বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইসলামের মৌলিক জিনিষকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা তিন ভাবে হতে পারে।
(১) কুফরী, যা মানুষকে ধর্ম থেকে বের করে দেয়।
(২)ফিসক তথা গোনাহের কাজ।তবে এজন্য কেউ ইসলাম থেকে বের হবে না।
(৩)কুফুর এবং ফিসকের মধ্যবর্তী।
(১)
কুরআন-হাদীস এবং রাসূলুল্লাহ সাঃ কে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা কুফরী।যা মানুষকে ধর্ম থেকে বের করে দেয়।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ قُلْ أَبِاللّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِؤُونَ
আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর, তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে?
لاَ تَعْتَذِرُواْ قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَانِكُمْ إِن نَّعْفُ عَن طَآئِفَةٍ مِّنكُمْ نُعَذِّبْ طَآئِفَةً بِأَنَّهُمْ كَانُواْ مُجْرِمِينَ
ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইও, তবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণ, তারা ছিল গোনাহগার।(সূরা তাওবাহ-৬৫/৬৬)
এর উপর সমস্ত উলামায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে।
(২)
কোনো মানুষের দুনিয়াবী কোনো জিনিষ বা কাজ নিয়ে ঠাট্টাতামাসা করলে সেটা ফিসক হবে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِّن قَوْمٍ عَسَى أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاء مِّن نِّسَاء عَسَى أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الاِسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।(সূরা হুজুরাত-১১)
(৩)
কুফুর এবং ফিসকের সম্ভাবনাময় ঠাট্টা বিদ্রুপ।
এটা হল,কোনো মুসলমানকে দ্বীনদারী ও সুন্নতি জীবন যাপনের জন্য ঠাট্টাবিদ্রুপ করা।
সুন্নতি জীবনযাপনের জন্য কাউকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করা কুফরী। তবে সুন্নতি জীবনযাপনের অধিকারী কাউকে নিয়ে এজন্য ঠাট্টাবিদ্রুপ করা যে, সে লোকদেখানোর আ'মল করছে,বা সে অতিরঞ্জন করছে,তাহলে এমতাবস্থায় এমন ঠাট্টাবিদ্রুপ ফিসকের অন্তর্ভুক্ত হবে।কেননা এটা ব্যক্তি কেন্দ্রিক ঠাট্টাবিদ্রুপ করা।
সু্প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি স্বামীকে সিজদা করার হাদীসকে হাদীস হিসেবে কেউ ঠাট্টাবিদ্রুপ করে,তাহলে তার ঈমান চলে যাবে।তবে যদি স্বামীকে সিজদা করার হাদীসকে শুনে নিজ স্বামীর কথা স্বরণে নিয়ে এসে কেউ হাই রিএক্ট করে,তাহলে তার একাজ অন্যায় বশত হলে,সেটা ফিসক হিসেবে গণ্য হবে।উপযুক্ত কারণে কেউ নিজ স্বামীর কথা স্বরণে নিয়ে এসে যদি হাই রিয়্যাক্ট করে,তাহলে সেটা কুফরী বা ফিসকি কাজ হবে না।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।