আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
144 views
in সালাত(Prayer) by (11 points)
১. কোন কারনবশত(ব্যস্ততা বা ওয়াক্ত শেষের দিকে) বা কারন ছাড়া ইশা,যোহর, আসরের ওয়াক্তে ৪রাকাত সুন্নত বাদ দিয়ে ৪রাকাত ফরজ, ২রাকাত সুন্নত নামাজ শেষ করে মনে হলো প্রথম ৪রাকাত সুন্নত গুলো পড়ে নিব। এমতাবস্থায় এটি কি জায়েজ হবে?  এক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে ৪রাকাত সুন্নাত, ৪রাকাত ফরজ,২ রাকাত সুন্নাত, বিতিড় এভাবে মেইন্টেইন না করলে সমস্যা হবে? বা ফরজ ও ২রাকাত সুন্নাহ পড়ার পর আগের ৪রাকাত সুন্নাহ কি পড়া যাবে না কোনোভাবে?

২. একইভাবে সকালের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার ভয়ে ২ রাকাত ফরজ আগে পড়ার পর, ফজরের নামাজের সময় থাকলে আগের ২রাকাত সুন্নত কি পড়তে পারব? নাকি ধারাবাহিক ভাবে না পড়লে সুন্নাত নামাজ আর পড়া যাবে না?

৩। সুরা ওয়াকিয়া বা অন্য বড় সুরা দিয়ে পুরো যুহর/ আসরের নামাজ পড়া যাবে? ২৪ আয়াত দিয়ে সুন্নত, পরের  ২৫-৪৮ আয়াত দিয়ে ফরজ এভাবে পরের আয়াত দিয়ে নফল পর্যন্ত ১টা সুরা দিয়ে পড়া যাবে? নাকি একটা সুরা দিয়ে আলাদা আলাদা সুন্নত,ফরজ এভাবে নামাজ শেষ করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: مَنْ ثَابَرَ عَلَى اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً بَنَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ، أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمَغْرِبِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ

আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি দিবা-রাত্র বার রাকাত (সুন্নাতে মুআক্কাদা) আদায়ে অভ্যস্ত হয়ে যায় আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানিয়ে রাখেন। চার রাকাত জোহরের ফরয নামাযের পূর্বে এবং দু’রাকাত জোহরের ফরয নামাজের পরে, দু’রাকাত মাগরিবের ফরয নামাজের পরে, দু’রাকআত ইশার ফরয নামাজের পরে এবং দু’রাকআত ফজরের ফরয নামাজের পূর্বে। (সুনানে নাসায়ী ১৭৯৫)

مَنْ صَلَّى اثْنَتَىْ عَشْرَةَ رَكْعَةً فِي يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ بُنِيَ لَهُ بِهِنَّ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ ” . قَالَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ فَمَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَقَالَ عَنْبَسَةُ فَمَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ أُمِّ حَبِيبَةَ . وَقَالَ عَمْرُو بْنُ أَوْسٍ مَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ عَنْبَسَةَ . وَقَالَ النُّعْمَانُ بْنُ سَالِمٍ مَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ

দিন ও রাতে যে ব্যক্তি মোট ১২ রাক‘আত (সুন্নাত) সলাত আদায় করে তার বিনিময়ে জান্নাতে ঐ ব্যক্তির জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। উম্মু হাবীবাহ্ বলেছেন: আমি যে সময়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এ সলাত সম্পর্কে শুনেছি তখন থেকে আর কখনো তা আদায় করা পরিত্যাগ করিনি। ‘আম্বাসাহ ইবনু আবূ সুফ্ইয়ান বলেছেন: এ সলাত সম্পর্কে যখন আমি উম্মু হাবীবার কাছে শুনেছি; তখন থেকে আর ঐ সলাত গুলো কখনো পরিত্যাগ করিনি। ‘আম্র ইবনু আওস বলেছেনঃ যে সময়ে এ সলাত সম্পর্কে আমি ‘আম্বাসাহ্ ইবনু আবূ সুফ্ইয়ান- এর নিকট থেকে শুনেছি সে সময় থেকে আর কখনো তা পরিত্যাগ করিনি। নু’মান ইবনু সালিম বলেছেন: যে সময় আমি এ হাদীসটি ‘আম্র ইবনু আওস- এর নিকট থেকে শুনেছি তখন থেকে কখনো আর তা পরিত্যাগ করিনি। [সহিহ মুসলিম অধ্যায়: ফরযের পূর্বে ও পরে নিয়মিত সুন্নাতের ফাযীলাত এবং তার সংখ্যার বিবরণ। হা/১৫৭৯]

