হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَأْمُرُنَا أَنْ نُخْرِجَ الصَّدَقَةَ مِنَ الَّذِي نُعِدُّ لِلْبَيْعِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ব্যবসায়ের জন্য তৈরি করা মালপত্রের যাকাত আদায়ের হুকুম দিতেন।
(আবূ দাঊদ ১৫৬২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৫৯৭।
عن الحسن فى رجل اشترى متاعا فحلت فيه الزكاة؟ فقال: يزكيه بقيمته يوم حلت (المصنف لابن أبى شيبة-6\526، رقم-10559)
সারমর্মঃ-
কোনো ব্যাক্তি ব্যবসায়ীক সামানা ক্রয় করেছে,তার উপর কি যাকাত আসবে? হাসান রহ: জবাবে বলেছেন যে সে যাকাত প্রদান করবে যাকাত প্রদানের মুল্য ধরে।
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো ঋণ যদি এত হয় যা বাদ দিলে তার কাছে নিসাব পরিমাণ যাকাতযোগ্য সম্পদ থাকে না তাহলে তার ওপর যাকাত ফরয নয়। (মুয়াত্তা মালেক ১০৭; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০০৩, ৭০৮৬, ৭০৮৯, ৭০৯০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৫৪৭-৫৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৩)
,
কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে যে, এই প্রসিদ্ধ মাসআলাটি সকল ঋণের ক্ষেত্রে নয়।
ঋণ দুই ধরনের হয়ে থাকে।
ক. প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য বাধ্য হয়ে যে ঋণ নেওয়া হয়।
খ. ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যে ঋণ নেওয়া হয়।
,
প্রথম প্রকারের ঋণ সম্পদ থেকে বাদ দিয়ে যাকাতের নিসাব বাকি থাকে কিনা তার হিসাব করতে হবে। নিসাব থাকলে যাকাত ফরয হবে, অন্যথায় নয়।
,
কিন্তু যে সকল ঋণ উন্নয়নের জন্য নেওয়া হয় যেমন কারখানা বানানো, কিংবা ভাড়া দেওয়া বা বিক্রি করার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং বানানো অথবা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিলে যাকাতের হিসাবের সময় সে ঋণ ধর্তব্য হবে না। অর্থাৎ এ ধরনের ঋণের কারণে যাকাত কম দেওয়া যাবে না।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৮৭)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ব্যাংক থেকে যে লোন নিয়েছেন,সেই ব্যাংক লোন ঋণের কোন প্রকারের?
সেই ঋণ যদি প্রথম প্রকারের হয়,তাহলে সেটা বাদ দিয়ে যদি আপনার নিকট নেসাব পরিমাণ মাল থাকে এবং একবৎসর পর্যন্ত আপনার কাছে থাকে তাহলে আপনার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
আর যদি দ্বিতীয় প্রকারের ঋণ হয়,তাহলে বিধান হলোঃ
আপনি ব্যাংক থেকে যে ঋণ নিয়েছেন, এর বছরান্তের আদায়যোগ্য কিস্তি ছাড়া যদি আপনার কাছে সাড়ে বায়ান্ন তোলার রূপার সমমূল্য টাকা বাকি থাকে, তাহলে আপনার উপর যাকাত আদায় করা আবশ্যক।
যেমন আপনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছেন তিন লাখ টাকা। ধরুন প্রতি মাসে যে টাকা লাভসহ ব্যাংকে পরিশোধ করেন, তার পরিমাণ হল, (ধরে নিন) ৫০ হাজার টাকা।
তাহলে বছর শেষে আপনার হাতে যে পরিমাণ টাকা বাকি থাকছে, তথা ২,৫০,০০০/= এর উপর যাকাত আদায় করতে হবে।
আপনার বাৎসরিক লোন বাবদ পরিশোধ কৃত টাকা ব্যতিত যত টাকা আপনার হাতে ঋণ নেয়া বাবদ অবশিষ্ট আছে, এর উপর আপনার যাকাত আদায় করতে হবে। কারণ দীর্ঘমেয়াদী ঋণ থাকা যাকাত আবশ্যক হবার জন্য প্রতিবন্ধক নয়।