আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
128 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
আসসালামু আলাইকুম।

আমি আপনাকে এর আগে একটা প্রশ্ন করেছিলাম এই নং ফতওয়ায় https://ifatwa.info/74444/ এটা যার প্রশ্ন ছিল উনি বলতেছেন যে

ওনার হাসবেন্ড দেশের বাহিরে থাকে।উনি মাঝে মাঝে তার হাসবেন্ডের কাছে যায় ট্যুর ভিসায়।তো উনি যেহেতু বাচ্চাটাকে দত্তক নিবেন তো বাচ্চাটাকে নিয়েই যাবেন সেখানে।এখন কথা হচ্ছে নিজের সন্তান ছাড়া অন্যের সন্তানকে নিয়ে যেতে পারবেনা।এই কারণে কি উনি জন্মনিবন্ধনে ওনার পরিচয় দিতে পারবে ওনার মেয়েকে?উনি বলতেছেন যে এটা তো ওজরের কারণে জন্মনিবন্ধন আমার নামে করতেছি কিন্তু সবাইকে তো বলবই এটা আমার দত্তক নেয়া।এক্ষেত্রে কি করা উচিত?

এখানে আরেকটা কথা ওনাকে ডাক্তার বলেছেন ওষুধ খেলে স্তনে দুধ আসতে পারে তাই উনি ট্রাই করতেছে বাচ্চাটার দুধ মা হওয়ার।এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে দুধ মা হলে কি জন্মনিবন্ধনে দুধ বাবা-মায়ের পরিচয় দেয়া যাবে?

ওনার বাচ্চা নেই বিয়ের দশ বছর হয়েগেছে।একজন গরীব মানুষ তার নাকি অনেক গুলো বাচ্চা। এই বাচ্চা উনি নষ্ট করতে চেয়েছিলেন পেটে আসার পরে কিন্তু অনেকেই বলল নষ্ট করিও না যাদের সন্তান নাই তাদের দিয়ে দিও। তো একজন এই আপুর কথা বলেছে।এখন বাচ্চাটা হইছে কিছুদিন হবে।তাই উনি নিতে চাচ্ছেন। উনি বলতেছেন বাচ্চাটা আমি না নিলে অন্যকেউ নিবেই আমারও সন্তান নাই আর আমার টাকা আছে বাচ্চাটা সুন্দর ভাবে মানুষ হবে আমি বাচ্চাটাকে বলব আমি তাকে দত্তক নিছি।তার আসল বাবা মায়ের পরিচয় ই তাকে দিব কিন্তু মাঝে মাঝে বিদেশে যেতে হবে তাই জন্মনিবন্ধনে নিজের নাম দিতে চাচ্ছে।উনি চেষ্টা করতেছেন ওনার হাসবেন্ডকে বাচ্চাটার মাহরাম বানানোর।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/1091/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কাউকে বাবা বা মা বলে সম্বোধন করা জায়েয আছে।তবে কাউকে বাস্তবে বাবা-মার স্থান দিয়ে দেয়া বা নিজ পিতা-মাত ব্যতীত নিজেকে অন্যকারো সন্তান বলে পরিচয় দেয়া, আইডি কার্ড বা পাসপোর্টে নাম দেয়া কখনো জায়েয হবে না।এটা সম্পূর্ণই না জায়েয।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
হযরত সা'দ রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-

عَنْ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ، وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ، فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ»

" যে ব্যক্তি আপন পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে মেনে নেয় অথচ সে জানে যে, সে তার পিতা নয়, তার জন্য জান্নাত হারাম। "।
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৬৭৬৬)

হাদীসের সারমর্মঃ

যে ব্যক্তি নিজের জন্মদাতা পিতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতা হিসেবে মেনে নয় বা অন্য কারও সাথে জন্মগত সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠার দাবী করে তার জন্য জান্নাত হারাম। অন্য বর্ণনায় এসেছে, সে কুফুরী করল।

নিজ পিতা বা গোষ্ঠী ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্টির দিকে নিজের নামকে সম্পৃক্ত করা সম্পূর্ণ না জায়েয।

হযরত আবু-যর রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: (لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُهُ إِلا كَفَرَ، وَمَنْ ادَّعَى قَوْمًا لَيْسَ لَهُ فِيهِمْ نَسَبٌ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

যে ব্যক্তি নিজ পিতা ব্যতীত সেচ্ছায় অন্য কারো দিকে নিজের পিতৃত্ব কে সম্পৃক্ত করল,বা যে ব্যক্তি নিজে গোষ্ঠী ব্যতীত ভিন্ন কোনো গোষ্টি থেকে আপন বংশধারা সাব্যস্ত করল, সে যেন তার শেষ ঠিকানা জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়। (সহীহ বুখারী-৩৫০৮, সহীহ মুসলিম-৬১)

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে জন্মনিবন্ধনে ঐ মেয়ের আসল বাবা মায়ের নামই উল্লেখ করতে হবে,দত্তক নেয়া দম্পত্তির নাম উল্লেখ করা জায়েজ হবেনা।

ঔষধ খেয়ে দুধ মা হলেও জন্মনিবন্ধনে দুধ বাবা-মায়ের পরিচয় দেয়া যাবেনা। 

উল্লেখ্য দুধ মা হতে হলে ঐ মেয়ের ২ বছর বয়সের মধ্যেই দুধ পান করাতে হবে,সেক্ষেত্রে দত্তক নেয়া মহিলার স্বামীর মাহরাম বলে সাব্যস্ত হবে।
তবে ভাবে দুধ মা হলেও জন্মনিবন্ধনে দুধ বাবা-মায়ের পরিচয় দেয়া যাবেনা। 

এটিই হলো শরীয়তের মাসয়ালা,এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান উপেক্ষা করে তারা যদি মেয়েটির জন্মনিবন্ধনে ঐ মেয়ের আসল বাবা মায়ের নাম উল্লেখ না করে নিজেদের নাম উল্লেখ করে,সেক্ষেত্রে তাদের গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...