আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
180 views
in ওয়াসওয়াসা by (36 points)
আস'সালা মুআলাইকুম , আমাকে কি ওয়াসওয়াসার রোগী বলবে ?
গত দেড় বছর ধরে এই সমস্যার মধ্যে আছি , মাঝে মাঝে একটু ভালো হলেও কখনো কখোনো এত  অবস্হা খারাপ হয় যে নিজেকে পাগল মনে হয় !  আমার সমস্যা হলো প্রচন্ড তা*কের ওয়াসওয়াসা , গত দেড় বছর আগে প্রথম যখন জানতে পারলাম নারীরাও তা*ক দিতে পারে তখন থেকে এই সমস্যার শুরু , সমস্যার পরিমান এত বেশি যে আমার মুখ খুলতেও ভয় লাগে , শুধু মনে হয় তা*ক হয়ে গেলো কিনা , যেমন কয়েক টা ঘটনা বলি
১. কিছু দিন আগে এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম , তো একজন আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি শি*বের স্ত্রী কিনা ? আমি বললাম , হ্যাঁ , কিন্তু আমারা মনের মধ্যে অন্য  ওয়াসওয়াসা আসলো , এর পর যখন আমি পায়েস খাচ্ছিলাম তখন আমার বার বার মনে হচ্ছিল যে মনের মধ্যে আসা কখা মুখ দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে কিনা ! খাওয়ার সময় যে জিহ্বা নড়ছিলো তাতেই অন্তরে ভয়ের সৃষ্টি হচ্ছিল, বার বার নিজেকে বুঝাচ্ছিলাম আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হয়নি,
২. ইদানিং "এক, দুই " কোনো কারনে গনতে হলেও ওয়াসওয়াসা আসে , আগে মনে মনে বলে নেই যে আমার কোনো নিয়ত নাই ।
৩. হঠাৎ করে কেউ ডাক দিলে, অথবা কারো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে মনে মনে বলে নেই যে "আমার কোনো নিয়ত নাই" , "আমার কোনো নিয়ত নাই" এটা মনে মনে না বললেই অশান্তি শুরু হয়ে যায়, অথচ কথাটা হয়ত তা*কের সাথে কোনো সম্পর্ক নাই ।
৪. তা*ক অথবা ডি*র্স এই শব্দ গুলো কোথাও দেখলেও ভয় করে
৫. কোনো গান গাইতে ইচ্ছা করলে অথবা , কারো সাথে কথা বলার দরকার হলে মনে ওয়াসওয়াসা আসে যে এই গান গাইলে অথবা এই কথা বললে অথবা এই কাজ করলে তা*ক হবে  , তখন আবার মনে মনে বলে নেই যে "আমার কোনো নিয়ত নাই" কখনো এটা না বলতে পারলেই অশান্তি শুরু হয়ে যায় !

৬. অবস্হা এখন এত খারাপ হয়েছে যে একা থাকলে আমি দাঁতে দাঁত চেপে রাখতে হয়, না হলে মনে হয় মুখ দিয়ে কিছু বেড়িয়ে যাবে ।
৭. থুতু গেলার জন্য বা মুখ নাড়াতে যে জিহ্বা নড়ে এতেও আমার ভয় আসে ।

৮. আজকে টিভি তে কিছু একটা দেখছিলাম  , হঠাৎ আমার ছেলে টিভিতে একটা ছেলেকে দেখিয়ে বললো এটা ওর আব্বু , আমি মুখ বন্ধ ‌অবস্হায় শুধু "হুম" আওয়াজ করলাম , অথাৎ "হ্যাঁ" সূচক উত্তর দিলাম , কেনো দিলাম জানি না তবে পরমূহুর্ত্বে যখন হুস হলো আমারা ছেলে আবারও একি প্রশ্ন করলে তখন "না " বললাম এই ঘটনার মাধ্যমে কি তা*ক সম্ভব?
এভাবেই আমার দিন যাচ্ছে , কারো সাথে এগুলো শেয়ারও করতে পারি না কারন মনে হয় মানুষ আমাকে পাগল বলবে,

