আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
212 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম

হযরত কিছু প্রশ্ন জানার ছিলো

 

  1. ঈদের দিন সূর্যদয়ের পূর্বে কারো কাছে যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তবে তার উপর ফিতরা ওয়াজীব। আবার আর একটা হাদীসে দেখলাম,নর-নারী,স্বাধীন-গোলাম সবার উপর ই ফিতরা ওয়াজীব। ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না ফিতরা কি শুধুই নেসাবের মালিকদের ক্ষেত্রে ওয়াজীব হবে নাকি যাদের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই তাদের উপর ও ওয়াজীব হবে? বিস্তারিত জানতে চাই যেন বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যায়।
  2. ইসলামে শরিয়ত মোতাবেক আপনারা ব্যাংকে চাকরি করা হারাম বলেন অথচ সেই  ব্যাংকেই আপনারা আবার মাদ্রাসা মাসজিদের টাকা রাখেন বিষয়টা কেমন হয়ে গেলো না!? আপনাদের কথা হলো যে, ব্যাংকে সুদের লেনদেন হয় তাহলে আপনারা যে টাকা রাখেন সেগুলো যে ব্যাংক ওয়ালারা তাদের সুদী কারবারে ব্যবহার করে না তার কোন গ্যারান্টি আছে! যেখানে পুরা কারবারটাই সুদী সেখানে আপনারা কিভাবে টাকা রাখা জায়েজ হয়!? (এটা একটা ব্যাংকারের ভাষ্য। তাকে বুঝানো যায় এমন করে উত্তর দিলে ভাল হয়)

 

  1. কেউ যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে প্রথম রাকাতে ভুলে একটা সেজদা করে উঠে যায় অথবা দ্বিতীয় রাকাতে যদি একটি সেজদা করে বৈঠকে বসে যায় তাহলে তার নামাজের হুকুম কি?তার নামাজ শুদ্ধ করার পদ্ধতি কি?
  2. কেউ তারাবীর ২য় রাকাতে না বসে দাড়িয়ে গেলো এবং ৩য় রাকাতও পূর্ণ করল এমতবস্থায় তার হুকুম কি? অথবা কেউ তারাবীর নামাজ ভুলে ৪ রাকাত পড়ে ফেললো মধ্যখানে বৈঠক করেছে বা করে নাই তাহলে তার কত রাকাত হইছে?
  3. যাকাতের নির্ধারিত কিছু খাত আছে এবং এর একটি হুকুমও এমন যে,কাউকে মালিক বানিয়ে দেওয়া।তাহলে মানুষে যে মাদ্রাসায় যাকাতের টাকা দেয় সেখানে কাকে মালিক বানিয়ে দেওয়া হয়?মাদ্রাসাতো কোন মালিকানা নয়!
  4. বাবরী চুল রাখার ক্ষেত্রে অনেককে দেখা যায় যে,চুল লম্বা হয়ে যখন কানের উপরে এসে পরে তখন তারা কানের উপরে সেই অংশ কেটে ফেলে! এভাবে কানের উপরের অংশ কাটলে কি সুন্নত আদায় হবে?
  5. কারো কাছে শুধু সোনা আছে ৬ ভরি অথবা রুপা আছে ৪০ ভরি আর কোন টাকা নাই তাহলে তার যাকাতের হুকুম কি? অথবা টাকা আছে সামান্য হাত খরচের জন্য যেমন ২০০/৫০০ তাহলে তার যাকাতের হুকুম কি?
  6. কারো কাছে সোনা আছে ৪ ভরি,রুপা আছে ১০ ভরি,টাকা আছে ২০০০০ তাহলে এই মুহুর্তে সে কোনটার নেসাব ধরবে সোনার নাকি রুপার? আমরা জানি যে,নেসাব সোনারও আছে রুপারও আছে টাকারও আছে।তাহলে যাকাতের হিসাব করার সময় আমরা শুধুই কেন সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার হিসাব করে নেসাব মিলাই!? কখনোতো সোনার নেসাব হিসেব করে যাকাত আদায় করি না এটার কারণ কি?
  7. কোন যুবসমাজ মাসজিদে ইফতারির আয়োজন করল এখন যদি সেখানে কোনো হিন্দু ছেলে নিজ ইচ্ছায় টাকা দেয় তাহলে কি তার এই টাকা ইফতারিতে খরচ করা বৈধ হবে?  
  8. কিতাবে অনেক জায়গায় মাকরুহ লেখা থাকে আমার জানার বিষয় হলো যেই কাজ গুলো মাকরুহ ওগুলো করলে কেমন গুনাহ হবে মানে কোন এই গুনাহর শাস্তি কি?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব?
وهي واجبة على الحر المسلم المالك لمقدار النصاب فاضلا عن حوائجه الأصلية كذا في الاختيار شرح المختار، ولا يعتبر فيه وصف النماء ويتعلق بهذا النصاب وجوب الأضحية، ووجوب نفقة الأقارب هكذا في فتاوى قاضي خان.
ভাবার্থ-নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয়ভার ব্যতীত প্রত্যেক  নেসাব (৭.৫ ভড়ি স্বর্ণ/৫২.৫ ভড়ি রূপা বা রূপার সমমূল্য) পরিমাণ মালের মালিক স্বাধীন মুসলমানের উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব।
এক্ষেত্রে বাড়ন্ত মাল হওয়া জরুরী নয়।শুধু তাই নয়, বরং এ পরিমাণ মালের মালিকের উপর  কোরবানী ও নিকটাত্মীয়দের ব্যয়ভার গ্রহণ ওয়াজিব। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৯২)(শেষ)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1811

