আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
153 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্।  

আমাকে একটি ছেলে পছন্দ করে এবং আমিও। ফেসবুকে পরিচয়। আমরা সমবয়সী এবং দুইজন ২ জেলার। আমার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাবে ভেবে ভয়ে-টেনশনে ছেলে আমার বাবাকে আমাদের পছন্দের কথা জানায়। যেহেতু ছেলে পড়াশোনা করে + দূরত্ব + ছেলেদের আর্থিক অবস্থা আরো উন্নত হওয়া দরকার - এসব কারণ দেখি আমার বাবা ছেলেকে রিজেক্ট করে দেয় এবং আমাকে কড়া আদেশ দেয় আমি যেনো ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি। 

উল্লেখ্য, আমার বাবার সম্মান + বাবা-মা'কে কষ্ট দিতে না চাওয়া + ভয় থেকে আমি ছেলেকে না করে দেই। কথা বন্ধ রাখি৷ কিন্তু উনি আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে এটি আমি জানি৷ আমাকে ছাড়া তিনি সুইসাইড করবেন এটুকুও জানি। কথা বন্ধ করার পর উনি পাগলের মতো হয়ে গেসেন। সাইক্রিয়াটিস্ট দেখিয়েছেন। বারবার আমাকে রিকোয়েস্ট করেছেন। ছেলের অবস্থা খারাপ দেখে উনার বাবা আমার বাবাকে রিকোয়েস্ট করেছেন। কান্না পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু আমার বাবা কিছুতেই রাজি হন নি, উলটো অপমান করেছেন। ফলশ্রুতিতে ছেলে ৩ বার সুইসাইড এটেম্প নিয়েছেন। ছেলের মা আমাকে রিকোয়েস্ট করেছেন উনাদের কাছে চলে যেতে অথবা আমাদের পক্ষ থেকে যে শর্ত দিবে তা সব মেনে নিবেন বলে কথা দিয়েছেন। 

আমার বাবা -মা'য়ের অমতে বিয়ে করে কখনো সুখী হবো না। বাবা মায়ের সম্মান,  আমার ছোট বোনদের ফিউচার এসব কথা চিন্তা করে আমি আর ডিসিশন নিয়ে উঠতে পারি নি। এরমধ্যেই ছেলে সুইসাইড করে। মারা যায়। 

নোট: ছেলে স্কলার শীপ বাবদ ২০ হাজার এর মত টাকা পেতো যা দিয়ে একটা মেয়ের দায়ীত্ব নেয়া যায়৷ ছেলের বাবাও মেয়ের দায়ীত্ব নিবে বলেছে। 

আমার প্রশ্ন-

১. আমি জানতাম ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে। তারপরেও নিজের বাবা মায়ের অমতে বিয়ে না করাতে কি আমার গুনাহ্ হবে? এই সিচুয়েশনে আমার কি করা উচিৎ ছিলো? ( প্লিজ বিস্তারিত বলবেন।) 

২. এই মৃত্যুর দায় কি আমার? যেহেতু আমি শিওর ছিলাম এমন হতে পারে।( তবে কখনো এ ব্যাপারে প্ররোচনা দেই নি, বরং বোঝানোর চেষ্টা করেছি৷)  

৩. আমার জন্য ছেলে + উনার ফ্যামিলি যে কষ্ট পেলো। উনাদের হক নষ্ট করলাম। এখন আমি এর থেকে মুক্তি পাবো কিভাবে? যিনি মারা গেসেন তার থেকে তো ক্ষমা চাইতে পারবো না, তাহলে কি আল্লাহ্ আমায় মাফ করবেন না? 

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اِنۡ تَکۡفُرُوۡا فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنۡکُمۡ ۟ وَ لَا یَرۡضٰی لِعِبَادِہِ الۡکُفۡرَ ۚ وَ اِنۡ تَشۡکُرُوۡا یَرۡضَہُ لَکُمۡ ؕ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ؕ ثُمَّ اِلٰی رَبِّکُمۡ مَّرۡجِعُکُمۡ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۷﴾ 

যদি তোমরা কুফরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। আর তিনি তার বান্দাদের জন্য কুফরী পছন্দ করেন না। এবং যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও তবে তিনি তোমাদের জন্য তা-ই পছন্দ করেন। আর কোন বোঝা বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবে না। তারপর তোমাদের রবের কাছেই তোমাদের ফিরে যাওয়া। তখন তোমরা যা আমল করতে তা তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন। নিশ্চয় অন্তরে যা আছে তিনি তা সম্যক অবগত।
(সুরা আয যুমার ০৭)

وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی

কোনো ব্যাক্তি অন্য কোনো ব্যাক্তির গুনাহের বোঝা বহন করবেনা।
(সুরা ফাতির ১৮)

অর্থাৎ কেয়ামতের দিন কোন মানুষ অন্য মানুষের পাপভার বহন করতে পারবে না। প্রত্যেককে নিজের বোঝা নিজেই বহন করতে হবে। “বোঝা” মানে কৃতকর্মের দায়দায়িত্বের বোঝা। এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কাছে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেই তার কাজের জন্য দায়ী এবং প্রত্যেকের ওপর কেবলমাত্র তার নিজের কাজের দায়-দায়িত্ব আরোপিত হয়। এক ব্যক্তির কাজের দায়-দায়িত্বের বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্য ব্যক্তির ঘাড়ে চাপিয়ে দেবার কোন সম্ভাবনা নেই। কোন ব্যক্তি অন্যের দায়-দায়িত্বের বোঝা নিজের ওপর চাপিয়ে নেবে এবং তাকে বাঁচাবার জন্য তার অপরাধে নিজেকে পাকড়াও করাবে  এরও কোন সম্ভাবনা নেই।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,    
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে নিজের বাবা মায়ের অমতে বিয়ে না করাতে আপনার গুনাহ্ হবেনা।

তবে শরীয়তের বিধান উপেক্ষা করে ঐ ছেলের সাথে বিবাহের পূর্বে প্রেম করার কারনে আপনার অবশ্যই গুনাহ হবে,এর জন্য মহান আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করতে হবে,ভবিষ্যতে আর এহেন গুনাহ করবেননা,মর্মে মহান আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে এই মৃত্যুর দায় আপনার নয়।

(০৩)
আপনার বাবা ঐ ছেলের পরিবারের কাছে গিয়ে আপনার পক্ষ হতে ও নিজের ব্যবহারের কারনে নিজের পক্ষ হতেও ক্ষমা চেয়ে নিবেন,এবং আপনারা উভয়ে ঐ ছেলের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...