আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
132 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (91 points)
edited by
ইজাব কবুলে বাবা-মা এর নাম ভুল সংক্রান্ত একটা বিষয় জানতে চেয়েছিলাম, আজকে একটু এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই্।

১. ইজাব কবুলের সময় বর-কনে উপস্থিত ছিলো। তবে, দুই জন দুই রুমে ছিলেন এবং উকিল দুজনের মাঝে ইজাব কবুল পড়িয়েছেন।এমন অবস্থায় কাজী সাহেব বরের বাবার নামের স্থলে সৎ বাবার নাম ব্যবহার করেছিলেন এমতাবস্থায় তাদের বিয়ে হয়েছে কি?

২. আমার নামের সাথে হাসান মোহাম্মদ, এবং একটি ডাক নাম  ও বাবার নামের সাথে হোসেন যুক্ত আছে।(বলেছিলেন আকিকার সময় এইভাবেই নাম রাখা হয়েছিলো)।  কিন্তু পরে কাগজ পত্রে নাম ছোট ও সহজ করার জন্য, আমার নামের সাথে "হাসান মোহাম্মদ" ও বাবার নাম থেকে "হোসেন " সরিয়ে সকল কাগজ পত্র তৈর করা হয়, আমরা এখন সেই সংক্ষিপ্ত নামেই অফিসিয়াল কাজ  করছি, আমার বিবাহের সময় আমার নাম ও আমার বাবার নামের সেই সংক্ষিপ্ত রুপেই বলা হয়েছে এভাবেই ইজাব কবুল হয়েছে।
(যেমন: হাসান মোহাম্মদ ***** চৌধুরী (ডাকনাম) ,  পিতা: **** হোসেন চৌধুরী (ডাকনাম) এভাবে পুরো নাম  না বলে  সোজাসোজি, **** চৌধুরী, পিতা : *****চৌধুরী এভাবে বলা হয়েছে)
এতে কি বিবাহ হয়েছে?

৩. ২ নং ক্ষেত্রে ইজাব কবুলের সময় সে আমার সাথেই ছিলো, উকিল বিবাহ পরিয়েছেন, নাম পরিচয় বলে বলে ইংগিত দেন নাই বা ইশরা দেন নাই,আমার বা তার দিকে।তবে সে আমার আগের পরিচিত। আমাদের বিয়ে কি হয়েছে?

৪. এভাবে নামের উচ্চারণে বা একই মানুষের নামের কিছু অংশ বাদ দিয়ে, বা আসল নামের জায়গায় ডাক নাম দিয়ে কেও যদি বিবাহ পড়ায় তার কি বিবাহ হবে?

৫. কোনো মিলাদ মাহফিলে " ইয়া হাবিবআল্লাহ,  মুঝছে মাদীনা পে বুলা" এভাবে বলা হলে, আমি এরা কি উদ্দেশ্যে এটা বলেছে এটা ভাবতে ভাবতে তাদের সাথে সেখানেই উপস্থিত ছিলাম, এবং মিলাদ শেষ করে বসেছি, এর ফলে আমার ইমানে সমস্যা হবে?

৬. কেও যদি চাকুরী বা কাজের কারনে জোহর আসর, ুবং মাগরিব এশা একসাথে পড়া যাবে এমন মত পোষন করে,তবে কি তার ইমানে সমস্যা হবে?

৭.কেও যদি মজা করে কাওকে বলে, " এই ছেলে ডিম থেকে পেকে এসেছে" (মায়ের পেট থেকে বুঝানোর জন্য ডিম থেকে বলেছে)। আল্লাহ কোরআনে গর্ভাবস্থার বিভিন্ন কথা বলেছেন এটা জেনেও ডিম থেকে এসেছে বলার দরুন কি ইমানে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://www.ifatwa.info/68501/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 
বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।

আরো জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো,বিবাহের ইজাব কবুলের সময় কাজি সাহেব যদি ছেলে/মেয়ের বাবার নামের ক্ষেত্রে ভুল বলে অর্থাৎ ছেলে/মেয়ের বাবার নামের ক্ষেত্রে অন্য নাম বা সৎ বাবার নাম বলে,এবং তার দিকে ছেলে/মেয়েকে নিসবত করে,তাহলে সেই ছেলে/মেয়ের বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।

অবশ্য যদি ছেলে/মেয়ে নিজেই সেই বিবাহের মজলিসে উপস্থিত থাকে,এবং উকিলের পরিবর্তে নিজেই ইজাব কবুল করে বা তার দিকে ইশারা করে ইজাব কবুল করা হয়,তাহলে ছেলে/মেয়ের বাবার নামে ভুল হওয়া সত্ত্বেও উক্ত বিবাহ হয়ে যাবে।

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3/ 26)
'' (غلط وكيلها بالنكاح في اسم أبيها بغير حضورها لم يصح)؛ للجهالة وكذا لو غلط في اسم بنته إلا إذا كانت حاضرةً وأشار إليها فيصح۔
(قوله: لم يصح)؛ لأن الغائبة يشترط ذكر اسمها واسم أبيها وجدها، وتقدم أنه إذا عرفها الشهود يكفي ذكر اسمها فقط خلافاً لابن الفضل، وعند الخصاف يكفي مطلقاً، والظاهر أنه في مسألتنا لا يصح عند الكل؛ لأن ذكر الاسم وحده لا يصرفها عن المراد إلى غيره، بخلاف ذكر الاسم منسوباً إلى أب آخر، فإن فاطمة بنت أحمد لا تصدق على فاطمة بنت محمد، تأمل، وكذا يقال فيما لو غلط في اسمها، (قوله: إلا إذا كانت حاضرةً إلخ) راجع إلى المسألتين: أي فإنها لو كانت مشاراً إليها وغلط في اسم أبيها أو اسمها لا يضر؛ لأن تعريف الإشارة الحسية أقوى من التسمية، لما في التسمية من الاشتراك لعارض فتلغو التسمية عندها، كما لو قال: اقتديت بزيد هذا، فإذا هو عمرو، فإنه يصح''
সারমর্মঃ-
যদি উকিল মেয়ের অনুপস্থিতিতে মেয়ের বাবার নামে ভুল করে,তাহলে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।
হ্যাঁ যদি মেয়ে সেই মজলিসে উপস্থিত থাকে,এবং তার দিকে ইশারা করা হয়,সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ হয়ে যাবে।

বিবাহের ইজাব কবুলের বলার সময় ছেলে নিজেই যদি সেখানে উপস্থিত থাকে,ইজাব/কবুল করে, সেক্ষেত্রে ছেলে বাবার নামে ভুল হলেও সেই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এখানে দুই ঘর হলেও যেহেতু বর ও কনে নিজেরাই উপস্থিত ছিলেন, ও ইজাব কবুল তারা নিজেরাই করেছেন,সুতরাং এই বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে। 

(০২)
এতে বিবাহ হয়েছে।

(০৩)
আপনাদের বিবাহ হয়েছে। 

(০৪)
হ্যাঁ, তার বিবাহ হবে।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ঈমানের সমস্যা হবেনা।

(০৬)
এতে তার ঈমানের সমস্যা হবেনা।

(০৭)
ডিম থেকে এসেছে বলার দরুন তার ঈমানে সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...