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
অক্রমবর্ধমান নেসাব পরিমাণ মালের মালিকের উপর ফিতরা ওয়াজিব। এই ব্যক্তির কোনো সন্তান ঈদের দিন সূর্যোদয়ের পূর্বে জন্ম নিলে তার ফিতরাও তার পিতাকে আদায় করতে হবে। তবে যেই ব্যক্তির উপর ফিতরা ওয়াজিব নয়, সেই ব্যক্তির কোনো সন্তান ঈদের দিন জন্ম নিলে তার পিতার উপর তার ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব হবে না।

(২)
সুদী ব্যাংক সমূহে একাউন্ট খুলে টাকা গচ্ছিত রাখা যাবে কি না?
এ সম্পর্কে বলা যায় যে,বর্তমান সময়ে বাসায় টাকা-পয়সা রাখা অনেকটা অনিরাপদ।অন্যদিকে সুদ হারাম,এবং সুদী কাজে সাহায্য করাও হারাম।
তাই বলা যায় যে,এসমস্ত ব্যাংকে সেভিংস একাউন্টে টাকা রাখা যাবে না।কেননা তখন ব্যাংক কর্তৃত আইনগতভাবে উক্ত টাকা সুদী কারবারে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও ব্যাংক চাহিবামাত্র গ্রাহককে উক্ত টাকা দিতে বাধ্য থাকে।এজন্যই উলামায়ে কেরাম পরামর্শ দেন যে,উক্ত ব্যাংক সমূহে কারেন্ট একাউন্ট খুলে টাকা রাখতে হবে।কেননা কারেন্ট একাউন্টের টাকা আইনগতভাবে ব্যাংক ব্যবহার করতে পারেনা। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/753

(৩)
কেউ যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে প্রথম রাকাতে ভুলে একটা সেজদা করে উঠে যায় অথবা দ্বিতীয় রাকাতে যদি একটি সেজদা করে বৈঠকে বসে যায়,তাহলে তাকে অবশিষ্ট  সিজদা আবার দিতে হবে।এবং শেষে সাহু সিজদা দিতে হবে। নতুবা নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।

(৪)
তারাবিহর নামাযে দুই রা'কাত পর বৈঠক না করে যদি চার রাকাত পড়া হয়, এবং শেষে সাহু সিজদা দেওয়া হয়, তাহলে দুই রাকাতই গণ্য হবে। কেননা তারাবিহর নামায দুই রাকাত হিসেবে প্রমাণিত।আর প্রত্যেক দুই রাকাতি নামাযের শেষ বৈঠক ফরয।

(৩)
আপনার প্রত্যেকটি প্রশ্নতে রাগ অভিমানের চিহ্ন ফুটে উঠছে! এর কি বাস্তব কোনো কারণ আছে? না কি এমনিতেই!  যাইহোক, মুহতারাম!
মাদরাসার মুহতামীম সাহেব, গরীব ছাত্রদের পক্ষ থেকে উকিল বা প্রতিনিধি হিসেবে যাকাত গ্রহণ করেন। ছাত্ররা ভর্তি ফরমের একটি কলামে মুহতামীম সাহেবকে উকিল নিযুক্ত করতঃ দস্তখত করে থাকে।

(৪)
বাবরি চুল রাখলে কোনো অংশকে কর্তন করা যাবে না।

(৫)
শুধু স্বর্ণ থাকলে স্বর্ণের নেসাব পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আসবে।আর শুধু রূপা থাকলে রূপার নেসাব পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আসবে।টাকা থাকলে রূপার নেসাব সমপরিমাণ হলে যাকাত আসবে।
কিছু স্বর্ণ এবং কিছু রূপা থাকলে স্বর্ণ এবং রূপাকে মিলিত করে উভয়টির মূল্য যদি রূপার নেসাব সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলে যাকাত আসবে।
(কিতাবুল-ফাতাওয়া-৩/২৭৭)
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৬/৮৭)

ویضم الذھب إلی الفضة وعکسہ بجامع الثمنیة قیمة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الزکاة، باب زکاة المال، ۳:۲۳۴، ط: مکتبة زکریا دیوبند)، أما العروض فتضم قیمتھا إلی الذھب أو الفضة ویکمل بھا نصاب کل منھما، قال ابن قدامة: لا نعلم في ذلک خلافاً، وفي ھذا المعنی العملة النقدیة المتداولة (الموسوعة الفقہیة، ۲۳: ۲۶۸)۔
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1203

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বর্ণ বা রূপা যে কোনো একটির নেসাব পূর্ণ হলেই যাকাত চলে আসবে।যেহেতু বর্তমানে রূপার বাজারমূল্য নিতান্তই কম,তাই রূপার নেসাব পূর্ণ হওয়াই স্বাভাবিক সুতরাং মূল্য অনুপাতে রূপাকেই মানদন্ড সাব্যস্ত করা হয়ে থাকে।

(৬)
কোন যুবসমাজ মাসজিদে ইফতারির আয়োজন করল এখন যদি সেখানে কোনো হিন্দু ছেলে নিজ ইচ্ছায় টাকা দেয়, তাহলে তার এই টাকা ইফতারিতে খরচ করা যাবে।

(৭)
মাকরুহ দুই প্রকার,(ক) মাকরুহে তাহরিমী (খ) মাকরুহে তানযিহি।

মাকরুহে তানযিহিতে লিপ্ত হলে সাধারণত গোনাহ হওয়ার কথা না। তবে নিয়মিত করলে সেটা মাকরুহে তাহরীমিতে পতিত হতে পারে।সেক্ষেত্রে মাকরুহে তাহরীমির গোনাহ হবে।

মাকরুহে তাহরীমিতে লিপ্ত হলে, গোনাহ হবে,তবে হারামের চেয়ে কম গোনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...