আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
আমি এক জায়গায় শুনেছি যে,

যে ব্যাক্তি দৈনিক ১০০ বার আল্লাহ নামটি জিকির করবে।আল্লাহ তা'য়ালা তার ঈমান সুদৃঢ় করবেন পার্থিব কোনো লোভ লালসা তাকে  তার ঈমান নষ্ট করতে পারে না

আবার যে ব্যাক্তি ইয়া রহমান দৈনিক ১০০ বার পরবে আল্লাহ তা'য়ালা তার অন্তর থেকে গাফেলতা আর কর্কশতা দূর করবেন।

এরুপ আল্লাহর নামের জিকির নিয়ে অনেক ফজিলত আছে সেগুলো কি সহিহ আর সেগুলোর উপর কি আমল করা যাবে জানাবেন ইনশাআল্লাহ।
জাযাকাল্লাহ  খ্যাইরান

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


দৈনিক একশত বার যিকির সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের হাদীস পেয়েছি।

★একশত বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহী’ পাঠ করা:
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
من قال حين يصبح وحين يمسي سبحان الله وبحمده مائة مرة لم يأت أحد يوم القيامة بأفضل مما جاء به إلا أحد قال مثل ما قال أو زاد عليه ” . قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح غريب .
যে ব্যক্তি সকালে ও বিকালে একশত বার বলেঃ সুবাহানাল্লহি ওয়া বিহামদিহী”, কিয়ামতের দিন তার চাইলে উত্তম (আমালকারী) আর কেউ হবে না। তবে যে লোক তার ন্যায় কিংবা তার চাইতে অধিক পরিমান তা বলে (সে উত্তম ‘আমালকারী বলে গণ্য হবে)।”
[তাহ’লীকুর রাগিব (হাঃ ১/২২৬), মুসলিম। জামে’ আত তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৬৯]

★একশত বার ‘সুবহানাল্লাহ’ এবং ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ; পাঠ করা:
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ سَبَّحَ فِي دُبُرِ صَلَاةِ الْغَدَاةِ مِائَةَ تَسْبِيحَةٍ، وَهَلَّلَ مِائَةَ تَهْلِيلَةٍ، غُفِرَتْ لَهُ ذُنُوبُهُ، وَلَوْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
“যে ব্যক্তি সকালের সালাতের পর একশত বার সুবহানাল্লাহ এবং একশত বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে-যদিও তা সমুদ্রের ফেনাসম হয়। (সুনানে নাসাঈ, হা/ ১৩৫৪, সহীহ)

★একশত বার সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার এবং লাইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করা:
উম্মে হানি রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লা এর নিকট এসে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে গিয়েছি, আমাকে এমন একটি আমল শিখিয়ে দিন যা আমি বসে বসে পালন করতে পারবো। তিনি বলেনঃ

سَبِّحِي اللهَ مِائَةَ تَسْبِيحَةٍ، فَإِنَّهَا تَعْدِلُ لَكِ مِائَةَ رَقَبَةٍ تَعْتِقِينَهَا مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ
وَاحْمَدِي اللهَ مِائَةَ تَحْمِيدَةٍ، تَعْدِلُ لَكِ مِائَةَ فَرَسٍ مُسْرَجَةٍ مُلْجَمَةٍ تَحْمِلِينَ عَلَيْهَا فِي سَبِيلِ اللهِ.
وَكَبِّرِي اللَّهَ مِائَةَ تَكْبِيرَةٍ، فَإِنَّهَا تَعْدِلُ لَكِ مِائَةَ بَدَنَةٍ مُقَلَّدَةٍ مُتَقَبَّلَةٍ، وَهَلِّلِي اللَّهَ مِائَةَ تَهْلِيلَةٍ – قَالَ ابْنُ خَلَفٍ: أَحْسِبُهُ قَالَ:- تَمْلَأُ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، وَلَا يُرْفَعُ يَوْمَئِذٍ لِأَحَدٍ عَمَلٌ، إِلَّا أَنْ يَأْتِيَ بِمِثْلِ مَا أَتَيْتِ

“তুমি ১০০ বার “সুব’হা-নাল্লাহ” বলবে। তাহলে ইসমাঈল আ. এর বংশের ১০০টি ক্রীতদাস মুক্ত করার সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।
তুমি ১০০ বার “আল হামদু লিল্লাহ” বলবে, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মুজাহিদ প্রেরণের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে।
তুমি ১০০ বার “আল্লাহু আকবার” বলবে, তাহলে ১০০টি মাকবুল উট কুরবানির সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।
তুমি ১০০ বার ‘লা-ইলাহা ইল্লাহ’ বলবে, তাহলে (ইবনে খালাফ বলেন, আমার ধারণা তিনি বলেছেন) “তোমার সাওয়াবে আসমান ও জমীন পূর্ণ হয়ে যাবে এবং সে দিন তোমার মত আমল আর কারো (আল্লাহর নিকট) উঠানো হবে না অবশ্য কেউ তোমার সমপরিমান আমল করলে তার কথা ভিন্ন।
(মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকী, সহীহ তারগীব ওয়াত তাররহীব হা/১৫৫৩) 

★একশতবার আসতাগফিরুল্লাহ পাঠ করা:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী আগার আল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
إِنَّهُ لَيُغَانُ عَلَى قَلْبِي وَإِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ فِي الْيَوْمِ مِائَةَ مَرَّةٍ.
“আমার অন্তরে কখনো কখনো অলসতা দেখা দেয়, তাই আমি দৈনিক একশত বার ইস্তিগফার বা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকি।” (সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা বা ইসতিগ্ফার করা মুস্তাহাব হা/ ৬৭৫১)

★লাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ পাঠ করার ফজিলতও হাদীসে আছেঃ- 

قُلْ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ فَإِنَّهَا. كَنْزٌ مِنْ كُنُوزِ الْجَنَّةِ
“তুমি পড়বে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। কারণ এ দু‘আ হলো জান্নাতের রত্ন ভান্ডারগুলোর একটি।” [সহীহ বুখারী, হাদিস নম্বরঃ [6384] অধ্যায়ঃ ৮০/ দু‘আসমূহ (كتاب الدعوات) তাওহীদ পাবলিকেশন]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত আমল গুলোর কথা হুবহু হাদীসে খুজে পাইনি। 
তবে বুযুর্গদের অভিজ্ঞতা মোতাবেক আমল ও ফজিলত সহীহ।
এগুলোর উপর আমল করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...