আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
186 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
edited by

১. কারোর প্রথম স্ত্রীর যদি ছেলে সন্তান না হয় তবে তার জন্য কি দ্বিতীয় বিয়ে করা উচিত হবে?

২. স্ত্রীর অধিকার কি শুধু সহবাস আর ভরণপোষনের মাঝেই সীমাবদ্ধ? কেও যদি প্রথম স্ত্রীর ছেলে বাচ্চা হয় না বলে তার সাথে কথা না বলে তাহলে কি তার গুনাহ হবে না?

৩. প্রথম আর দ্বিতীয় স্ত্রীর শুধু ভরণপোষণের ব্যবস্থা আর সহবাসের ব্যবস্থা করলেই কি স্বামীর দায়িত্ব শেষ? সে যদি এমন কাজ করে যার মাধ্যমে এটা প্রকাশ পায় যে সে প্রথম স্ত্রীকে ভালোবাসে না কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীকে অধিক ভালোবাসে যদিও তাদেরকে সমান ভরনপোষণ আর সহবাসের অধিকার আদায় করে, তবুও ২য় স্ত্রীকে বেশি সময় দেওয়া, ২য় স্ত্রীকে যেকোনো বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া ইত্যাদি এগুলো কি ইসলাম সমর্থিত? 

৪. ২য় স্ত্রীর প্রতি যদি ঝোঁক বেশি থাকার সম্ভাবনা থাকে তাহলে কি ২য় বিয়ে করা নাজায়েজ হবে (এখানে মনের কথা বলা হচ্ছে না) ? যদিও ভরণপোষণ এবং রাতযাপন সঠিকমতো থাকে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে ,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع 
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক। 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না। 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান। 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সে ২য় বিবাহ করতে পারবে।

তবে শর্ত হলো উভয় স্ত্রীর মাঝে যাবতীয় খরচ,ভরনপোষণ, আর রাত যাপনের ক্ষেত্রে সমতা কায়েম করতে হবে।

(০২)
স্ত্রীর অধিকার শুধু সহবাস আর ভরণপোষনের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়।

তবে উভয় স্ত্রীর মাঝে যাবতীয় খরচ,ভরনপোষণ, আর রাত যাপনের ক্ষেত্রে সমতা কায়েম করা ২য় বিবাহের জন্য শর্ত। 

কেউ যদি প্রথম স্ত্রীর ছেলে বাচ্চা হয় না বলে তার সাথে কথা না বলে, তাহলে তার অবশ্যই গুনাহ হবে।
এমনিতেই এক মুসলিম আরেক মুসলিমের মাঝেই তো তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা হারাম।

সুতরাং এক স্ত্রীর সাথে কথা না বলা কোনো ভাবেই জায়েজ হবেনা।

(০৩)
সময় তো একই দিতে হবে।
যেমনটি উপর উল্লেখ রয়েছে যে রাত্রিযাপন এর ক্ষেত্রেও সমতা রাখতে হবে।

সুতরাং ২য় স্ত্রীকে বেশি সময় দেওয়া, ২য় স্ত্রীকে যেকোনো বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া ইত্যাদি এগুলো ইসলাম সমর্থিত নয়।

তবে মুহাব্বত যেহেতু মনের বিষয়, তাই কোনো এক স্ত্রীর দিকে মুহাব্বত প্রাধান্যতা লাভ করলে সেটি দোষনীয় নয় 

(০৪)
ঝোক দ্বারা যদি মুহাব্বত উদ্দেশ্য হয়,সেক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি মানতে পারলে ২য় বিবাহ নাজায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
ইসলামে চার বিয়ে করা কি সুন্নত না মুবাহ?
by (574,050 points)
শর্ত সাপেক্ষে জায়েজ।
সুতরাং শর্ত পাওয়া গেলে মুবাহ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...