ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। আমরা এভাবেও বলতে পারি যে, পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.
অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০
হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.
কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮
,
আরো জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ক)
কন্যা সন্তানের নাম ওয়াজিফা রাখা যাবে।
وَظِيفَة ج وَظَائِف [وظف]
[ওয়াযীফাহ] শব্দের অর্থঃ-
চাকুরি
পদ
কাজ
কর্ম
কর্তব্য
দায়িত্ব
ভাতা
খ)
فَاتِحَة ج فَوَاتِح [فتح]
[ফাতিহাহ]
সূচনা
আরম্ভ
শুরু
সূত্রপাত
ভূমিকা
মুখবন্ধ
উপক্রমণিকা।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ওয়াজিফা ফাতিহা এটা ফুল নেম হিসেবে রাখা যাবে।
এক্ষেত্রে অর্থ দাঁড়ায়ঃ-
কর্তব্য আরম্ভ।
(০২)
ক)
আপনার মামার অধিকাংশ ইনকাম তো ঘুষের টাকা নয়।
সুতরাং বিষয়টি এমনই হলে তার এসব খাবার খাওয়া যাবে।
খ)
প্রশ্নের বিবরন মতে যতটুকু বুঝা যায় যে আপনার মামার অধিকাংশ ইনকাম হালাল।
সুতরাং বিষয়টি এমনই হলে, উক্ত রিং আপনি ইউজ করতে পারবেন।
অথবা ঐ রিং ভেঙে আপনি অন্য কোনো গহনা বানিয়ে ইউজ করতে পারবেন।
(০৩)
ক,
খ,
গ,
এক্ষেত্রে উক্ত গহনা সহ আপনার মায়ের সমূদয় সম্পত্তি ২০ ভাগ করা হবে।
আপনার বাবা চার ভাগের এক ভাগ হিসেবে ৫ ভাগ সম্পদ পাবে।
আপনারা তিন বোন প্রত্যেকে তিন ভাগ করে (৩+৩+৩) মোট ৯ ভাগ পাবেন।
আপনার ভাই ৬ ভাগ পাবে।
(৫+৯+৬=২০)
★আপনার সৎ মায়ের ১ মেয়ে ১ ছেলে। এরা আপনার নিজের মায়ের ঐ স্বর্নের জিনিসের ভাগ পাবেনা।
আপনার নিজের মায়ের রেখে যাওয়া অন্য কোনো সম্পদেরও তারা ভাগ পাবেনা।
(০৪)
প্রথম সন্তান কন্যা হলে বিশেষ কোনো ফজিলত লাভের কথা কুরআন হাদিসের কোথাও বর্ণিত হয়নি। তবে কন্যা সন্তানের জন্মকে কুরআনে সুসংবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالْأُنْثَى ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ (٥٨) يَتَوَارَى مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ أَيُمْسِكُهُ عَلَى هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ أَلَا سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ
‘আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়েছে, সে দুঃখে সে কওম থেকে আত্মগোপন করে। আপমান সত্ত্বেও কি একে রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে ফেলবে? জেনে রেখ, তারা যা ফয়সালা করে, তা কতই না মন্দ!’ [সূরা নাহল, আয়াত: ৫৮-৫৯]
তাছাড়া কন্যা সন্তান লালন পালনের অনেক ফজিলতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে,
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করনে, যার গৃহে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করল,অতঃপর সে ঐ কন্যাকে কস্ঠ্ও দেয়নি,তার উপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার উপর প্রধান্য দেয়নি,তাহলে ঐ কন্যার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবশে করাবেন।(মুসনাদে আহমদ ১;২২৩)
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,যে ব্যাক্তি দুইটি মেয়েকে বয়ঃপ্রাপ্ত হ্ওয়া পর্যন্ত লালন পালন করল সে কিয়ামতের দিন এরূপ অবস্থায় উঠবে যে আমি আর সে এরকম মিলিত অবস্থায় থাকব,এই বলে তিনি স্বীয় আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে দেখালেন।(মুসলিম শরীফ)
রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘যে মুসলিমের দুইটি কন্যা সন্তান আছে এবং সে তাদেরকে উত্তম সাহচর্য দান করে তারা তাকে বেহেশতে দাখিল করবে।’ [আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৭৭]
আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘যার তিনটি কন্যা সন্তান আছে এবং সে তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে তাদের ব্যয়ভার বহন করে এবং তাদের সাথে দয়ার্দ্র ব্যবহার করে, তার জন্য বেহেশত অবধারিত হয়ে যায়। লোকজনের মধ্য থেকে একজন বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কারো যদি দুটি কন্যা সন্তান থাকে? তিনি বলেনঃ দুইটি কন্যা সন্তান হলেও।’ [আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৭৮]