নিজের বউকে উঠিয়ে আনতে হলে অভিভাবক ছাড়া যাওয়া যাবে না এটা নিয়ে আইনের বা ইসলামের কোনো বাধ্যবাধকতা কি রয়েছে?
আসসালামু আলাইকুম, দুঃখিত সঙ্গত কারনে নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখার জন্যে। বিস্তারিত শুনলে হয়ত সবাই বিষয়টি বুঝতে পারবেন।
আমি বাংলাদেশের স্বনামধম্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেছি, ছোট থেকেই পড়াশোনাতে ভালো থাকায় মেয়েদের থেকে অনেকটাই দূরে থাকতাম, আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় নি। এদিকে দ্বীনের বুঝ আসার পর থেকে নজরের হেফাজত করা শুরু করি তখন থেকেই বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারি। প্রধান কারনই ছিল একাকীত্ব আর নিঃসঙ্গতা দূর করা। তাই মা বাবাকে অনেক বুঝাতে থাকি, এক পর্যায়ে তারা রাজি হলেও পর্দাশীল দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করতে দিবে না তাই আমি অনেকটা জোর করে একা একাই গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ বিয়ে করি ফেলি যদিও বিয়েতে আমার বাবা চাচা দাদা সহ ৮ জন উপস্থিত ছিল। আমার কথা ছিল যতদিন না আমার ইনকামের কোনো ব্যবস্থা না হয় শুধু কাবিন করে রাখব যদিও আমার অভিভাবকরা বলে আসছিল যে আমি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাওয়ার পরে উঠিয়ে আনবে। উল্লেখ্য বিয়ের কাবিন ছিল ৫ লাখ কিন্তু আমি বিয়ের আগেই এমনকি বিয়ের রাতেও বলেছিলাম আমার সামর্থ্য অনুযায়ী দেন মোহর পরিশোধ করবে, তারাও এতে রাজি হয়েছিল, এখন বউ বলে পুরো ৫ লাখই পরিশোধ করতে হবে। আমি পরিবার সহ ঢাকায় থাকি আর উনি উনার বাবার বাড়ি ভৈরব এ থাকে। আমি নিজেই এখনো পড়াশোনা করি এত টাকা কই থেকে শোধ করব? মা-বাবা র পছন্দে বিয়ে না করাতে বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে আমার পরিবারের কেউই যাতায়াত করে নি, শুধু আমিই যাওয়া আসা করছিলাম। এমনকি আমার পরিবার তাদের সাথে কোনো যোগাযোগও করে না। আমার টিউশনের জমানো টাকা দিয়ে বিয়ের সব খরচ সহ গত ৩-৪ মাস টুকটাক খরচ দেই এর পরে টাকা সব শেষ হতেই আমার পরিবার আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। এদিকে আমার বউ যেহুতু ডিপ্লোমা নার্সিং শেষ করেছে তাই এখন জেদ করতেছে চাকরি করবে কিন্তু আমি অনুমতি দেই নি, তাও সে অনড় যে চাকরি করবেই তাই আমিও বলেছি আমার অনুমতি ছাড়া চাকরিতে যেদিন যোগ দিবে সেদিন থেকেই ৩ ত্বালাক পতিত হবে তার উপরে এতকিছুর পরেও সে বলে চাকরি করবেই। কারন বিয়ের আগেই দুজনের মাঝে এ ব্যাপারে কথা হয়েছিল যে নার্সিং এর চাকরি করা যাবে না, করলেও অন্য কিছু যেমন মেয়েদের টিউশন করানো। যখন টাকা ছিল তখনই আমি বউকে বলে আসতেছি যে ঢাকায় বাসা নিব, আমার সমস্যা হচ্ছে বউ ছাড়া এতদূর একা থাকতে। তখন বউ সহ তাদের বাড়ির সবাই বলেছিল যে আমি যদি ইনকামের কোনো ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে অভিভাবক না আসলেও তারা তাদের মেয়েকে আমার হাতে দিয়ে দিবে। গত একমাস হল টিউশন করানো শুরু করেছি, এখন বউকে উঠিয়ে আনার কথা বললে তাদের কথার সুর পালটে যায়। এখন বলে অভিভাবক ছাড়া মেয়ে দিবে না, তাহলে এতদিন কেন আমাকে মিথ্যা আশা দেখানো হইল? আমার বউকে আমার কাছে রাখব এতেও কেন এত বাধা বিপত্তি? আমি তো কাজি সহ দুই পরিবারের উপস্থিতিতেই বিয়ে করেছি তাহলে কেন এখন আবার অভিভাবক আনার অজুহাত দেখায়? এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি? আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি তাদের বুঝানোর কিন্তু তাতেও কেউই রাজি হচ্ছে না।
আমার অভিভাবককে এরপরেও বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে আমি যদি সংসার চালাতে পারি তাদের কি সমস্যা উঠিয়ে আনতে কিন্তু তাদের সেই জেদ, আরো ২-৩ বছর পরে উঠিয়ে আনবে এর আগে তারা শ্বশুরবাড়িতে যাবেও না। আমার সেমিস্টার ফাইনাল এক্সাম একটা খারাপ হওয়াতে রাগে বউকে বলছিলাম যে তাকে ঢাকা এনে মারব, সেই কল স্ক্রিন রেকর্ড করে সবাইকে শুনাইছে এবং এটাই অজুহাত হিসেবে দেখায় যে অভিভাবক ছাড়া নিয়ে আসলে আমি নাকি তাকে মেরে ফেলব। রাগে মানুষ কতকিছুই বলে, আমার এক্সাম খারাপ হওয়ায় ওসব কথা বলছিলাম পরে সরি বলছি মাফও চাইছি এমনকি বলছি যদি ঢাকায় আসার পরে তার সাথে কিছু হয় সে যা খুশি তাই করুক সমস্যা নাই এর পরেও সে অনড় যে অভিভাবক ছাড়া আসবেই না। বিয়ে করেছি আমি, তাছাড়া আমি প্রাপ্ত বয়স্ক তাই আমার অভিভাবক আমি নিজে এখানে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না তাও কেন আমার বউ আমি উঠিয়ে আনতে পারব না? এদিকে বউ ও তার পরিবার এক মাস ধরে কোনো যোগাযোগ করে না, বউ আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এসবের কারনে মানসিকভাবেও অনেক বিপর্যস্ত আমি, এমনকি আত্মহত্যার চিন্তাও কয়েকবার করেছিলাম। বারবার মনে হয় আমি মরে গেলেই সব শেষ।