দুপুরে অথবা যখন একা থাকি তখন বেশি অশান্তি লাগে, ঘুম থেকে উঠলেই মাথার মধ্যে ঘুড়তে থাকে তা*ক হয় এমন কিছু বলেছি কিনা ,  সারাক্ষণ একটা অশান্তির মধ্যে থাকি ,
***আমার অবস্হা বিবেচনা করে আমাকে কি এই ফতোয়া দেওয়া যায় যে আমি সরাসরি তা*কের বাক্য বললেই সমস্যা হবে , তাহলে হয়তো একটু স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারতাম , কারন আমার তা*কের কোনো নিয়ত নাই , তাই আমি জ্ঞানতো কখোনো সরাসরি টা বলবো না ইং শা আল্লাহ , যত সমস্যা কেনায়া বাক্য নিয়ে ,
** "ছেড়ে " এই শব্দটাও আমি এড়িয়ে , এটা বাদে এই অর্থ বোঝানোর জন্য আমি অন্য শব্দ ব্যবহার করি , দেখেন কি পরিমান পাগল হয়ে গেছি আমি , ।
আমার আরেকটি প্রশ্ন , আমাকে কোন মাজহাব মানতে হবে ? আমি বাংলাদেশের মেয়ে তবে বর্তমানে বাহিরের দেশে আছি বিয়ের পর থেকে , এখানে মুফতি গন "আহলে হাদীস মতাদর্শ  অনুসরন করেন "  আমার এই ওয়াসওয়াসা রোগ শুরুর আগে যখন ইসলামে তা*কের মাসালা সম্পর্কে কোনো ধারনা ছিলো না তখন মনে করতাম শুধু ছেলেরা তা*ক দেওয়ার অধিকার রাখে তখন একবার দুষ্টুমি করে আমার স্বামীকে বলেছিলাম " ভালো না লাগলে দাও ছেড়ে দাও" সে বলেছিল " যাও চলে যাও" , এই সাইট থেকে ফতোয়া নিলে বলেছেন এতে তা*ক পতিত হয় গেছে, কিন্তু  আমি যেখানে বর্তমানে আছি ওনাদের থেকে ফতোয়া নিলে বলেছে স্বামীর নিয়ত না থাকলে কোনো সমস্যা হয়নি, স্বামীর নিয়ত ছিলোনা এবং এ বেপারে ধারনাও নেই এটা শিওর , এখন এ সমস্যার সমাধান কি ?  এই ঘটনার অনেক পড়ে কিছু দিন আগে আমার সন্তান হয়েছে । আমাকে উত্তম সমাধান দিন । ধন্যবাদ।
by (36 points)
***আমার অধিকার আছে কিনা এই বিষয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে, কারন আমার স্বামীর এসব বিষয়ে তেমন ধারনা নেই তবে আমি যখন তাকে বলেছিলাম কাবিন নামায় আমাকে অধিকার দেওয়া আছে তখন সে বলেছিলো সে care করে না , এতে কি আমি অধিকার পেয়েছি? সেখানে উল্লেখ্য আছে গায়ে হাত তুললে আমি অধিকার প্রাপ্ত হবো , তো একবার গায়ে হাত তুললে কি সারা জীবনের জন্য অধিকার প্রাপ্ত হবো? নাকি গায়ে হাত তুলার পরেও যদি মেনে নিয়ে সংসার করতে থাকি তাহলে আর অধিকার থাকবে না , আবার মারলে আবার অধিকার প্রাপ্ত হবো , আবারও যদি মেনে নেই আবারও অধিকার থাকবে না , এমন  হবে এক্ষেত্রে???

আর শেষের ঘটনাটি কিছুদিন আগে মনে পড়েছে !

উপরোক্ত প্রশ্ন করার মাধ্যমেও ওয়াসওয়াসা আসছে যে কোনো সমস্যা হয়ে গেলো কিনা ! 

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


উকবাহ ইবনু আ’মির রাযি. বলেন,

لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ الْمُوَسْوِسِ

‘ওয়াসওয়াসা সম্পন্ন (সন্দেহের বাতিকগ্রস্ত) ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না।’ 
(সহিহ বুখারী, অধ্যায় ৬৮)

চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তি ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলাটের দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাক গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।
(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি হলো, ওয়াসওয়াসার দরুন যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

প্রশ্নের বিবরন মতে বুঝা যাচ্ছে যে আপনি ওয়াসওয়াসার রুগী, আপনি কেনায়া বাক্য ও স্পষ্ট বাক্য,যেটিই বলেন,কোনোক্ষেত্রেই তালাক হবেনা। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত কোনো ছুরতেই তালাক হবেনা, কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 165 views
...