আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
298 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (47 points)
edited by
১.আল্লাহর সত্তা কি অসীম?
২.আল্লাহ আমাদের জন্য যা করেন তাই কি সর্বোত্তম?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছে   
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

تفكَّروا في كلِّ شيءٍ , ولا تتفكَّروا في اللهِ                                                                                                     
তোমরা সব কিছু নিয়ে গবেষণা কর। কিন্তু আল্লাহর সত্ত্বা নিয়ে গবেষণা করো না।

ইমাম যুরকানী রহঃ বলেন, হাদীসটি হাসান লিগাইরিহী। [মুখতাসারুল মাকাসিদ, বর্ণনা নং-৩১৮]

আল্লাহর সত্তা, আকার নিরাকার ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা নিষেধ। আল্লাহ তাআলা আছেন। তিনি সকল কিছুর স্রষ্টা। তার কাছেই আমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তিনিই রিজিকের মালিক। ইত্যাদি আকীদা রাখা আবশ্যক।

কিন্তু তার সত্তা কেমন? তিনি দেখতে কেমন? তার আকৃতি কেমন? ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। সালাফে সালেহীনগণ এসব বিষয়ে আলোচনা করাকে অপছন্দ করতেন। আমরাও এসব নিয়ে আলোচনা করাকে অপছন্দ করি।

তাই এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ বলে মনে করি।

বিস্তারিত জানুনঃ   

(০২)

সুরা নিসার ৭৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

مَاۤ اَصَابَکَ مِنۡ حَسَنَۃٍ فَمِنَ اللّٰہِ ۫ وَ مَاۤ اَصَابَکَ مِنۡ سَیِّئَۃٍ فَمِنۡ نَّفۡسِکَ ؕ وَ اَرۡسَلۡنٰکَ لِلنَّاسِ رَسُوۡلًا ؕ وَ کَفٰی بِاللّٰہِ شَہِیۡدًا ﴿۷۹﴾
যাকিছু কল্যাণ আপনার হয় তা আল্লাহর কাছ থেকে এবং যাকিছু অকল্যাণ আপনার হয় তা আপনার নিজের কারণে এবং আপনাকে আমরা মানুষের জন্য রাসূলরূপে পাঠিয়েছি; আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।

বিপদাপদ যদিও আল্লাহ তা'আলাই সৃষ্টি করেন, কিন্তু তার কারণ হয় মানুষের কৃত অসৎকর্ম। 
মানুষটি যদি কাফের হয়ে থাকে, তবে তার উপর আপতিত বিপদাপদ তার জন্য সে সমস্ত আযাবের একটা সামান্য নমুনা হয়ে থাকে যা আখেরাতে তার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। বস্তুতঃ আখেরাতের আযাব এর চাইতেও বহুগুণ বেশী। আর যদি লোকটি ঈমানদার হয়, তবে তার উপর আপতিত বিপদাপদ হয় তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত, যা আখেরাতে তার মুক্তির কারণ। অথবা তার জন্য পদমর্যাদা বৃদ্ধির সোপান। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিমের উপর যে বিপদই আপতিত হোক না কেন, এর দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গোনাহের কাফফারা করে দেন। এমনকি যে কাটাটি পায়ে ফোটে তাও। [বুখারীঃ ৫৩২৪, মুসলিমঃ ২৫৭২]

وَ لَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَ الْجُوْعِ وَ نَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَ الْاَنْفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ،  وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَ، الَّذِیْنَ اِذَاۤ اَصَابَتْهُمْ مُّصِیْبَةٌ،  قَالُوْۤا اِنَّا لِلهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ.
আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব সামান্য ভয় ও ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলের কিছুটা ক্ষতি দিয়ে; আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও- যাদের ওপর কোনো মসিবত এলে বলে, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’- নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব। -সূরা বাকারা (২) : ১৫৫-১৫৬

বিপণ্ণ ব্যক্তির নিজেরও উচিত নয় যে কোন বালা-মসিবতকে অশুভ গণ্য করা। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَعَسَى أَنْ تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
তোমরা যা পসন্দ কর না এমন হতেই পারে যে, তা তোমাদের পক্ষে কল্যাণকর, আবার এমনও হতে পারে যে, তোমরা যা পসন্দ কর তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (বাকারা : ২১৬)

 আল্লাহ সব সময় বান্দার মঙ্গল করেন। কিন্তু বান্দা ভুলক্রমে বা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেই নিজের অকল্যাণ করে থাকে। আল্লাহ তাতে বাধা দেন না বান্দার স্বাধীন ইচ্ছা
শক্তিকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে। তাই যে ভাল কর্ম করবে সে নে‘মত লাভ করবে।
আর যে অন্যায় করবে সে বিপদে পতিত হবে
( মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৮/২৩৯) ।

তবে এটাও তাক্বদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে, যা পূর্বেই নির্ধারিত ছিল। প্রকৃত ঈমানদারের জন্য ভাল-মন্দ উভয়টিই কল্যাণকর হয়ে থাকে।

 যেমন কেহ কেহ এই হাদীস উল্লেখ করেনঃ
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
মুমিনের ব্যাপারটি কতই না বিস্ময়কর! তার সমস্ত কাজই তার জন্য কল্যাণকর।… যদি তার কোন মঙ্গল স্পর্শ করে, সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। এটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তার কোন মন্দ স্পর্শ করে, সে ছবর করে। আর এটাও তার জন্য কল্যাণকর হয়’ (মুসলিম হা/২৯৯৯; মিশকাত হা/৫২৯৭) ।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত  ""আল্লাহ আমাদের জন্য যা করেন তাই কি সর্বোত্তম""
এটি ছহীহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...