আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
১.আমি দুইদিন আগে আমার জীবিত খালাতো বোন কে স্বপ্নে দেখি।স্বপ্নের বিষয়বস্তু আবছা মনে থাকলেও,এটুকু মনে আছে যে আমি কাফনে মোড়ানো ওর লাশ কোলে নিয়েছিলাম।ওর চেহারা যখন আমার খালামণি উন্মুক্ত করে দেখাচ্ছিলো,তখন দেখেছিলাম চেহারা কিছুটা অন্য রকম হয়ে গেছিলো,খানিকটা বিকৃত আর কি।আর ওর মুখ টা হাসি হাসি ছিলো।দাঁত ও দেখা যাচ্ছিলো,কালচে কালচে ছিলো।এরপর থেকেই আমার নিজের মৃত্যু ভয় আমাকে চেপে ধরেছে।আমার খালি মনে হচ্ছিলো যে আমি হয়তো মারা যাবো।আমি আমার আম্মুকেও বিষয় টা বলেছিলাম

এরপর দিন আমার আম্মু স্বপ্ন দেখে,আমার আপন ছোটোবোন ট্রাক এর নিচে পড়ে গেছে।আম্মু আমাকে ফোন দিয়ে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে বললো,সাবধানে থাকতে বললো।

এই ঘটনার পর থেকে তো আমার সারাক্ষণ ই অস্বস্তিকর ভয় লাগছে,এই বুঝি মালাকুল মউত আসলো,আমি এখনই মারা যাবো।আজকেই মারা যাবো এমন মনে হচ্ছে কেবল।

তাছাড়া আমি শুনেছিলাম,মৃত্যুর আগে আগে নাকি মানুষ টের পায় সে যে মারা যাবে।আমার মনে হচ্ছে আমার ও এমন ই লাগতেছে।

আমার ভাবনা,ভয় টা কি অমূলক?নাকি আসলেই এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা আছে?আমি খুব ই আতঙ্কে আছি।একা বাসায় থাকতে পারতেছিনা।খুব ই ভয়ে ভয়ে থাকি।এক্ষেত্রে আমার আসলে কি করণীয়?আমি কি করতে পারি?


২.আমি যদি কারোর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে উমরাহ করি,তাহলে কি আমার উমরাহ হবে?

যেমন,আমি চাচ্ছিলাম আমার আব্বু-আম্মু কিংবা অন্য কারোর কাছ থেকে ধার করে উমরাহ করে আসতে।পরে আস্তে আস্তে শোধ করে দেবো ইন শা আল্লাহ।

যেহেতু আমার মৃত্যুভয় চেপে ধরেছে আমাকে,তাই আমি চাচ্ছিলাম যদি কোনোভাবে আল্লাহর ঘর থেকে আসা যায়।আমার এতো এতো গুনাহ,এই গুনাহ নিয়ে কবরে কীভাবে যাবো আমি আমি একা রুমেই থাকতে পারিনা,সেখানে একা কবরে থাকার কথা ও চিন্তা করতে পারিনা।এতো গুনাহের চিন্তায় আমি অস্থির।তাই চাচ্ছিলাম যদি কোনোভাবে আল্লাহর ঘরে যাওয়া যেতো,নিজের গুনাহ গুলো ঝড়িয়ে নিষ্পাপ হয়ে যদি আল্লাহর কাছে যাওয়া যেতো,এমন চিন্তা থেকেই আমি চাচ্ছিলাম।

কিন্তু এই মূহুর্তে আমার বা আমার স্বামী,কারোর পক্ষেই সম্ভব না উমরাহর টাকা ম্যানেজ করা।আমার আব্বু-আম্মুর ও এতোটা সম্ভব না।উনাদের কাছ থেকে নিলেও অন্য কারোর কাছ থেকে নিতেই হবে ধার।এভাবে করে কি আসলে উমরাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
https://ifatwa.info/30361/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,

হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
,
ومن رای انہ مات…………ان رای شیئا من ہیئۃ الاموات کالغسل والکفن فذالک زیادۃ فی نقص دینہ (تعطیر الانام ۲۹۱؍ج۲؍باب المیم،موت،مطبوعہ مصر)

যার সারমর্ম হলো কেহ স্বপ্নে দেখে যে সে মারা গিয়েছে,,বা মৃতদের হালত,কাফন গোসল ইত্যাদি  দেখে,তাহলে সেটি নিজের দ্বীনের কমতি মনে করতে হবে।
,
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ তে এসেছে যে স্বপ্নে মৃত মানুষ দেখা এটি কবরের কথা স্বরন করে দেওয়ার জন্য।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ ২৯/১৬০)


★ইবনে সিরীন [রহ] বলেন- যদি কেউ স্বপ্নে হিংস্র প্রাণী দেখে, তবে মনে করতে হবে, তা শয়তান এবং তাকে প্ররোচিত করতে উদ্যত হয়ে আছে। এজন্য তাকে দীনি কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। যদি কেউ হিংস্র প্রাণীর মাধ্যমে আঘাত প্রাপ্ত হয়, তাহলে শয়তান তার ওপর চড়াও হয়ে গেছে। সে রিপু ও জৈব তাড়নার বশবর্তী হয়ে পড়বে এবং নিস্কৃতির চেষ্টা করবে।
(আর-রুইয়াতু ওয়াত-তাবীর, ইবনে সিরীন [রহ] )

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার ভাবনা,ভয় টা অমূলক।
আসলে এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা নেই,ইনশাআল্লাহ। 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য করনীয় হলো আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে,পবিত্র হালতে থাকতে হবে,অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। 
দান ছদকাহ করতে হবে।
,
স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।

(০২)
আপনি যদি কাহারো কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে উমরাহ করেন,তাহলে আপনার উমরাহ হবে।

কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 237 views
...