ইবন নুজাইম রহ. বলেন,

 والذي يظهر من كلام أهل المذهب أن الإثم منوط بترك الواجب أو السنة المؤكدة على الصحيح ؛ لتصريحهم بأن من ترك سنن الصلوات الخمس قيل لا يأثم ، والصحيح أنه يأثم .. . . فالإثم لتارك السنة المؤكدة أخف من الإثم لتارك الواجب

মাযহাবের ইমামদের কথা থেকে স্পষ্ট হয় যে, ওয়াজিব অথবা সুন্নতে মুআক্কাদা ত্যাগ করলে বিশুদ্ধ মতানুযায়ী গুনাহ হয়। কেননা, তারা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের (আগে-পরের) সুন্নতগুলো ছেড়ে দিবে, কেউ বলেন, গুনাহ হবে না। বিশদ্ধ কথা হল, গুনাহ হবে।’ তবে সুন্নতে মুআক্কাদা ত্যাগকারীর গুনাহ ওয়াজিব ত্যাগকারীর চাইতে কম হবে। (আল বাহরুর রায়েক ১/৩১৯)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

ধারাবাহিকভাবে ৪রাকাত সুন্নাত, ৪রাকাত ফরজ,২ রাকাত সুন্নাত, বিতর এভাবে মেইন্টেইন না করলে সমস্যা হবে।

প্রথমে চার রাকাত সুন্নাত না পড়ে ফরজ আদায় করলে ঈশার ক্ষেত্রে সেই সুন্নাতের কাজা আদায় করা যায়না।
জোহরের ক্ষেত্রে সেই সুন্নাতের কাজা আদায় করা যায়।
এক্ষেত্রে জোহরের ফরজের পর  আগে ২ রাকাত সুন্নাত আদায় করে তার পর আগের চার রাকাত সুন্নাতের কাজা আদায় করা যাবে।

আর ফজরের সুন্নাত আদায় না করলে সূর্য উঠার পর ইশরাকের ওয়াক্তে আদায় করতে হবে।
তবে সেই দিন জোহরের ওয়াক্তের আগেই আদায় করতে হবে।
নতুবা পরবর্তীতে আর আদায় করা যাবেনা। 

আসরের সুন্নাত যেহেতু মুয়াক্কাদা নয়,তাই তাহা আদায় না করলেও কোনো সমস্যা নেই।

(০২)
না,ফজরের ফরজের পর আদায় করা যাবেনা।
সূর্য উঠার পর ইশরাকের ওয়াক্তে আদায় করতে হবে।
তবে সেই দিন জোহরের ওয়াক্তের আগেই আদায় করতে হবে।
নতুবা পরবর্তীতে আর আদায় করা যাবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من لم يصل ركعتي الفجر فليصلهما بعد ما تطلع الشمس

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি ফজরের সুন্নত পড়তে পারবে না,সে যেন সূর্যোদয়ের পর দু রা'কাত সুন্নত পড়ে নেয়।(সুনানু তিরমিযি-৪২৩)

(০৩)
সুরা ওয়াকিয়া বা অন্য বড় সুরা দিয়ে পুরো যুহর/ আসরের নামাজ পড়া যাবে 

২৪ আয়াত দিয়ে সুন্নত, পরের  ২৫-৪৮ আয়াত দিয়ে ফরজ এভাবে পরের আয়াত দিয়ে নফল পর্যন্ত ১টা সুরা দিয়ে পড়া যাবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...