বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/48500/ নং ফাতাওয়ায়
বলেছি যে,
নামাযের মধ্যে পঠিত সূরার সমূহের ধারাবাহিকতা (কুরআনে বিদ্যমান
বিন্যাস) রক্ষা করা ওয়াজিব। তবে কোনো কারণে যদি উক্ত ওয়াজিব তরক হয়ে যায় তবে সেজাদায়ে
সাহু আসবে না, এবং নামাযকে
দোহরাতেও হবে না। বরং নামায আদায় হয়ে যাবে। (কিতাবুল ফাতাওয়া-২/২০৩)
ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে ক্বেরাত পড়া মাকরুহ।
তবে অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না।
হ্যাঁ
এ দুই রা'কাতে সূরায়ে ফাতেহা তেলাওয়াত করা ওয়াজিব এবং সাথে আরও
একটি সূরা মিলানো ওয়াজিব।
(বিঃদ্রঃ ফরয ছেড়ে
দিলে নামায হয় না কিন্তু ওয়াজিব ছেড়ে দিলে সেজদায়ে সাহুর সাথে নামায আদায় হয়ে যাবে)
ফরয
নামাযের শেষ দুই রা'কাতে তেলাওয়াত করা সুন্নাত। চায় সূরায়ে ফাতেহা হোক বা
কুরআনের অন্য কোনো সূরা হোক। কেউ ইচ্ছা করলে শেষ দুই রা'কাতে
সূরায়ে ফাতেহার সাথে অন্য যেকোনো সূরাকেও মিলাতে পারে। এমনকি সারা কুরআনও পড়তে পারে।
এতে কোনো সমস্যা নাই। তবে শুধুমাত্র সূরায়ে ফাতেহা পড়া মুস্তাহাব। সূরায়ে ফাতেহা ব্যতীত
অন্য সূরা পড়ে নিলেও এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। (আহসানুল ফাতাওয়া;৪/৫০
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ;৭/৪১২)
https://ifatwa.info/47339/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
নামাযে
কিরাত পড়া ফরয।সূরা ফাতেহা ওয়াজিব এবং সূরা মিলানো ওয়াজিব। বড় একটি আয়াত এবং ছোট্ট
তিনটি আয়াত পরিমাণ মিলানো ওয়াজিব।
যখন
কেউ সূরা ফাতেহা পড়ার পর বড় একটি আয়াত বা ছোট্ট তিনটি আয়াত পরিমাণ পড়ে নেবে, তার
নামায হয়ে যাবে। কিন্তু যদি বড় একটি আয়াত বা ছোট্ট তিনটি আয়াত পরিমাণ না হয়,তাহলে
তাকে সাহু সিজদা দিতে হবে।
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.
(ক) এই হল ফরয নামাযে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার বিধান। তবে নফল নামাযে ধারাবাহিকতা রক্ষা
করা জরুরী কোনো বিষয় নয়।
(খ)
উক্ত ধারাবাহিকতা বলতে এ রকম নয় যে, সূরা
ফীল পড়লে পরের রাকাতে তাকে সূরা কুরাইশই পড়তে হবে। বরং ধারাবাহিকতা বলতে বুঝায় কুরআনুল
কারীমে যেই সূরা আগে আছে সেটাকে আগের রাকাতে তেলাওয়াত করা। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে
প্রথম রাকাতে সূরা ফীল তেলাওয়াত করলে পরের রাকাতে সূরা ইখলাস পড়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা
নেই।
প্রশ্নে বর্ণিত সূরাগুলো ধারাবাহিক ভাবে উল্লেখ করা হলো-
সুরা তীন(৯৫), সুরা ক্বদর(৯৭), সুরা আসর (১০৩), সুরা ফীল(১০৫), সুরা কুরাইশ(১০৬), সুরা মাউন(১০৭), সুরা কাওসার(১০৮), সুরা কাফিরুন(১০৯), সুরা নাসর(১১০), সুরা লাহাব(১১১), সুরা ইখলাস(১১২), সুরা ফালাক(১১৩), সুরা নাস(১১৪)
২. জী, আপনাকে
ফরজ নামাজের পাশাপশি বিতর নামাজেরও কাযা আদায় করতে হবে।
হাদীস শরীফে
এসেছে-
عَنْ
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا
رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا
ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى
অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে
গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১ মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي
الفتاوى رجل يقضي الفوائت فإنه يقضي الوتر وإن لم يستيقن أنه هل بقي عليه وتر أو
لم يبق فإنه يصلي ثلاث ركعات ويقنت ثم يقعد قدر التشهد ثم يصلي ركعة أخرى فإن كان
وترا فقد أداه وإن لم يكن فقد صلى التطوع أربعا ولا يضره القنوت في التطوع
ফাতাওয়ার কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,একজন ব্যক্তি
সে তার জীবনের ছুটে যাওয়া নামায সমূহের কা'যা করতেছে।তাহলে সে বিতিরেরও কা'যা করবে।যদি
নিশ্চিত না থাকে যে,তার উপর কোনো বিতির কা'যা রয়েছে কি না?তাহলে সে তিন রা'কাত কা'যা পড়বে,এবং কুনুত করবে।অতঃপর তাশাহুদ পরিমাণ সময় বৈঠক করবে।অতঃপর আরো
এক রাকাত পড়বে।যদি সেটা বিতির হয়ে থাকে, তাহলে সেটা আদায় হয়ে যাবে।আর যদি বিতির না হয়ে থাকে,তাহলে তো সে
চার রাকাত পড়েই নিয়েছে যা নফল হিসেবে গণ্য হবে।নফল নামাযে কুনুত করাতে কোনো সমস্যা
নেই। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১২৫)
বিতির নামাজের কাযা সংক্রান্ত আরো জানুন
https://ifatwa.info/2053/
বিতির নামাজ ৩ রাকাত
https://ifatwa.info/4372/?show=4374#a4374