আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

–1 vote
236 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (32 points)
আমার বাচ্চার বয়স যখন দুই মাস তখন আমি বাবার বাড়ি থাকাকালীন অবস্থায় টাকা চাওয়ায় আমার স্বামীর সাথে ঝগড়া হয়। তা মোবাইলের ম্যাসেঞ্জারে দীর্ঘায়িত হতে থাকে। এক সময় সে রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে ইংরেজিতে divorce divorce divorce লিখে ম্যাসেজ পাঠায়।
যেহেতু সে ইংরেজিতে লিখেছে এটা নিয়ে আমি অথবা আমার স্বামী কেউই তেমন ভাবি নাই।
তার বিবৃতি সে আমাকে ভয় দেখানোর উদ্দ্যেশ্যে এভাবে লিখছে কিন্তু তালাক হবে এটা ভেবে নয়।

পরবর্তী সময়ে আমরা আবার ঝগড়া মিটমাট করে আমি স্বামীর বাড়ি চলে আসি।

কিন্তু তারপরও আমাদের ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো।

এবং তিনি প্রায় সময়ই, তোরে আমি রাখবো না, বের হয়ে যা, বাপের বাড়ি চলে যা, এধরনের কথা বলতেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আমি ইন্টারনেটে একজন শায়খের বয়ান শুনে জানতে পারি এধরনের কথায় ইশারায় তালাক হয়।
লিখিতভাবে দিলেও তালাক হয়।

জানার পর থেকে আমি আল্লাহর শাস্তির ভয়ে ভীত হয়ে চিন্তিত হয়ে পরি।

আমি বর্তমানে বাবার বাড়ি আছে। রমজানে উনার সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় উনি আমাকে বের হয়ে যেতে বলেন আমিও চলে আসি।

তারপরও আমি তাকে এগুলা বুঝানোর চেষ্টা করি এবং ভালো কোনো মুফতির কাছে জানতে চাইতে অনুরোধ করি।
তিনি অস্বীকৃতি জানালে আমি নিজে যোগাযোগের চেষ্টা করি। উত্তর নেগেটিভ আসে এবং এর আরো যাচাইয়ের জন্য চেষ্টা করতে থাকি কারন আমি যেভাবে জানতে চেয়েছিলাম তাতে সব কিছু বর্বণা করি নি।


এমতাবস্থায় আমার স্বামী আমাকে ফোন করে বলেন তিনি খুব অসুস্থ মেয়েটাকে নিয়ে আমি যেনো চলে আসি। আমি আমার বোনকে নিয়ে তার বাড়ি যাই। যাওয়ার পর আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি এবং ভালো ফতোয়া জানার জন্য অনুরোধ করি।
তিনি আমাকে কাউকে জানাতে না করেন। আমার সাথে শারিরীক সম্পর্কের আহ্বান জানায়। কিন্তু আমি সঠিক ফয়সালা না জানা পর্যন্ত কিছু করতে অস্বীকৃতি জানাই।

তাতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে যান।
এমতবস্থায় আমরা দুই জন দুই ঘরে রাত্রি যাপন করি।

সকালে ও যখন তিনি আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন তখনও আমি অস্বীকৃতি জানাই। এমন সময় তার বোন আমাকে ফোন করেন, আমাকে ফোনে কথা বলতে দেখে রেগে যান এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আর বলেন, সবাই কে স্বাক্ষী রাখতেছিস? তোর তালাক দরকার তো? যা তোরে দিলাম তালাক। এখন বিদায় হ। এক্ষুনি বের হয়ে যা।

তো আমি রেডি হয়ে চলে আসার সময় তাকে দোকানের লেনদেন প্রসঙ্গে কথা বললে তখনো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে আমি তাকে বলি এভাবে যাওয়া আসা করে কি হবে? সঠিকভাবে একটা ফয়সালা দিলেই তো হয়।
তখনো গালিগালাজ করে বলেন, যা তোরে দ্বিতীয় তালাকও দিয়ে দিলাম। তখন আমি বললাম শেষটুকু আর আটকে রাখলা কেনো? তখন তিনি বললেন, যা তোকে শেষ তালাক টাও দিয়ে দিলাম। এখন বিদায় হ।

