অনেক কিছু শুনছি। যেভাবে বিয়ে করলে হবে না ওভাবে বিয়ে করলে হবে না। বা অনেক কিছু। হাই আমি অনেক পেরেশানিতে আছি যে আমাদের বিয়েটা কি হয়েছে কি হয়েছে না।
শায়েখ, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে ইসলামিক তরিকা অনুযায়ী মেয়েটা কি জায়েজ হয়েছে? কারন আমরা কোন হারাম সম্পর্কে থাকতে চাচ্ছি না। ইসলামিক তরিকা অনুযায়ী সুন্নত অনুযায়ী কি আমাদের বিয়েটা হয়েছে কি হয়নি। অনেকের কাছে অনেক ধরনের ফতুয়া মাসালা শুনছি আমি কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাইতে পারতেছি না। দয়া করে আমাকে সাহায্য করবেন।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।

আরো জানুনঃ- 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি বা তাদের উকিল প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহে যেহেতু অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয়েছে,সুতরাং এক্ষেত্রে মেয়েটি নাবালেগাহ হয়ে থাকলে বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।

আর মেয়ে বালেগাহ হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে লক্ষনীয় বিষয় হলো যেই ব্যাক্তি আপনার পক্ষ থেকে উকিল হয়ে মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলো,সেই ব্যাক্তিকে কি আপনি বিবাহের প্রস্তাবের জন্য উকিল বানিয়েছিলেন?
আপনি কি তাকে সেই মেয়েটির সাথে নিজের বিবাহ দিয়ে দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন? 

যদি দায়িত্ব দিয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে সে আপনার পক্ষ থেকে উকিল,তাই আপনার পক্ষ থেকে তার প্রস্তাব পেশ করা মানে আপনি নিজেই প্রস্তাব পেশ করার মতো।

সুতরাং যেনো এমন হলো যে আপনি নিজেই প্রস্তাব পেশ করেছেন,আর সেই মেয়েকে প্রশ্নে উল্লেখিত সাক্ষীদের সামনে কবুল বলেছে,সুতরাং এই বিবাহ হয়ে যাবে।

টেনশনের কিছু নেই।

তবে আপনি যদি কাউকে বিবাহের দায়িত্ব না দিয়ে থাকেন,বা বিবাহের উকিল না বানিয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে বিবাহটি মওকুফ থাকবে।

পরবর্তীতে মোহরানা,স্ত্রীর সাথে স্বামী সুলভ আচরন ইত্যাদি দ্বারা যেহেতু আপনার সম্মতি প্রকাশ পেয়েছে,সুতরাং সেক্ষেত্রেও বিবাহ সহীহ হয়ে যাবে।

চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...