ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হানাফি ফিকহের গ্রহণযোগ্য কিতাব "আল-জাওহারাতুন-নাইয়্যিরাহ" কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
(قوله: وإذا أذن المؤذن يوم الجمعة الآذان الأول ترك الناس البيع والشراء وتوجهوا إلى الجمعة) قدم ذكر البيع على ذكر الشراء؛ لأن الإيجاب مقدم على القبول والمراد من البيع والشراء ما يشغلهم عن السعي حتى إنه إذا اشتغل بعمل آخر سواه يكره أيضا ولا يكره البيع والشراء في حالة السعي إذا لم يشغله، وقوله وتوجهوا إلى الجمعة ويستحب أن يقول عند التوجه اللهم اجعلني من أوجه من توجه إليك وأقرب من تقرب إليك وأنجح من دعاك وطلب منك إليك وينبغي لمن أراد أن يتوجه إلى الجمعة أن يغتسل ويمس طيبا إن كان عنده ويلبس أحسن ثيابه؛ لأنه يوم اجتماع فربما يتأذى بعضهم بروائح بعض فيستحب التنظيف والتطيب.
যখন মু'আজ্জিন সাহেব জুমুআর প্রথম আযান দিবে,লোকজন তখন ক্রয়-বিক্রয়কে পরিত্যাগ করে জুমুআর দিকে মনোনিবেশন করবে।ক্রয়বিক্রয় দ্বারা উদ্দেশ্য হল, প্রত্যেক ঐ জিনিষ যা মানুষকে জুমুআর দিকে গমন থেকে বিরত রাখে।এজন্য ক্রয়-বিক্রয় ব্যতীত অন্য কোনো কাজে মনোনিবেশ করাও মাকরুহ।জুমুআর মসজিদের দিকে গমনের পথে ক্রয়বিক্রয় মাকরুহ হবেনা,যদি তা গমনকে বাধা না দেয়।জুমুআর দিকে যাতায়তের সময় এই দু'আ পড়া মুস্তাহাব।
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ أَوْجَهِ مَنْ تَوَجَّهَ إلَيْك وَأَقْرَبَ مَنْ تَقَرَّبَ إلَيْك وَأَنْجَحَ مَنْ دَعَاك وَطَلَبَ مِنْك إلَيْك
আল্লাহুম্মা ইজআলনি মিন আওজাহি মান তাওয়াজ্জাহা ইলাইকা,ওয়া আকরাবা মান তাকার্রাবা ইলাইকা,ওয়া আনজাহা মান দা'আকা,ওয়া তালাবা মিনকা ইলাইকা।
জুমুআতে যাতায়াত কারীর জন্য মুস্তাহাব হল,গোসল করা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা (যদি সুগন্ধি ঘরে থাকে)এবং উত্তম পোষাক পরিধান করা।কেননা জুমুআহ হল,লোকজন একত্রিত হওয়ার দিন,সুতরাং কখনো কোনো একজনের দুর্গন্ধের কারণে সবার কষ্ট হতে পারে।(আল জাওহারাতুন নাইয়্যিরাহ-১/৯২)
জুমুআর প্রথম আযানের পর জুমুআর প্রস্তুতি গ্রহণ ব্যতীত অন্য যেকোনো কাজ মাকরুহ।(আহসানুল ফাতাওয়া-৪/১৫০)
জুমুআর প্রথম আযানের পর না দ্বিতীয় আযানের পর ক্রয়বিক্রয় নিষিদ্ধ ও মাকরুহ? এ সম্পর্কে হানাফি ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলেও সতর্কতামূলক প্রথম আযানের পর ক্রয়বিক্রয় নিষিদ্ধ।কিতাবুল ফাতাওয়া-৩/৫৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
জুমুআর প্রথম আযানের পূর্বেই জুমুআর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
যেমন একটি হাদীসে এসেছে,আওস ইবনু আওস আস-সাকাফী (রাঃ) বলেন,
وَعَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " «مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ، وَبَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ، وَدَنَا مِنَ الْإِمَامِ، وَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ، كَانَ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ: أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا» ". رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ، وَأَبُو دَاوُدَ، وَالنَّسَائِيُّ، وَابْنُ مَاجَهْ.
আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি জুমুআহর দিন (স্ত্রী সহবাসজনিত) গোসল করলো এবং নিজে গোসল করলো এবং সকাল সকাল যানবাহন ছাড়া পদব্রজে মসজিদে এসে ইমামের কাছাকাছি বসলো, মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে খুতবাহ শুনলো এবং অনর্থক কিছু করলো না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) রাখ ও তার রাত জেগে সালাত (নামায/নামাজ) পড়ার সমান সওয়াব রয়েছে।(মিরকাত-১৩৮৮,সুনানে ইবনে মা'জা-১০৮৭,সুনানে আবি দাউদ-৩৪৫)
যদি কেউ জুমুআর প্রথম আযানের পূর্বে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে না পারে,তাহলে সে জুমুআর প্রথম আযানের সময় বা পরে জুমুআর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে,এতে কোনো গোনাহ হবে না। এবং এটা মাকরুহও হবে না।তবে প্রথম আযানের পর দুনিয়াবী অন্য কোনো কাজ করা যাবে না।এটা মাকরুহে তাহরিমী বলে সাব্যস্ত হবে।
(২)টুপি দায়েমী সুন্নত।শুধুমাত্র জুমুআর নামাযে দিতে হবে,অন্য সময়ে দেয়ার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।এমন মনোভাব বিশুদ্ধ নয়।বিস্তারিত জানুন-
2277
(৩)বিয়েতে রাজী না হলে,কারণ হিসেবে পাত্র/পাত্রীর কোনো দোষ বর্ণনা করলে, সেটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
(৪)গ্রাম্য অশিক্ষিত বেদুইন সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
الأَعْرَابُ أَشَدُّ كُفْرًا وَنِفَاقًا وَأَجْدَرُ أَلاَّ يَعْلَمُواْ حُدُودَ مَا أَنزَلَ اللّهُ عَلَى رَسُولِهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
বেদুইনরা কুফর ও মোনাফেকীতে অত্যন্ত কঠোর হয়ে থাকে এবং এরা সেসব নীতি-কানুন না শেখারই যোগ্য যা আল্লাহ তা’আলা তাঁর রসূলের উপর নাযিল করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ সব কিছুই জানেন এবং তিনি অত্যন্ত কুশলী।
وَمِنَ الأَعْرَابِ مَن يَتَّخِذُ مَا يُنفِقُ مَغْرَمًا وَيَتَرَبَّصُ بِكُمُ الدَّوَائِرَ عَلَيْهِمْ دَآئِرَةُ السَّوْءِ وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
আবার কোন কোন বেদুইন এমন ও রয়েছে যারা নিজেদের ব্যয় করাকে জরিমানা। বলে গন্য করে এবং তোমার উপর কোন দুর্দিন আসে কিনা সে অপেক্ষায় থাকে। তাদেরই উপর দুর্দিন আসুক। আর আল্লাহ হচ্ছেন শ্রবণকারী, পরিজ্ঞাত।
وَمِنَ الأَعْرَابِ مَن يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَيَتَّخِذُ مَا يُنفِقُ قُرُبَاتٍ عِندَ اللّهِ وَصَلَوَاتِ الرَّسُولِ أَلا إِنَّهَا قُرْبَةٌ لَّهُمْ سَيُدْخِلُهُمُ اللّهُ فِي رَحْمَتِهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আর কোন কোন বেদুইন হল তারা, যারা ঈমান আনে আল্লাহর উপর, কেয়ামত দিনের উপর এবং নিজেদের ব্যয়কে আল্লাহর নৈকট্য এবং রসূলের দোয়া লাভের উপায় বলে গণ্য করে। জেনো! তাই হল তাদের ক্ষেত্রে নৈকট্য। আল্লাহ তাদেরকে নিজের রহমতের অন্তর্ভূক্ত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়।(সূরা তাওবাহ-৯৭,৯৮,৯৯)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নাকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
গ্রামের অশিক্ষিত লোকজন কুফরি এবং নেফাকিতে অত্যন্ত কঠোরতম হয়ে থাকে।সর্বত্রই তারা নিজের মতামতকে প্রচার করতে ব্যস্ত থাকে।তাদের দমিয়ে না রাখলে যদি পরিবেশ ও পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার আশংকা থাকে,তাহলে এমন পরিস্থিতিতে তাদের সাথে আপনার বর্ণিত কঠোরতম ভাষা প্রয়োগ করার রুখসত রয়েছে।যদি তারা তেমন কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করতে না চায়,তাহলে তাদের প্রতি এমন কঠোরতম ভাষা প্রয়োগ করার অদ্য কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।