পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে এর পরিণাম সম্পর্কে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সূরা হুজরাতের ১১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে
يٰاَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِنْ قَوْمٍ عَسٰى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسٰى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ
‘‘হে মু’মিনগণ! কোন সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর নারীরা যেন অন্য নারীদেরক ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অন্যের নিন্দা করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর (ঈমানের আগে কৃত অপরাধকে যা মনে করিয়ে দেয় সেই) মন্দ নাম কতই না মন্দ!...’’ (সূরাহ্ আল হুজুরাত ৪৯ : ১১)
এ আয়াতের তাফসীরে ইমাম ইবনু কাসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ আয়াত থেকে উদ্দেশ্য হলো তাদেরকে তুচ্ছ মনে করা, হেয় পতিপন্ন করা ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা। আর এগুলো হারাম যা মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে গণ্য হবে।
,
হজরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ তকি ওসমানী পবিত্র কোরআনের উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তাসখীর’-এর অর্থ কাউকে অপমান ও তাচ্ছিল্য করা। এমনভাবে কারো দোষ বর্ণনা করা, যাতে মানুষ তাকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করে। এতে ওই ব্যক্তির অন্তরে ব্যথা লাগে। এ ধরনের কাজ অনেক রকম হতে পারে। যেমন— কারো চলাফেরা, ওঠাবসা, কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি নিয়ে ব্যঙ্গ করা, কারো শারীরিক গঠন ও আকার-আকৃতি নিয়ে কটূক্তি করা, তার কোনো কথা বা কাজের ব্যাপারে ঠাট্টা করা। চোখ, হাত-পা দ্বারা টীকা-টিপ্পনী করা অন্তর্ভুক্ত।
,
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠাট্টা-বিদ্রূপ তথা উপহাস ও কষ্ট দেয়া থেকে সাবধান করেছেন, কারণ তা শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষের রাস্তা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
...الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لَا يَظْلِمُهٗ وَلَا يَخْذُلُهٗ، وَلَا يَحْقِرُهُ التَّقْوٰى هَاهُنَا وَيُشِيرُ إِلٰى صَدْرِهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍبِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ، كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ، دَمُهٗ، وَمَالُهٗ، وَعِرْضُهٗ
...এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তাকে জুলুম করবে না। তাকে লাঞ্ছিত ও তুচ্ছ মনে করবে না। তাকওয়া এখানে থাকে। এ বলে তিনি তার বুকের দিকে তিনবার ইশারা করলেন। কোন লোকের খারাপ হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ মনে করবে। প্রত্যেক মুসলিম একে অন্যের উপর হারাম, তার রক্ত, তার সম্পদ ও তার সম্মান হরণ করা। (মুসলিম হাঃ ৩২-[২৫৬৪])