এখন আমার স্বামী বুঝতে পারতেছে সে কি করবে।
সে বিভিন্ন শায়খদের বয়নে দেখছে তিন তালাক দিলেও তা এক তালাক বলে গন্য হয়। এবং উনার উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে ভয় দেখানো এবং শাস্তি দেয়া। তিনি জানতেন তিন তালাক দিলে শেষ হয়ে যায় সব। আমিও যে হারাম হয়ে যাবো তা তিনি জানতেন না। তার ভাষ্য, এমন অবস্থায় আমি অনুতপ্ত হলে তিনি আমাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনবে।আমি হারাম হয়ে যাবো জানলে তিনি এ কাজ করতেন না।
আর তখন আমার ঋতুকাল চলছিলো।

আমার স্বামী তার কাজের জন্য অনুতপ্ত। পুনরায় তিনি সব শুরু করতে চান।

এখন আমার জিজ্ঞাসা

একবারে তিন তালাক কি এক তালাক বলে গণ্য হবে?
এক্ষেত্রে আমার জন্য কি ইদ্দতকাল প্রযোজ্য?

ইদ্দতকাল যদি প্রযোজ্য হয় তবে আমার উপর তালাক কি পতিত হবে?

ঋতুকাল থাকা অবস্থায় কি তালাক প্রযোজ্য হবে? (আমার স্বামী তালাক বলার সময় আমি ঋতুবতী ছিলাম। দ্বিতীয় ঋতুর সময়কাল আসতে এখনো ১৫ দিন বাকী আছে)

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান আল-ইনসাফ(৯৫) গ্রন্থে লিখেন,
হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর পর থেকে মানুষের মধ্যে তাকলীদে শাখসীর সূচনা হয়।এবং এ সময় এটা ওয়াজিব ছিলো।

যেহেতু তাকলীদের দু'টি শাখার মধ্যে তাকলীদে গায়রে শাখসী ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে।এজন্য এখন কুরআন হাদীসে ঘোষিত ফরয তাকলীদ শুধুমাত্র তাকলীদে শাখসীতেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।এবং সবার জন্য এটা ওয়াজিব হয়ে গেছে।(জাওয়াহিরুল ফিকহ-২/২৪) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1936


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক সাথে তিন তালাক দ্বারা তিন তালাত পতিত হওয়ার সাথে সাথে যেহেতু এক তালাক পতিত হওয়ার বিষয়টাও আলোচিত। কিন্তু সমস্ত উম্মাহর ঐক্যর জন্য কোনো একটিকে গ্রহণ করে নেওয়া বাঞ্চনীয়। হয়তো তিন তালাকে তিন তালাক বা তিন তালাকে এক তালাক। যে কোনো একটিকেই বেচে নিতে হবে।সর্বক্ষেত্রে, সবমসময়। হানাফি মাযহাব দলীল প্রমাণাদির ভিত্তিতে যেহেতু তিন তালাকে তিন তালাকের বিধানকে যথেষ্ট শক্তিশালী বিবেচনা করেছে, তাই এখন তিন তালাকে তিন তালাকই পতিত হবে।
বিশেষ বিবেচনা বা পরিবেশ পরিস্থিতির প্রতি লক্ষ্য করে তিন তালাকে এক তালাক গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নাই।বরং সর্বদা সর্বক্ষেত্রে তিন তালাকে তিন তালাকই পতিত হবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/222


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নের সমস্ত বিবরণ আমরা পড়েছি, সমস্ত বিবরণ পড়ে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, আপনার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে। এখন শরয়ী হালালা ব্যতিত আপনারা স্বামী স্ত্রী আর একত্রিত হতে পারবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...