আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
174 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

আমি জানি আল্লাহর ভয় ব্যতীত অন্য কোন কারণে গুনাহ ত্যাগ করলে পাপ হতে পারে
১,দুনিয়াবী কুফল এর কারনে কেউ যদি কোন গুনাহ ছেড়ে দেয়
তাহলে,
ক, গুনাহ ছাড়ার জন্য সওয়াব পাবেকি?

খ,অন্য কিছুর জন্য গুনাহ ছাড়ার দরুন উলটো পাপ হবে কি?

গ,নাকি সওয়াব ও হবেনা গুনাহ ও হবেনা?
দুনিয়াবি কুফল বলতে ধরুন হস্তমৈথুন করলে শারীরিক ক্ষতি হয়
২,যদি গুনাহ ছাড়া হয় এমন দুনিয়াবী শাস্তির কারণে যা শরীয়তে অনুমোদিত না।যেমন চুরি করলে দেশান্তরি করা হবে। এখানে চুরির শারঈ শাস্তি হাত কাটা।কিন্তু অনৈসলামিক সরকার  চুরির শাস্তি দেশান্তরি করেছে। তাহলে

ক, গুনাহ ছাড়ার জন্য সওয়াব পাবেকি?

খ,অন্য কিছুর জন্য গুনাহ ছাড়ার দরুন উলটো পাপ হবে কি?

গ,নাকি সওয়াব ও হবেনা গুনাহ ও হবেনা?

৩,যদি গুনাহ ছাড়া হয় এমন দুনিয়াবি শাস্তির কারণে যা শরীয়তে অনুমোদিত। যেমন কেউ রজমের ভয়ে জিনা ছেড়ে দিল।তাহলে

ক, গুনাহ ছাড়ার জন্য সওয়াব পাবেকি?

খ,অন্য কিছুর জন্য গুনাহ ছাড়ার দরুন উলটো পাপ হবে কি?

গ,নাকি সওয়াব ও হবেনা গুনাহ ও হবেনা?

৪,যদি কেউ গুনাহ ছাড়ে সাধারণ শাস্তির কারণে যা শরীয়তে বৈধ অবৈধ কোনটাই বলা নেই। যেমন কাজে ফাঁকি দিলে অফিসে  প্রমোশন মিলবে না। এজন্য যদি কেউ হক না মেরে সত্যিকার অর্থে ভালো ভাবে কাজ করে তাহলে

ক, গুনাহ ছাড়ার জন্য সওয়াব পাবেকি?

খ,অন্য কিছুর জন্য গুনাহ ছাড়ার দরুন উলটো পাপ হবে কি?

গ,নাকি সওয়াব ও হবেনা গুনাহ ও হবেনা?

৫, তালাক দেয়ার নিয়তে মজা করে কেনায়া তালাকের বাক্য বললে কি তালাক হবে?

৬,তালাক দেয়ার নিয়ত নাই তবে মজা করে বললে কেনায়া বাক্য তালাক হবে?

৭,অনেক সময় স্ত্রীর উপর অত্যধিক রুষ্ট হই।তখন ওকে আমি বলি,' তোমার আর কেয়ার করবনা,তোমার  কথা  আর ভাববোনা,যা খুশি করবা,আমি বাধা দিবনা,আমি আমার মত থাকব,খোজ নিবনা,তোমার সমস্যা কে নিজের সমস্যা মনে করে সমাধান করতে যাবনা'

'যা খুশি করুক আমি খোজ নেবনা'

এসব বলি,এসব বলে আমি আমার কাজে ডুবে থাকি ওর খোজ নেইনা,কথা বলিনা নিজের কাজ নিজে করার চেষ্টা করি।কিন্তু এই কথাগুলা চূড়ান্ত তালাকের নিয়তে বলিনা।নিয়ত থাকে 'শুধু আমাদের বাহ্যিক বৈবাহিক সম্পর্ক আছে। তালাক হয়নি,কিন্তু আমি স্বামী হয়ে আমার যা করণীয় করবনা। বিবাহ সম্পর্ক আছে বটে কারণ আমি চাচ্ছিনা চিরবিচ্ছিন্ন হই কিন্তু আমি তার উপর রুষ্ট তাই তার সাথে অপরিচিতের মত ব্যবহার করব,শারীরিক সম্পর্ক ও করবনা'।

