আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (63 points)
১৷  ইসকন হিন্দুদের একটি সংগঠন,  এদের অনেক নিরামিষ হোটেল আছে। এরা সকল মানুষকে প্রভু বলে ডাকে। যখন এই বিষয়ে প্রথম শুনি তখন একজন হিন্দুকে প্রশ্ন করায় সে বলেছিলো এরা মানুষকে না বরং তাদের আত্মাকে প্রভু হিসাবে ডাকে। তো বিষয় হলো মাঝেমধ্যে এদের কারো সাথে দেখা হতো তারা আমাকে তাদের অভ্যাস অনুযায়ী প্রভু বলে ডাকতো, বিষয়টা খুবই খারাপ লগতো,  চাইতাম না ডাকুক এই নামে তাও মাঝেমধ্যে তাদের এইরুপ সম্ভোদের পরেও তাদের সাথে কথোপকথন চালিয়ে যেতাম। তাদের বিভিন্ন নিরামিষ হোটেল আছে সেখানে খাবারের দাম কম স্বাদ ও ভালো,সেখানে গেলেও মাঝেমধ্যে এমন হয়তো বলতো যে, " প্রভু কি খাবেন?" তখন হয়তো জবাব দেওয়া হয়েছে যে এটা বা ওটা খাবো। আসলে বিষয়টা খারাপ লাগলেও তাদের কখনো এটা মানা করি নি যে এটা ডাকবেন না, ভেবেছিলাম বলে লাভ হবে না। তো আমি জানতে চাচ্ছি এভাবে প্রভু বলে সম্ভোদন করার পরে জবাব দেওয়ায় ইমান চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না?

পুনশ্চ: আমার মোটেও ভালো লাগতো না বিষয়টা, আর তখন কুফর এর বিষয়গুলো ভাবনায় ও আসতো না।  প্রভু বলতে যদিও তারা বলে ইশ্বর  উদ্দেশ্য করে না, তবে আমি আসলে তখন কি ভাবতাম মনেও করতে পারছি না।

২। কেও যদি কোনো হারামকে হালাল বলে ফতোয়া দেওয়ায় কেও যদি বলে "অমুক তো এই হারাম কে হালাল বানিয়ে দিয়েছে" এতে কি সেই মানুষের কুফর হবে?

৩. হাজাম খতনা করছে এমন ভিডিও দেখে কেও যদি বলে খতন করা দেখলে হাসি উঠে। এতে কি কুফর হবে?
(ধর্মীয় বিধান হওয়ায় হাসি উঠে নি, কাটার যে সুরত সেই সুরত দেখে তার হাসি উঠে বলেছে)

৪. কেও যদি জানতে চায় যে "আল্লাহর সিফত কি আল্লাহর অংশ" এতে কি তার কুফর হবে?

৫. দেওয়ানবাগী এক ভিডিওতে বলেছে যে, "কোরআর এর কোনো ক্ষমতা নাই" এটা একজনকে অপর জন দেখাচ্ছে,  তখন সব ভাবলো " এটাতো ঠিক ই বলছে, কোরআনের ক্ষমতা কিভাবে হবে" তখন সে ওই ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলো যে, সব ক্ষমতা তো আল্লাহর, তাই না? এবং এটাও জানতে চাইলো " কোরআনের ক্ষমতা আছে এই কথার বিধান আপনার মতে কি?,

এতে কি ওই দ্বিতীয় ব্যক্তির (প্রশ্নকারীর) ইমানে সমস্যা হবে?

৬ একট মুভিতে এক ভিনগ্রহ বাসী পৃথিবীর কোন ধর্ম সঠিক এটা বুঝতে না পেরে গান গায় " মে শুনা হে ইস দুনিয়া তু চালাতা হে,     ছারে দুনিয়া তেরি আগে ছার জুকাতা হে,  ভাগওয়ান হে কাহা রে তু,  হে খোদা হে কাহা রে তু" এই গান কোনো মুসলিম কোনো উদ্দেশ্য না নিয়ে শুধু গান হিসাবে যদি গায় তবে তার কুফর হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ- 
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম। 


কাফের বলার ক্ষেত্রে উসূল

আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-

ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد، (شرح الفقه الاكبر-199

কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:٩٤]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك 

হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮} 

কত মারাত্মক হুশিয়ারী, তাই কাউকে কাফের, মুশরিক বলার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এভাবে আপনাকে প্রভু বলে সম্বোধন করার পরে আপনার জবাব দেওয়ায় ঈমান চলে যাবেনা। 

তবে এটি মারাত্মক বাক্য,তাই উল্লেখিত হোটেল গুলোতে না যাওয়ার পরামর্শ থাকবে, গেলেও তাদের তাদের কথা মতে জবাব দিবেননা।

(০২)
এতে সেই মানুষের কুফর হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ-
"ধর্মীয় বিধান হওয়ায় হাসি উঠে নি, কাটার যে সুরত সেই সুরত দেখে তার হাসি উঠে বলেছে"

সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ মতে কুফর হবেনা। 

(০৪)
এটি জানতে চাওয়ার দরুন কুফর হবেনা।

(০৫)
এতে ঐ দ্বিতীয় ব্যক্তির (প্রশ্নকারীর) ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৬)
না,প্রশ্নের বিবরণ মতে কুফর হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...