আমার বাচ্চার বয়স যখন দুই মাস তখন আমি বাবার বাড়ি থাকাকালীন অবস্থায় টাকা চাওয়ায় আমার স্বামীর সাথে ঝগড়া হয়। তা মোবাইলের ম্যাসেঞ্জারে দীর্ঘায়িত হতে থাকে। এক সময় সে রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে ইংরেজিতে divorce divorce divorce লিখে ম্যাসেজ পাঠায়।
যেহেতু সে ইংরেজিতে লিখেছে এটা নিয়ে আমি অথবা আমার স্বামী কেউই তেমন ভাবি নাই।
তার বিবৃতি সে আমাকে ভয় দেখানোর উদ্দ্যেশ্যে এভাবে লিখছে কিন্তু তালাক হবে এটা ভেবে নয়।
পরবর্তী সময়ে আমরা আবার ঝগড়া মিটমাট করে আমি স্বামীর বাড়ি চলে আসি।
কিন্তু তারপরও আমাদের ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো।
এবং তিনি প্রায় সময়ই, তোরে আমি রাখবো না, বের হয়ে যা, বাপের বাড়ি চলে যা, এধরনের কথা বলতেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আমি ইন্টারনেটে একজন শায়খের বয়ান শুনে জানতে পারি এধরনের কথায় ইশারায় তালাক হয়।
লিখিতভাবে দিলেও তালাক হয়।
জানার পর থেকে আমি আল্লাহর শাস্তির ভয়ে ভীত হয়ে চিন্তিত হয়ে পরি।
আমি বর্তমানে বাবার বাড়ি আছে। রমজানে উনার সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় উনি আমাকে বের হয়ে যেতে বলেন আমিও চলে আসি।
তারপরও আমি তাকে এগুলা বুঝানোর চেষ্টা করি এবং ভালো কোনো মুফতির কাছে জানতে চাইতে অনুরোধ করি।
তিনি অস্বীকৃতি জানালে আমি নিজে যোগাযোগের চেষ্টা করি। উত্তর নেগেটিভ আসে এবং এর আরো যাচাইয়ের জন্য চেষ্টা করতে থাকি কারন আমি যেভাবে জানতে চেয়েছিলাম তাতে সব কিছু বর্বণা করি নি।
এমতাবস্থায় আমার স্বামী আমাকে ফোন করে বলেন তিনি খুব অসুস্থ মেয়েটাকে নিয়ে আমি যেনো চলে আসি। আমি আমার বোনকে নিয়ে তার বাড়ি যাই। যাওয়ার পর আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি এবং ভালো ফতোয়া জানার জন্য অনুরোধ করি।
তিনি আমাকে কাউকে জানাতে না করেন। আমার সাথে শারিরীক সম্পর্কের আহ্বান জানায়। কিন্তু আমি সঠিক ফয়সালা না জানা পর্যন্ত কিছু করতে অস্বীকৃতি জানাই।
তাতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে যান।
এমতবস্থায় আমরা দুই জন দুই ঘরে রাত্রি যাপন করি।
সকালে ও যখন তিনি আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন তখনও আমি অস্বীকৃতি জানাই। এমন সময় তার বোন আমাকে ফোন করেন, আমাকে ফোনে কথা বলতে দেখে রেগে যান এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আর বলেন, সবাই কে স্বাক্ষী রাখতেছিস? তোর তালাক দরকার তো? যা তোরে দিলাম তালাক। এখন বিদায় হ। এক্ষুনি বের হয়ে যা।
তো আমি রেডি হয়ে চলে আসার সময় তাকে দোকানের লেনদেন প্রসঙ্গে কথা বললে তখনো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে আমি তাকে বলি এভাবে যাওয়া আসা করে কি হবে? সঠিকভাবে একটা ফয়সালা দিলেই তো হয়।
তখনো গালিগালাজ করে বলেন, যা তোরে দ্বিতীয় তালাকও দিয়ে দিলাম। তখন আমি বললাম শেষটুকু আর আটকে রাখলা কেনো? তখন তিনি বললেন, যা তোকে শেষ তালাক টাও দিয়ে দিলাম। এখন বিদায় হ।
এখন আমার স্বামী বুঝতে পারতেছে সে কি করবে।
সে বিভিন্ন শায়খদের বয়নে দেখছে তিন তালাক দিলেও তা এক তালাক বলে গন্য হয়। এবং উনার উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে ভয় দেখানো এবং শাস্তি দেয়া। তিনি জানতেন তিন তালাক দিলে শেষ হয়ে যায় সব। আমিও যে হারাম হয়ে যাবো তা তিনি জানতেন না। তার ভাষ্য, এমন অবস্থায় আমি অনুতপ্ত হলে তিনি আমাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনবে।আমি হারাম হয়ে যাবো জানলে তিনি এ কাজ করতেন না।
আর তখন আমার ঋতুকাল চলছিলো।
আমার স্বামী তার কাজের জন্য অনুতপ্ত। পুনরায় তিনি সব শুরু করতে চান।
এখন আমার জিজ্ঞাসা
একবারে তিন তালাক কি এক তালাক বলে গণ্য হবে?
এক্ষেত্রে আমার জন্য কি ইদ্দতকাল প্রযোজ্য?
ইদ্দতকাল যদি প্রযোজ্য হয় তবে আমার উপর তালাক কি পতিত হবে?
ঋতুকাল থাকা অবস্থায় কি তালাক প্রযোজ্য হবে? (আমার স্বামী তালাক বলার সময় আমি ঋতুবতী ছিলাম। দ্বিতীয় ঋতুর সময়কাল আসতে এখনো ১৫ দিন বাকী আছে)