এসব কথায় কি তালাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (560,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَقُولُ اللهُ إِذَا أَرَادَ عَبْدِي أَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً فَلاَ تَكْتُبُوهَا عَلَيْهِ حَتَّى يَعْمَلَهَا فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا بِمِثْلِهَا وَإِنْ تَرَكَهَا مِنْ أَجْلِي فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَلَمْ يَعْمَلْهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ঃ আল্লাহ্ বলেন, আমার বান্দা কোন গুনাহর কাজ করতে চাইলে তা না করা পর্যন্ত তার গুনাহ্ লেখো না। আর যদি তা করেই ফেলে, তাহলে তা সমপরিমাণ লেখো। আর যদি আমার (মাহাত্ম্যের) কারণে তা ত্যাগ করে, তাহলে তার পক্ষে একটি নেকী লেখো এবং যদি বান্দা কোন ভাল কাজের ইচ্ছা করল কিন্তু তা না করে, তবুও তোমরা তার জন্য একটি নেকী লেখো। তারপর যদি তা করে, তবে তোমরা তার জন্য কাজটির দশ গুণ থেকে সাত’শ গুণ পর্যন্ত লেখো। (বুখারী ৭৫০১.আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৯২,মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩০৭০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا تَحَدَّثَ عَبْدِي بِأَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَأَنَا أَكْتُبُهَا لَهُ حَسَنَةً مَا لَمْ يَعْمَلْ فَإِذَا عَمِلَهَا فَأَنَا أَكْتُبُهَا بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا وَإِذَا تَحَدَّثَ بِأَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً فَأَنَا أَغْفِرُهَا لَهُ مَا لَمْ يَعْمَلْهَا فَإِذَا عَمِلَهَا فَأَنَا أَكْتُبُهَا لَهُ بِمِثْلِهَا " . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " قَالَتِ الْمَلاَئِكَةُ رَبِّ ذَاكَ عَبْدُكَ يُرِيدُ أَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً - وَهُوَ أَبْصَرُ بِهِ - فَقَالَ ارْقُبُوهُ فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ بِمِثْلِهَا . وَإِنْ تَرَكَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً - إِنَّمَا تَرَكَهَا مِنْ جَرَّاىَ " . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أَحْسَنَ أَحَدُكُمْ إِسْلاَمَهُ فَكُلُّ حَسَنَةٍ يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ وَكُلُّ سَيِّئَةٍ يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ بِمِثْلِهَا حَتَّى يَلْقَى اللَّهَ " .

মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ আমার বান্দা কোন নেক কাজ করবে বলে যদি মনে মনে ভাবে, তবে তা সস্পাদন করার পূর্বে আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখে দেই। পরে যদি কার্যত তা সম্পাদন করে নেয় তবে তার দশগুন সাওয়াব লিখি। পক্ষান্তরে যদি কোন অসৎ কাজ করবে বলে মনে মনে ভাবে তবে তা কাজে পরিণত না করা পর্যন্ত মাফ করে দেই। কিন্তু তা সম্পাদন করলে তদনূরুপ একটি শোনাহ লিখি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ ফেরেশতাগণ আবেদন জানায়ঃ হে প্রতিপালক! এ তোমার বান্দা, পাপ কর্মের ইচ্ছা করছে। আল্লাহ তা’আলা উত্তর করেন অপেক্ষা করো, যদি সম্পাদন করে ফেলে, তবে সে অনুপাতে লিখবে, আর যদি তা পরিত্যাগ করে তবে সে স্থলে একটি সাওয়াব লিখে দিবে। কারণ আমার জন্যই সে তা পরিত্যাগ করেছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে তার ইসলামে নিষ্ঠাবান হয় তার কৃত প্রত্যেকটি নেক কাজের বিনিময়ে দশ থেকে সাতশ গুন পর্যন্ত সাওয়াব লেখা হয়। পক্ষান্তরে তার কৃত প্রত্যেকটি বদ কাজের বিনিময়ে তদনুরুপ লেখা হয়। (মৃত্যুর মাধ্যমে) আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাৎ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকবে।
(মুসলিম শরীফ ২৩৬ ইফাঃ)

গুনাহ ছেড়ে দেয়ার কয়েকটি ছুরত ও তার হুকুমঃ-

★আল্লাহর ভয়ে গুনাহ ছেড়ে দেয়া।
 এক্ষেত্রে সে ছওয়াব পাবে।

★মানুষকে দেখানোর জন্য ও প্রশংসা কুড়ানোর জন্য গুনাহ ছেড়ে দেয়া।
এক্ষেত্রে সে ছওয়াব পাবেনা।
তবে কিছু ক্ষেত্রে গুনাহও হবে।
কেননা গুনাহ ছেড়ে দেয়া ইবাদত,আর ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কাহারো জন্যই হয়না।

★মানুষের থেকে লজ্জিত হয়ে গুনাহ ছেড়ে দেয়া,এক্ষেত্রে কোনো গুনাহ নেই। কিন্তু কখনো কখনো এক্ষেত্রে ছওয়াবও হয়। যদি এক্ষেত্রে শরয়ী কোনো মাকসাদ থাকে,যাহা আল্লাহ পছন্দ করে।

★গুনাহের প্রতি বিমুখতার দরুন গুনাহ ছেড়ে দেয়া,আল্লাহর ভয়েও নয়,মানুষের ভয়েও নয়।

এক্ষেত্রে কোনো ছওয়াবও নেই,গুনাহও নেই।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে ছওয়াবও নেই,গুনাহও নেই।
তবে মনে আল্লাহর ভয় বা শরীয়তের নিষেধাজ্ঞা মানার নিয়তও থাকে,সেক্ষেত্রে ছওয়াব পাবে।

(২.৩)
এক্ষেত্রে ছওয়াবও নেই,গুনাহও নেই।

(০৪)
এক্ষেত্রে ছওয়াবও নেই,গুনাহও নেই।

(০৫)
তালাক দেয়ার যেহেতু নিয়ত ছিলো,তাই এক্ষেত্রে তালাক হয়ে যাবে।

(০৬)
তালাক দেয়ার যেহেতু নিয়ত ছিলোনা,তাই এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।

(০৭)
তালাক দেয়ার যেহেতু নিয়ত ছিলোনা,তাই এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...