আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
238 views
in ওয়াসওয়াসা by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,
(১) আমাদের শহরে একজন ইন্টারনেট লাইন দেবার ব্যাবসা করে। আমি মসজিদে যাবার পর দুর থেকে তাকে দেখে মনে হলো সেই লোক মসজিদে বসে আছে। তাকে দেখে আমার মনে হচ্ছিল যে, "সে আগের থেকে ফর্সা হয়েছে। ইন্টারনেটের ব্যাবসা করে নামাজ পড়লে আবার চেহারা ভাল হয় কিভাবে? তাহলে নামাজ পড়লে চেহারা সুন্দর হয় এই কথাটা ভুল, আসলে বার বার মুখ ধোবার কারনে চেহারা ভাল হয়। আল্লাহ বলে কেউ নেই "। যদিও লোকটা অন্য লোক ছিল।
এমন আজে বাজে বা খারাপ ধারনা মনে আসছিল। এসব ভাবার পরে নামাজে দাড়ানোর পর নিজের মনটা খুব ছোট লাগছিল। খারাপ লাগছিল।নামাজে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। এতে কি আমার ঈমান চলে গেল শায়েখ??

(২) নামাজের ভিতরে বিভিন্ন প্রকারের আজে বাজে চিন্তা আসে। সিজদা করার সময় মনে হয় আমি একজন ব্যাক্তিকে সিজদা করছি। আবার মনে হয় আমি এমন একজনকে সিজদা করছি যার হাত পা আছে। তার অবয়ব সিজদায় চোখের সামনে ঘুরতে থাকে। আবার নামজের ভিতরে মনে হয় আমি নামাজে আসতে পেরেছি আমার বন্ধুর জন্য। কারন সে আমাকে নামাজ পড়ার কথা বলতো তাই। এমন চিন্তা আসার পর আমি নামাজ শেষ করে আস্তে আস্তে বলতে থাকি যে, " হে আল্লাহ তুমি তাওফিক না দিলে আমি মসজিদে আসতে পারতাম না। তুমি আমাকে আমার বন্ধুকে দিয়ে বলিয়েছো। আর তুমি আমাকে তাওফিক দিয়েছো তাই আমি আসতে পেরেছি। এসব কথগুলো আমি উচ্চারন করে বলছিলাম। নামজের ভিতর যখন আমার এসব আজে বাজে কথা মনে আসে তখন আমি হাত মুঠো মারা মত করি, সেজদায় গিয়ে বৃদ্ধ আংগুল দিয়ে মাথার দুপাশে চাপ দিই।
নামাজে এসব কথা মনে আসায় ও এরকম আনইউজুয়াল এক্টিভিটি করার জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৩) আজ দুপুরে খাওয়া দাওয়া করিনি। রাতে বাসায় আসার পর মায়ের রান্না করা দেরি হওয়াতে আমি রাগ করে " এখন আর খাওয়া হবে নানে " বলে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। ওয়াশরুমে যাবার পর মনে হচ্ছিল যে,  " নামাজ পড়তে যাবার কারনে খেতে পারবো না তাই আমি নামাজের উপর রাগ দেখালাম "।
তারপর, ওয়াশরুমে থাকা কালিন আমার মনে হচ্ছিল যে, খিদা পেটে নামাজ পড়া ঠিক না, নবি সা: নিষেধ করেছেন, আমার ওয়াসওয়াসা থাকার জন্য মনে আসছিল যে, এখন ভাত খেলে মনে হবে আমি নামাজের চেয়ে খাওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিলাম মনে হয়। কিন্তু নামাজের সাত মিনিট সময় বাকি থাকায় আমি বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম নামাজের উদ্দেশ্যে। নামাজ চলা কালিন আমার বার বার মনে হচ্ছিল যে,  আমার নবিজি(সা:) এর হাদিস মানা হলো না,কারন আমি খিদে পেটে নামাজ পড়তে এসেছি। এর ভিতর এমন কথাও মনে আসছিল যে, " মানা লাগবে না "।

এভাবে মনে সংসয় ও খারাপ চিন্তা নিয়ে নামাজ শেষ করলাম।
এজন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে??

(৪) ওয়াসওয়াসা এতটায় তিব্র যে আমার সবসময় ঈমান হারানোর ভয় হচ্ছে। এমনকি পানি খাওয়ার সময় ভুলে পানিতে নিশ্বাস ছাড়ার পর আসতাগফিরুল্লাহ পড়ছি তাতেও ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে আমি নবি (সা:) এর কথা মত কাজ করে আল্লাহর কাছে আসতাগফিরুল্লাহ বললাম। নবি (সা:) এর কোন সুন্নাত মানলে মনে হচ্ছে আমি আল্লাহর সাথে শিরিক করে ফেললাম নাতো ! এমন এক খারাপ পরিস্থিতির ভিতরে যে আমি আছি তা আপনাকে বোঝাতে পারবো না। মাঝে মাঝে এসব শিরিকি ও কুফুরি বাক্য উচ্চারন করে ফেললাম কিনা তাতেও সন্দেহ হচ্ছে আমার।
আমার এসব কিছু মনে আসার কারনে কি শিরিক হবে শায়েখ??

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:  
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835

ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1379


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার সবগুলো প্রশ্ন অত্যান্ত মনযোগ সহকারে পড়ে তারপর আমনা আপনার প্রশ্নের উত্তর সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়ার চেষ্টা করছি.......
(১) উপরোক্ত ধারণার কারণে আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(২) প্রশ্নের বিবরণমতে আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(৩) এতেও আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(৪) এসব কারণেও শিরক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 200 views
...