আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
216 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
১. আমার মা সারাদিন ঘরের বাহিরে কাজ করে বেড়ায়। মূলত আমার আব্বুই আমার মা কে এসব কাজ করতে বাধ্য করে। আমার মায়ের প্রতি অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয়। এতে মায়ের পর্দা লঙ্ঘন হয়। আমার মা চায় আমিও ঘরের বাহিরে কাজ করে তাকে সাহায্য করি। যতটুকু পর্দার ভিতর থেকে করা যায়, আমার সাধ্যমতো করি। কিন্ত বাহিরে পুরুষ মানুষ থাকায় মাঝেমধ্যে পর্দা লঙ্ঘন হয়েই যায়। সে জন্য চেষ্টা করি ঘরের কাজে তাকে সাহায্য করার।
কিন্ত আমার মা সব সময়ই আমাকে কথা শুনায় যে "আমার কাজে সাহায্য করিস না,  বিয়ে করলে তো শ্বাশুড়ির কাজ ঠিকই করে দিবি। দেখিস তোর শ্বাশুড়ি তোকে অনেক কাজ করাবে। তোকে পান্তা ভাত খেতে দিবে" আরও নানান কথা যেগুলা একজন মানুষ তার জীবনে চায় না।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমার মায়ের এসব কথায় কি আসলেই আমার জীবন এরকম হবে, যেমন টা আমার মা বলে?
আমি জানি না, আমার মা এসব মন থেকে বলে কিনা! মনে হয় মন থেকেই বলে কারন বার বার ই উচ্চারণ করে এসব কথা!

আমি ফুল পর্দা করি। পুরুষ মানুষের সান্নিধ্যে যাই না, তাই তাকে বাহিরের কাজে সাহায্য করা হয় না। কিন্ত ঘরের কাজে সাহায্য করি আমি। আমার পর্দা করাটা হয়তো তিনি পছন্দ করছেন না। আমার কি করা উচিত বলে আপনারা মনে করেন?

২. আমার বাবা দান সদকা করা একদমই পছন্দ করেন না। তিনি চান না, আমরাও কেউ দান সদকা করি।  কিন্ত আমার মা, আমার আব্বুকে না জানিয়ে দান সদকা করেন।  মাঝে মাঝে আমার আব্বু জেনে গেলে অনেক রাগ করেন, এবং বাসার সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমার আব্বুর অপছন্দ সত্ত্বেও আমার আম্মু যে দান সদকা করেন, এতে আমার মায়ের গুনাহ হবে কিনা বা আমার মায়ের কি করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
গুনাহের কাজে মাতা পিতার আদেশ মানা জায়েজ নেই। 
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
বাহিরে পুরুষ মানুষ থাকায় মাঝে মধ্যে পর্দা লঙ্ঘন হয়েই যায়। সে জন্য চেষ্টা করি ঘরের কাজে তাকে সাহায্য করার।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বাহিরে কাজ করার সময় পর্দা লঙ্ঘন যেনো না হয়,সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবেন।

এক্ষেত্রে গায়রে মাহরাম পুরুষ আসলে প্রয়োজনে সেই সময় বাড়ির ভিতরে চলে আসবেন।
গায়রে মাহরাম পুরুষ চলে গেলে আবারো বাহিরে গিয়ে পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে মাকে সাহায্য করবেন।

বাহিরের কাজ বাড়ির ভিতর থেকে করা যায় কিনা,সেটিরও চেষ্টা করবেন।

তবে অবস্থা যদি এমন হয় যে বাহিরে কাজ করলে নিশ্চিত ভাবে আপনার পর্দা লঙ্ঘন হবেই,এ থেকে বাঁচার উপায় নেই,সেক্ষেত্রে আপনার মায়ের আদেশ মানবেননা।

তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়ার পাশাপাশি ধৈর্য ধারন করুন।

এক্ষেত্রে আপনার মায়ের বদ দুয়া কাজে লাগবেনা,ইনশাআল্লাহ। 

হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহঃ লিখেন,

ويلزم الإنسان طاعة والديه في غير المعصية وإن كانا فاسقين ، وهو ظاهر إطلاق أحمد ، وهذا فيما فيه منفعة لهما ولا ضرر ، فإن شق عليه ولم يضره : وجب ، وإلا فلا

গোনাহের কাজ ব্যতীত মুবাহ তথা বৈধ কাজে
মাতা পিতার আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।যদি তার ফাসিকও হয়।এটা তখন যখন তাতে মাতাপিতার ফায়দা থাকবে,এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।যদি সন্তানের উপর কষ্টদায়ক হয় তবে ক্ষতিকারক না হয়, তাহলে তখন মাতাপিতার আদেশ মান্য করা ওয়াজিব নয়।(আল-ফাতাওয়াল কুবরা-৫/৩৮১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
এক্ষেত্রে আপনার মাযে দান সদকাহ করেন,সেটি কার টাকা হতে?

যদি তাহা আপনার বাবার টাকা হয়,সেক্ষেত্রে এটি  আপনার মায়ের জন্য জায়েজ হচ্ছেনা,গুনাহ হবে।

আর যদি সেই টাকার আপনার মায়ের হয় বা আপনার বাবা আপনার মাকে একেবারে মালিক বানিয়ে দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে সেই টাকা হতে আপনার মা এভাবে দান সদকাহ করতে পারে,তাতে কোনো সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (19 points)
reshown by
আমার আম্মু গাছের ফলমূল মানুষদের দেন খাওয়ার জন্য যেটা আব্বু পছন্দ করে না। এই ফল গাছ আব্বুর টাকায় লাগানো কিন্ত জমি আমার আম্মুর! এখন এক্ষেত্রে ফলমূল দিতে পারবে না মানুষকে?
by (574,260 points)
না,এক্ষেত্রে আপনার বাবার অসম্মতিতে সেই গাছের ফলমুল আপনার মা মানুষদের দিতে পারবেননা।
by (574,260 points)

বিস্তারিত জানুনঃ- https://www.ifatwa.info/67286/?show=67286#q67286

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...