আসসালামু আলাইকুম।
হুজুর,
আমার গতকালের প্রশ্নটি দেখে আসার অনুরোধ করছি :
https://ifatwa.info/69429/
(১) খাটের চাদরে ও কোম্বলে বির্য লাগার পর তা শুকিয়ে গেলে, সেখানে শোয়া হলে কি শরিল ও জামা কাপড় পাক থাকবে?
সহবাস করার সময় বেশিরভাগ সময়ই চাদরে বির্য লেগে যায়। প্রতিদিন চাদর ধোয়াতো একটু কষ্টকর। তাই কি সাবধানতা মানলে চাদর না ধুলেও সমস্যা হবে না ?
(২)" প্রতিদিন চাদর ধোয়া কষ্টকর "। এমন ভাবে লেখার জন্য কি আমার ঈমানে কোন সমস্যা হবে শায়েখ??
মনের ভিতর হচ্ছে যে, আমার ভাষাটা রাগ নিয়ে লেখার মত হয়ে গেল। যেটা আমার ঠিক হলো না বোধ হয়।
(৩) আজ থেকে শুরু করবো ,কাল থেকে শুরু করবো এভাবে নামাজ শুরু করার কথা ভাবার পরও কোন না কোন কারনে পড়তে পারছি না। ইচ্ছা ছিল দুপুর থেকে নামাজ শুরু করবো ইনশা-আল্লাহ । কিন্তু গোছল করার পর ঘরে এসে মন পড়লো যে ঘরের কিছু জায়গায় বির্য লেগে থাকতে পারে। যদিও জায়গাগুলা শুকনা। তবুও যেখানে বির্য লেগে থাকার সম্ভবনা বেশি আছে আমি সেখানে পা না দেবার চেষ্টা করছিলাম। তখন আমার পা খুবই সামান্য ভিজা ছিল। তারপর আমি যখন প্যান্টে পা ঢুকাচ্ছিলাম,তখন আমার মনে হতে থাকে পা যেহেতু সামান্য ভিজা ভিজা ভাব ছিল, তাই মনে হয় পা থেকে প্যান্টেও বির্য লেগে গেল। এমন সন্দেহ মনে আসছে। তাই আমার মনে আসছিল যে ,আমার ওয়াইফ তার বাবার বাসা থেকে আসলে সবকিছু পরিস্কার করাবো তারপর থেকে নামাজ পড়া শুরু করবো। আবার মনে হচ্ছে যে, আমার ওয়াইফ বাসায় আসলে প্রথমদিন শারিরিক সম্পর্ক করার পর তারপর সবকিছু পরিস্কার করে নামাজ পড়া শুরু করবো।
এখন আমি কি করবো শায়েখ? আমি কি এই সন্দেহ নিয়েই আজ থেকে নামাজ পড়া শুরু করবো ইনশা-আল্লাহ?
না আমি আমার ওয়াইফ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবো?
(৪) ইউটিউবে একটা ভিডিওর থাম্বনেলে লেখা ছিল যে, "খ্রিস্টান ধর্মের মুরতাদ"।
এটা দেখার পর আমি ভুরু কুচকালাম। তখন থেকে আমার মনে হচ্ছে আমি কি ভেবে এমন করলাম। আবার সেটা দেখতে থাকি, আর বুঝতে থাকি কেন এমন করলাম। এতে কি ঈমানের ক্ষতি হবে??
(৫) দুইজন প্রিয় হুজুরকে একসাথে দেখার পর আমি বললাম "আল্লাহ"।
এটা বলার পর আমার মনে হচ্ছে, আমি মনে হয় হুজুরদেরকে আল্লাহ বললাম। আবার, একটা ভিডিওতে একজন বলছিল যে, "দ্বিনে ফিরে আসলে তো আমাকে কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসতে হবে "।
এটা শুনার পর আজ সকালে আমার মনেও আসছিল যে," দ্বিন পালন করতে গেলে আমাকে জোন থেকে বাইরে আসতে হবে "। এতে কি ঈমানের ক্ষতি হবে??
(৬) শায়েখ, আমার পর্ন ভিডিও ও মাস্টারবেশন করার বাজে অভ্যাস আছে। এই অভ্যাসটি থেকে আমি বিরত হতে পারছি না। ভাবি আজ থেকে আর করবো না, কিন্তু আবার করে ফেলছি। মাস্টারবেশন করার সময় আমার মনে হচ্ছিল আমি কোরআনকে খুবই নেংরাভাবে অবমাননা করছি।এমন চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। যা প্রকাশ করার মত না। ওই সময়টাতে আমি আমার মাথা বাড়াচ্ছিলাম। তাই আমি কিছুক্ষন নোংরা ভিডিও দেখা বন্ধ রেখে অন্য ফানি ভিডিও দেখতে থাকি। তখন কেন জানি আমার হাসিও লাগছিল, ভিডিওতে ফানি কিছুর জন্য হতে পারে , অথবা এসব নোংরা চিন্তা আসার জন্য হাসি লাগছে কিনা আমি বুঝিনি। এমনিতে প্রায় সব সময়ই আমার আল্লাহকে নিয়ে অনেক নোংরা কথা মাথায় আসে। তখন ও মাথায় বাড়ি মারি। কিন্তু মাস্টারবেশন করা অবস্থায় কোরআন নিয়ে এমন অবমাননাকর কথা মাথায় আশায় খুব খারাপ লাগছে। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে??
