আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (28 points)
আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে যারা জানে, হারাম খেলে ইবাদত কবুল হয় না এবং যেনা করলে ইমান থাকে না। তারপরেও হারাম খায় এবং শারীরিকভাবে যেনা করে। আমার প্রশ্ন হলো: এসব লোক আবার নামাজ, রোজা সহ সকল ইবাদতও করে। তাহলে-

১. এসব লোকের ইবাদত কবুল হতে পারে কি?
২. এসব লোক এবং বেনামাজি ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য কি? মানে এরা তো ইবাদত করছে। আর বেনামাজি তো ইবাদত করছে না। এসব লোক কি বেনামাজি থেকে ভালো? মানে বিষয়টি ভালোমত খুলে বলুন। দুনিয়া এবং আখিরাতে কি হতে পারে এই দুই টাইপের লোকদের মধ্যে?

৩. আমাদের সমাজে প্রায় সবাই বর্তমানে হারাম খায়। যেমন: দোকানদার সিগারেট বিক্রি করে। তাই তার ইনকাম হারাম হচ্ছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় হারাম ঢুকেছে। সরকারি চাকরিজীবীরা কাজে ফাঁকি দিয়ে বেতন নিচ্ছে। টাকা ধার কেউ দেয় না। সবাই সুদ চায়। মানে ইন্টারেস্ট বলে যেটাকে। হুজুর চিন্তা করলে- বর্তমানে ৯৯% লোক হারাম খায়।  মানে হালাল হয়ত খায়, তবে হারামও যুক্ত আছে। এসব লোকের ইবাদত কবুল হবে? বিস্তারিত বলুন

৪. কোনো এক ব্যক্তি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোকে বিশ্বাস করে। তবে সে পাপের বিষয়ে জানা সত্ত্বেও সব ধরনের পাপ করে। আবার নামাজ, রোজাসহ সকল ইবাদতও করে। তার ইবাদতগুলোর কি হবে? সে তো হারাম খায়, যেনা করে। মানে খুব খারাপ লোক।

৫. আমাদের সমাজে সবাই বিপদে পড়ে টাকা লোন নেয়। তাদের ইবাদত কবুল হবে? কারণ তারা হারাম খায়

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এর মধ্যে যে ব্যাক্তি হারাম খায়,তাত ইবাদত কবুল হবেনা।

যেনা কারির ইবাদত কবুল না হওয়া নিয়ে কোনো হাদীস নেই,যেনার জন্য তার আলাদা শাস্তির বিধান শরীয়তে রয়েছে।

(০২)
এসব লোক এবং বেনামাজি ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য আছে।

তাদের নামাজ সহীহ ভাবে হলে এই নামাজই তাদের একদিন অন্যায় ও অশ্লীল কাজ হতে বাধা দিবে,ইনশাআল্লাহ  

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

 اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ لَذِکۡرُ اللّٰہِ اَکۡبَرُ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ ﴿۴۵﴾ 
নিশ্চয় সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন।
(সুরা আনকাবুত ৪৫)

হাদীস শরীফে এসেছে, 
এক লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, অমুক লোক রাতে সালাত আদায় করে, আর সকাল হলে চুরি করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অচিরেই তার সালাত তাকে তা থেকে নিষেধ করবে। [মুসনাদে আহমাদ: ২/৪৪৭]

(০৩)
এখানে সব হারাম নয়।
দোকানদার সিগারেট বিক্রি করলে ইনকাম হারাম নয়।
ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সূদ আসলেও অনেকে সেটি গ্রহন করেননা বা সেটি গরিব মিসকিনদেরকে দান করে দয়ে থাকেন।

তাই মনে হচ্ছে যে ঢালাওভাবে এটি বলা ঠিক নয় যে বর্তমানে ৯৯% লোক হারাম খায়।

(০৪)
সে হারাম খেলে তার ইবাদত কবুল হবেনা।

(০৫)
লোন নিলে সে সূদ প্রদান করে,সে তো নিজে সূদ খায়না।
তাই এখানে তার ইবাদত কবুল হওয়াতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।

হ্যাঁ, তার সূদ প্রদানের গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...