আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4,352 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
recategorized by
আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন মেয়ে। আমি অবিবাহিত। আমার প্রায় সময় ই মনে হয়, আমি মনে হয় ওমুক ভাবে ওমুক সময় মারা যাব। আমার পরিবারের মানুষ মনে হয় এমন ভাবে, এমন কাজ করলে মারা যাবে। আমার ও আমার পরিবার এর মানুষ কে নিয়ে আমার অনেক দুশ্চিন্তা হয়। আমি এগুলা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা করি। আমার মনে হয় এই কাজ টা করলে মরে যাব। এমন করে আমি অনেক কাজ করি না।  ভয় লাগে। একটা নির্দিষ্ট দিন টারগেট করি যে, সেদিন আমার কিছু একটা হতে পারে। পরে সেদিন না আসা পর্যন্ত আমি টেনসন করি। কারন সেদিন যদি কিছু হয়ে যায়। পরে সেদিন চলে গেলে যখন দেখি আল্লাহর রহমতে আমি ভালো আছি তখন আমি ঠিক হয়ে যাই আবার। কিন্ত এভাবে দুশ্চিন্তা থেকে আমার বুক ধড়ফড় শুরু হয়ে যায়। বুকে কেউ চাপ দিচ্ছে এমন লাগে। আমি জানি আল্লাহ তায়ালা বলেছেন কে কখন কোথায় মারা যাবে কেঊ জানে না।  আমি জানি মৃত্যুর কথা মনে করা ভালো তবে আমার এটা তো টেনসন এ চলে গেছে। আমি সারাদিন কিছু কাজ, পড়াশুনা করতে পারি না।  আমি যখন দুশ্চিন্তা করি তখন আমার কাছে কোনো যুক্তি ই মাথায় মানাতে পারি না। এমন অবস্থায় আমি কি করতে পারি। আমার এই সমস্যা টা কিছুদিন পর পর ই দেখা দেয়। এটা কি সয়তান করতেছে এমন? আমাকে কেউ প্লিজ সাহায্য করুন।
by
amr o ai prblm.. Kmne j thik hobe allah janen
by
Alhamdulillah.. Apnar problem ki thik hoyeche amol korar pore

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মনের ভয়ের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের দুর্বলতা, তাঁর প্রতি আনুগত্য ও তাওয়াক্কুল-ভরসা কমে যাওয়া। 

কারণ আল্লাহ বলেছেন-
أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ 
‘‘মনে রেখো যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে , না তারা চিন্তান্বিত হবে।” 
(সূরা ইউনুস ৬২ ) 

সুতরাং আপনার প্রথম কাজ হল, আল্লাহর উপর ভরসা করা। 
আল্লাহ বলেছেন–
وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ 
‘‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” 
(সূরা তালাক ৩)

★যিকির না করার কারনে কলব মরে যায়।
কলব মরে গেলেও ভয় লাগতে পারে।
বেশি বেশি যিকির করতে হবে,কুরআন তেলাওয়াত করতে হবে।
তাহলে ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা থাকবেনা। 
,
কিছু দোয়া রয়েছে। এগুলো বেশি করে বিশেষভাবে ভয়ের মুহূর্তে ও যথাসময়ে পড়লে উপকার পাওয়া যাবে। এতে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হবে, তাওয়াক্কুল-ভরসা বাড়বে ও ধীরে ধীরে মনের ভয়ও দূর হবে, ইনশাআল্লাহ।

★ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বিপদাপদকালে এই দোয়া পাঠ করতেন। 

 لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَرَبُّ الْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আযিমুল হালিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আযিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদ্বি ও রাব্বুল আরশিল কারিম।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৩৪৬)

দোয়াটির অর্থঃ ‘‘মহান ও মহা-ধৈর্যশীল আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। মহান আরশের রব ‘আল্লাহ’ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আসমানসূমহ ও জমিনের রব এবং মহান আরশের রব ‘আল্লাহ’ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।”

ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদাপদকালে উক্ত দোয়া বলতেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৪৬)

সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন, এটি একটি মহান হাদিস। এ হাদিসটিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। বিপদাপদের ভয় ও বড় বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে এ দোয়াটি বার বার আওড়ানো উচিত। তাবারী রহ. বলেন, সলফে সালেহীনগণ এ দোয়াটি দিয়ে দোয়া করতেন। তাঁরা এটিকে বিপদাপদ মুক্তির দোয়া আখ্যায়িত করতেন।
,
★উসমান ইবনে আফ্ফান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার এই দোয়াটি পাঠ করবে, কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।’ 

 بِسْمِ اللّهِ الَّذِيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِه شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيمُ

‘বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামাই ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।’
(তিরমিজি, হাদিস নম্বর : ৩৩৮৮)

দোয়াটির অর্থঃ ‘‘আল্লাহর নামে, যার নামের বরকতে  আসমান ও জমীনের কোন কিছুই কোন ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।”

উসমান ইবনে আফ্ফান রাযি. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন বান্দা প্রতিদিন সকালে ও প্রতি রাতের সন্ধ্যায় তিনবার করে এই দোয়াটি পাঠ করলে কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। (তিরমিযী,হাদীস নং ৩৩৮৮)

اَللّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِيْ نُحُوْرِهِمْ وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ  

অর্থাৎ ‘‘ হে আল্লাহ! আমরা তোমাকেই তাদের মুখোমুখী করছি এবং তাদের অনিষ্টতা থেকে তোমারই কাছে আশ্রয় চাচ্ছি ।”

আবু মুসা আল-আশআরী রাযি.থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সম্প্রদায় দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা করতেন তখন দোয়া টি বলতেন (আবূদাউদ,হাদীস নং ১৫৩৭)

  لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِيْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ 

অর্থাৎ ‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তার কোন শরীক নাই, সার্বভৌমত্ব তারই, সব প্রশংসা তারই জন্য, তিনিই জীবন ও মৃত্যু দান করেন আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান ।”

আবু যার রাযি. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর দুই পা ভাঁজ অবস্থায় কারো সাথে কথা বলার পূর্বে দশ বার দোয়াটি বলে,তার আমলনামায় দশটি নেকী লেখা হয়, দশটি গুনাহ বিলুপ্ত করা হয় এবং দশগুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। সে ঐ দিন সব রকমের বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে, শয়তানের ধোঁকা থেকে তাকে পাহারা দেয়া হবে এবং ঐ দিন শিরক ছাড়া অন্য কোন গুনাহ তাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারবে না।(তিরমিযী,হাদীস নং  ৩৪৭৪)
,
★বেশি বেশি যিকির,কুরআন তেলাওয়াত করুন,পরিপূর্ণ ভাবে দ্বীন মানুন,আল্লাহর উপর ভরসা করুন,উপরে উল্লেখিত আমল ঠিক ঠাকভাবে আদায় করুন,ইনশাআল্লাহ ভয় কেটে যাবে।
মানসিক ডাক্তারকেও দেখাতে পারেন।

আল্লাহ সহায় হোন।
আমিন।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...