(৭) হিন্দুদের এক ভন্ড বাবাকে দেখে আমার হাসি আসছে। হাসার পর আমার মনে হতে থাকে যে, "আমার কি হাসা ঠিক হলো? নাকি আমাকে রাগ করার দরকার ছিল?"
হাসার জন্য কি আমার ঈমানের ক্ষতি হবে শায়েখ??
(৮) এটা আমার মায়ের প্রশ্ন। ফ্লোরে পাখিতে পায়খানা করলে কয়বার ধুতে হবে? নাকি মুছে ফেললেই পাক হবে?
(৯) আপনাদের কাছে প্রশ্ন করার সময় ট্যাগ বা কি বিষয়ক প্রশ্ন করেছি সেটার জন্য তালাক ট্যাগ সিলেক্ট করতেও ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে যেন, তালাক পতিত হয়ে যাবে।
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??
(১০) আমার যতটা মনে আছে বলছি। আশা করি শায়েখ আপনি বিষয়টা ভালভাবে বুঝতে পারবেন।
আজ থেকে প্রায় ৩/৪ মাস আগে আমাদের বাসায় প্রাচির ও গেটের কাজ চলাকালিন সময়ে আমার ওয়াইফ তার বাবার বাসায় ছিল। একদিন আমি অফিস থাকাকালিন সময়ে আমার ওয়াইফ আমার কাছে ফোন দেই। আমি তাকে বাসায় কাজ কতদুর এসব বিষয়ে কথা বলছিলাম। হয়তোবা আমাদের বাসায় সে সময় আমার ওয়াইফ ছিলনা বলে বা তাকে তার বাবার বাসায় বেশিদিন রাখা হয়েছিল বলে আমার ওয়াইফের মনে রাগ ছিল। তারপর সম্ভবত গেটের কাজের কোন এক ব্যাপারে আমি তার কথায় রাগ করে নরম ভাবেই বলছিলাম যে, মনে করো আমার বাবা,মা,আর আমি একটা কথা বলবো আর তুমি বলবা ভিন্ন কথা। এককথায় আমি তাকে বুঝাতে চাচ্ছিলাম তুমি এই সময় বাসায় না থাকাতে ভাল হয়েছে। কিন্তু আমার ওয়াইফ বিষয়টা বুঝতে পেরে সে রেগে গিয়ে বলে যে, "আমার তো প্রয়োজন নেই"। তখন আমিও রেগে গিয়ে তার কথার পাল্টা জবাবে বা কথার ফ্লোতে আমিও বলি যে "হ্যা তোমার প্রয়োজন নেই "। আমার যতদুর মনে পড়ে - "তোমাকে প্রয়োজন নেই" এই কথা বলার মাধ্যমে আমি যে তাকে তালাক দিয়ে দিলাম এমন কোন নিয়ত আমার ছিলনা। তারপর শেষের দিকে আমি তাকে বলেছিলাম যে, "তোমাকে আমি তোমার বাবার বাসায় যেই কয়দিন থাকতে বলি থাকবা। একটাও কথা বলবা না। যদি ১ মাস থাকতে বলি থাকবা। যদি ৫ মাস থাকতে বলি তাহলে ৫ মাস থাকা লাগবে। এমন কথা বলেছিলাম সম্ভবত।
পরে আমার সন্দেহ হওয়াতে আমি আবার আমার ওয়াইফকে জিগ্গাসা করেছিলাম যে, "তোমাকে প্রয়োজন নেই " কথাটি আমি কথার মাঝখানে কোন সময় বলেছিলাম। আমার বাবা,মা,আর আমি একটা কথা বলবো আর তুমি বলবা ভিন্ন কথা, এই কথা বলার আগে না পরে। সম্ভবত তখন আমার ওয়াইফ বলেছিল,
আমার বাবা,মা,আর আমি একটা কথা বলবো আর তুমি বলবা ভিন্ন কথা- একথা বলার আগে। অবশ্য এই সন্দেহ আমার এখনো হচ্ছে। আগেও হতে পারে।
কিন্তু যখনি বলি আমি শিয়র যে, আমার ওয়াইফ আগে আমাকে বলেছিল যে, "আমার তো প্রয়োজন নেই"। একথা শোনার পর তার কথার পাল্টা জবাবে বা কথার ফ্লোতে আমিও বলি যে "হ্যা তোমার প্রয়োজন নেই "।
সেসময় ও আমি তালাকের ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ছিলাম।
এই ঘটনার পর থেকে আমি প্রায় সপ্তাহ খানেক শুধু মনে মনে "তোমাকে প্রয়োজন নেই" বলতাম। আর বোঝার চেষ্টা করতাম যে, আমি কি নিয়তে কথাটি বলেছিলাম।
এতদিন পর এখন আবার এই বিষয়টি আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আর মনে সন্দেহ হতে থাকে। আর বুকের ভিতর ধড়ফড় শুরু হয়। আর তালাক পতিত হয়ে যেনা করছি কিনা ভেবে ভয় হয়। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?
