বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
ঔষধ খেয়ে মাসিক বন্ধ করে রোযা রাখলে রোযা হয়ে যাবে। তবে মেয়েদের স্বাভাবিক অবস্থার বিরুদ্ধে এ নিয়মে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই ট্যাবলেট না খাওয়াই উত্তম।
যদি কোন মহিলা রমজান আসার আগেই এবং হায়েজ শুরু হওয়ার আগে ওষুধ খেয়ে তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে তার জন্য রোযা রাখতে হবে। কারণ, এতে করে তার উপর রোযা না রাখার কোন কারণ বিদ্যমান থাকছে না। তাই তার জন্য রোযা রাখা আবশ্যক হবে।
কিন্তু যদি রমজান চলে আসে, আর রক্ত জারি হয়ে যাওয়ার পর ওষুধ খেয়ে বন্ধ করে দেয়, তাহলে হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা কমপক্ষে ৩ দিন পর্যন্ত রোযা রাখতে পারবে না। এর পর থেকে রোযা রাখা আবশ্যক। যেহেতু হায়েজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর হায়েজ শুরু হলে এর সর্বনিম্ন সময়সীমা হল তিন দিন। তাই হায়েজ শুরু হতেই ওষুধ খেয়ে বন্ধ করে ফেললেও ধরা হবে হায়েজ জারী আছে তিনদিন পর্যন্ত। তিন দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলে হায়েজ বন্ধ হয়ে গেছে হিসেবে রোযা রাখা আবশ্যক। {কিতাবুল ফাতওয়া-৩/৪০৫}
‘হায়েজা মহিলার জন্য উত্তম হলো নিজের স্বাভাবিক অবস্থার ওপর থাকা। আল্লাহ তাআলা তার ওপর যে ফয়সালা করেছেন, তার ওপর সন্তুষ্ট থাকা। এমন কিছু ব্যবহার না করা, যার দ্বারা রক্ত বন্ধ হয়ে যায়। বরং হায়েজ অবস্থায় রোজা ছেড়ে দেয়া। অতঃপর রোজাগুলোর কাজা আদায় করে নেয়া। কেননা, উম্মুল মুমিনিন ও আকাবির মহিলারা এমনটিই করেছেন। আর যদি ওষুধ দিয়ে রক্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলেও রোজা হয়ে যাবে।’(আপকে মাসায়েল : খণ্ড ৩, পৃ. ২০৭)
وفی الفقہ علی المذاھب الاربعہ:
لا یجوز للمرأۃ أن تمنع حیضاً أو تستعجل إنزالہ إذا کان یضر صحتہا؛ لأن المحافظۃ علی الصحۃ واجبۃٌ۔
(کتاب الطھارۃ، ج: 1، ص: 124)
সারমর্মঃ
মহিলাদের উপর জায়েজ নেই,তাদের হায়েজ বন্ধ রাখা।
যখন এটি তাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়।
কেননা শরীর হেফাজত করা ওয়াজিব।
قال في الإنصاف: يجوز شرب دواء مباح لقطع الحيض مطلقاً، مع أمن الضرر، على الصحيح من المذهب
সারমর্মঃ
হায়েজ বন্ধ করার জন্য ঔষধ খাওয়া সাধারণত জায়েজ,তবে ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।
আরো জানতে উক্ত লিংক দ্রষ্টব্য।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হায়েজ বন্ধের ঔষধ খেলে আপনার স্বাস্থের জন্য যদি কোনো ক্ষতিকর না হয়,তাহলে আপনি হায়েজ বন্ধ হওয়ার ঔষধ খেতে পারবেন।
তবে না খাওয়াই ভালো।
এক্ষেত্রে ঔষধ খেলে উপরোক্ত ফতোয়ার কিতাবের ফতোয়া ফলো করতে হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
যে মেডিসিন নিয়ে অফ রেখে রোজা করেছেন, এর জন্য গুনাহ হবেনা।
তবে মেডিসিন নেয়ার দরুন আপনার শরীরের যেনো ক্ষতি না হয়,সেদিক থেকে সতর্ক থাকবেন।
(০২)
৭ দিনের মাথায় ব্লিডিং বন্ধ হয়ে ১০ দিনের মধ্যে যদি আবারো ব্লিডিং হয়,সেক্ষেত্রে পুরো ১০ দিনকেই হায়েজ হিসেবে ধরবেন।
১০ দিনের পর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আবারো ব্লিডিং হলে সেটিকে ইস্তেহাজা ধরবেন।
প্রশ্নে উল্লেখিত ৭ দিনের মাথায় ব্লিডিং বন্ধ হয়ে ১০ দিনের মধ্যে যদি আর ব্লিডিং না হয়,সেক্ষেত্রে ৭ দিন হায়েজ হিসেবে ধরবেন।
১০ দিনের পর থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আবারো ব্লিডিং হলে সেটিকে ইস্তেহাজা ধরবেন।
(০৩)
ইফতারের সময়ের আগেই যদি ব্লিডিং হয়,সেক্ষেত্রে এটি যদি আপনার হায়েজ আসার ১০ দিনের মধ্যেই হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে এই রোযা ভেঙ্গে যাবে।
পরবর্তীতে এই রোযার কাজা আদায় করতে হবে।
তবে আপনি এ দিন রোযা ভেঙ্গে ফেলবেননা।
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি ইফতারের সময়ের আগেই ব্লিডিং হয়,সেক্ষেত্রে এটি যদি আপনার হায়েজ আসার ১০ দিনের পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে হয়,সেক্ষেত্রে এই রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।
কেননা এটি ইস্তেহাজা, তাই এতে রোযার সমস্যা হবেনা।