আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
212 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম
একটা ছেলে একটা মেয়েকে মোবাইলে বিয়ে করে রাখে ওলি বাদে এবং অকিল বাদে. এখন তাদের মধ্যে সম্পর্ক নেই .  বিবাহের সময় ছেলেটা আহলে হাদিসদের কে সে ভালোবাসতো .মেয়েটা সম্পর্কে সে জানেনা .এখন ছেলেটার আহলে হাদিস সম্পর্কে ধারণা পাল্টে গেছে সে এখন হানাফী মাযহাব মেনে চলার চেষ্টা করে. হানাফী মাযহাবের আলেমরা বলে ওলি ছাড়া বিবাহ হয়  এবং ওকিল ছাড়া মোবাইলে বিবাহ হয় না..আর আহলে হাদিস এর মতে ওলি ছাড়া বিবাহ বাতিল এবং মোবাইলে বিবাহ জায়েজ...আমি তাকে বলেছি এখানে ভয়ের কিছুই নেই তুমি আহলে হাদিস এর মতামত নিলে তুমার ওলি নেই তাই বিবাহ হয় নি আর হানাফী মতামত নিলে অকিল বাদে মোবাইলে বিবাহ জায়েজ নেই তাই বিবাহ হয় নি. আমার মতামত  কি ঠিক  আছে??এখন  তার ভয় যদি কোনো কারণে ওলি বাদে ওকিল বাদে মোবাইলে বিবাহ জায়েজ হয়ে যায়.এখন উক্ত ছেলের ভয়ের কারণ কি ঠিক আছে?

1 Answer

0 votes
by (57,570 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষীগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ করা জায়েজ নয়। {ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫}

মোবাইলে বা টেলিফোনে বিবাহ করার পদ্ধতি হল-উভয় পক্ষ থেকে এক পক্ষ অপরপক্ষ যেখানে থাকে সেখানের কোন ব্যক্তিকে উকীল বানাবে অর্থাৎ ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ের নিকটে অথবা মেয়ে পক্ষ থেকে ছেলের নিকটে উকীল বানাবে। তারপর সে উকীল দু’জন সাক্ষীর সামনে বিবাহ করিয়ে দিবে। তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া সরাসরি মোবাইলে বা টেলিফোনে প্রস্তাব ও কবুল করার দ্বারা বিবাহ সহীহ হবে না।

হানাফি মাযহাব মতে যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/4801/

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

মোবাইল কলে উকিল নিযুক্ত করা ছাড়া বিয়ে হয়না। তাছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইজাব, কবুল ও সাক্ষী থাকা আবশ্যক। যদি উল্লেখিত শর্তগুলি না পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিয়েই হয়নি তাই তালাকের কোনো প্রশ্নই আসেনা। বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে মনে করে তারা যতবার আন্তরিক হয়েছেন, ততবারই তাদের যিনার গোনাহ হয়েছে। তাদের জন্য আবশ্যক নিজের অতীত গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে খালিছ নিয়তে তাওবাহ করা। আরো জানুন: https://ifatwa.info/14401/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...