(১১) এই ঘটনাটি প্রায় ১ বছর আগের। তখন আমার তালাকের ওয়াসওয়াসা আস্তে আস্তে শুরু হচ্ছে।একদিন রাতে আমার ওয়াইফ ও আমার ছোট মেয়ে একসাথে শুয়ে ছিল। রাতে আমার যতদুর মনে আছে আমি ওয়াশরুমে যাবার আগে আমার ওয়াইফের সাথে কোন ঝগড়া করে ওয়াশরুমে যায়নি। বা আমার ওয়াইফকে তালাক দেবার কোন নিয়ত ও আমার ছিল না। সেদিন ওয়াশরুমে যাবার পর ওয়াশরুমে বসে থাকা কালিন তালাকের মাসায়ালা পড়ছিলাম। সম্ভবত ১ তালাক দেয়া বা এসব নিয়ে কিছু একটা পড়ছিলাম। যতদুর মনে পড়ে তখন আমি মনে মনে বলি যে, "যা এক তালাক দিয়ে দিলাম"। এভাবে কয়বার বললাম ঠিক মনে নেই। একবার ও হতে পারে, আবার ২ বার ও হতে পারে আবার তার অধিক ও হতে পারে, তবে বললেও ২ বার এর বেশি বলেছি বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু আমি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসার পর আর ঠিক মনে করতে পারছি না যে, আমি উচ্চারন করে বললাম না মনে মনে বললাম। আমার মনে হয়না যে, আমি উচ্চারন করে বলেছি। তবুও একবার মনে হয় উচ্চানর করিনি, আবার মনে হয় উচ্চারন করেও ফেলতে পারি। এরকম সন্দেহ আসে। এমনকি তখন যদি কেউ আমাকে জিগ্গাসা করতো তুমি কি তোমার ওয়াইফকে তালাক দিতে চাও? আমি বলতাম যে, না। কিন্তু আমি এই সন্দেহ সেদিন থেকে আজও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। সম্ভবত আমি মনে মনেই বলছিলাম। কারন, আজও আমি মাঝে মাঝে ওয়াশরুমে থাকাকালিন তালাক উচ্চারন না করেও মনে সন্দেহ হয় যে, উচ্চারন করলাম। এতদিন পরে আজ আবার এই সন্দেহ মনে আসছে।
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??
(১২) একটা সাইটে দেখলাম একজন প্রশ্ন করেছে যে, নিজেকে মাঝে মাঝে ফেরআউন নিজেকে যা মনে করতো তাই মনে হয়।
আমি যেটা দেখি বা শুনি আমার সেটা নিয়ে ওয়াসওয়াসা শুরু হয়ে যায়। একটা এপ্স দিয়ে সহজেই বলে দেয়া যায় যে, কার বিকাশ নাম্বার কার নামে খোলা আছে। তাই এক বন্ধুর কাছে নাম্বার চাচ্ছিলাম আর বলছিলাম আমি বলতে পারবো কার নামে খোলা আছে। তখন আমার খুব এক্সাইটেড লাগছিল। তখনি আমার মনেও নিজেকে বার বার আ** বলে মনে হচ্ছিল। এটা মনে হয় উপরের প্রশ্নটি থেকে আমার মাথায় ডুকেছে। বিষয়টা এমন হচ্ছে যেন আমি উচ্চারন করে ফেলবো। মাথা বাড়াতে বাড়াতে মাথা ব্যাথা হয়ে গেছে। এভাবে অস্থিরতার সাথে রাত কাটলো।সকালে আবারো সেম কথা মনে পড়ছে, ও আমার কেন জানি হাসি আসছে। এতে কি আমি ঈমান হারা হয়ে কাফের বা মুরতাদ হয়ে গেলাম শায়েখ??
(১৩) সকালে হালকা ঘুমের ঝিমকির মধ্যে শিরিকি কল্পোনা চলে আসছে। মূর্তি পূজা করার মত কল্পনা। এতে কি আমি ঈমানহারা হয়ে যাবো??
(১৪)আমার বিষয়ে আপনার মতামত কি শায়েখ? আমি কি আসলেই ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত?
(১৫) এসব আগের সন্দেহজনক বিভিন্ন ঘটনা কি আমার এখন মনে করা উচিত হচ্ছে শায়েখ??
(১৬)ঈমান ও তালাকের ব্যাপারে আমার মত ওয়াসওয়াসার স্বীকার ব্যাক্তির জন্য শরিয়তে কি ধরনের ছাড় রয়েছে?