আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (24 points)
০১) জনৈক হাবিবুল্লাহর অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে। মামলা করার দীর্ঘ ৪০(চল্লিশ) বছর পর উক্ত আত্মসাৎকৃত অর্থ পাওয়া গেছে। এখন যাকাতের হিসেবে দেখা যাচ্ছে প্রাপ্ত টাকা ও যাকাতের পরিমাণ সমান। তাহলে প্রাপ্ত টাকার পুরোটাই কি যাকাত হিসেবে দিয়ে দিতে হবে?

সম্পূরক প্রশ্ন: এই অর্থ যদি ৩০ (ত্রিশ) বছর পর পাওয়া যেত তাহলে কি বিগত ৩০ বছরের সমুদয় অনাদায়ী যাকাত অর্থাৎ প্রাপ্ত টাকার ৭৫% যাকাত দিয়ে দিতে হতো?

০২) অবৈধ বা নাজায়েজ ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। সেই ব্যবসায় টাকা লস গেছে। এখন সেই টাকা উদ্ধারের জন্য মামলা করা কি জায়েজ?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২
আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★অন্যকে যে টাকা কর্জ হিসেবে দেওয়া হয়েছে বা ব্যবসায়ী কোনো পণ্য বাকিতে বিক্রয় করেছে এই পাওনা টাকা পৃথকভাবে বা অন্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে মিলিতভাবে নিসাব পূর্ণ করলে তারও যাকাত দিতে হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১১১-৭১১৩,৭১২১,৭১২৩,৭১২৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৪৮৪-৪৮৬)

★পাওনা উসূল হওয়ার পর ওই টাকার যাকাত আদায় করা ফরয হয়। তার আগে আদায় করা জরুরি নয়, তবে আদায় করলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে।(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩৪৭, ১০৩৫৬)

★উপরোক্ত ক্ষেত্রে পাওনা উসূল হতে যদি কয়েক বছর সময় অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে উসুল হওয়ার পর বিগত সকল বছরের যাকাত আদায় করা ফরয হয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১১৬,৭১২৯,৭১৩১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩৪৬,১০৩৫৬)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
শরীয়তের বিধান হলো পাওনা টাকা উসূল হতে যদি কয়েক বছর সময় অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে উসুল হওয়ার পর বিগত সকল বছরের যাকাত আদায় করা ফরয হয়।

উল্লেখ্য, এখানে প্রাপ্ত টাকার পুরোটাই যাকাত হিসেবে দিতে হবেনা।
উদাহরণ স্বরুপ,
ধরুন রুপা হিসেবে যাকাতের নেসাব হলো ৪০ হাজার টাকা।
২০১৮ সালে তার পাওনা টাকা ছিলো ৪০ হাজার টাকা।
সে এই টাকা ২০৩০ সালে পেয়েছে।
এক্ষেত্রে সে হিসেবে করে বিগত সকল বছরের যাকাত আদায় করবে।
সে প্রথমে ঐ ৪০ হাজার টাকার শতকরা আড়াই পার্সেন্ট হিসেবে ২০১৮ সনের জন্য ১০০০ টাকা যাকাত দিতে।

২০১৯ সনে তার সেই এক হাজার টাকা মাইনাস হয়ে ৩৯ হাজার টাকা হবে।
এখন তো তার নেসাবই পূর্ণ নেই,তাই তাকে ২০১৯ সাল থেকে নিয়ে পরবর্তী বছর গুলোর আর যাকাত দিতে হবেনা।

হ্যাঁ তার যদি ঐ ঋনের টাকা ছাড়াও আরো অতিরিক্ত টাকা তার মালিকানায় থাকে,সেক্ষেত্রে তার যাকাত আদায় না করে থাকলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোন বছর কত টাকা মালিকানায় ছিলো,সেটি আনুমানিক হিসেব করে ঐ ঋনের টাকার যাহা উসুল হয়েছে,তার সাথে যোগ করে পূর্বের বছর গুলোরও যাকাত দিতে হবে।

(০২)
এখন সেই টাকা উদ্ধারের জন্য মামলা করা জায়েজ আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (24 points)
২নং উত্তর প্রসংগে: উপর্যুক্ত ক্ষেত্রে, ধরুন পাওনা টাকা ১০লক্ষ টাকা এবং তা এমন এক সময় পেল তাতে যাকাতের পরিমাণ পাওনা টাকার প্রায় সমান হয়ে গেল। সেক্ষেত্রে কি হবে? 
by (565,890 points)
এক্ষেত্রে কোনোভাবেই পুরোপুরি সমান হবেনা।
কেননা ১ম বছরের যাকাতের হিসাব বের করার পর ২য় বছরের যাকাতের হিসাব করতে গিয়ে ১ম বছরের যাকাতের টাকা মাইনাস হবে।

এভাবে মাইনাস হতে হয়ে এক পর্যায়ে সে আর নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক থাকবেনা।
সুতরাং সেক্ষেত্রে কিছু টাকা তার অবশিষ্ট থাকবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 159 views
...