আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আ'লাইকুম।


আমি গত পরশুদিন আব্বু আম্মুর সাথে সহশিক্ষায় ন যাওয়ার বিষয়ে তর্কে জড়িয়ে যাই।আমার প্রচন্ড রাগ হয়।পরে আমি একটি কাগজে "বাপ-মা শব্দটাই ভুয়া" লিখে টেবিলের সামনে টানিয়ে রাখি। আব্বু আম্মু এটা দেখে প্রচন্ড রেগে যায়।তারা একসাথে বলতে থাকে যে আমি নাস্তিক,কাফির হয়ে গেছি।আমাকে নতুন করে কালেমা পড়ে ইসলামে আসতে হবে।আমার দুনিয়া আখিরাত কোনোটাই নাই,আমার সিজদা কবুল হয় কি না সন্দেহ।আমি আমার কৃতকর্মের জন্য প্রচন্ড অনুতপ্ত। আমি এমনিতে আব্বু আম্মুকে ভালোবাসি,তাদের জন্য প্রচুর দুআ করি কিন্তু রাগের মাথায় হুশ থাকে না আর আমিও বোকামি করে ফেলছি।


১.আমার কেমন পাপ হয়েছে?কবীরা গুনাহ?আমাকে কি আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন না ?তাদের কথানুযায়ী,সত্যি সত্যিই কি আমার দুনিয়া আখিরাত দুইটাই যাবে?


২.আমার এখন কী করণীয়?আমি মাফ চাইলেও যদি তারা মাফ না করেন তখন কী করবো?


৩.রাগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে করবো?আর বাবা মায়ের সাথে সদ্ব্যবহারের বিষয়ে যদি নসীহাহ দিতেন।


৪.আমার কি সত্যি সত্যিই ইমান চলে গেছে?অনেক সময় তারা আমার গাইরে মাহরাম ভাইদের সামনে চেহারা খুলতে বলে,আমি না খুললে যদি অভিশাপ দেয় সেটা কি আমার লাগবে?আমার কি চেহারা দেখানো উচিত?


৫.আম্মু উপরিউক্ত কারণে গতকাল আমার বেশ কয়েকটি ইসলামিক ব‌ই ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন যেগুলোতে অনেক কুর‌আনের আয়াত ছিল।এতে কি আমার আর আম্মুর দুজনের‌ই গুনাহ হয়েছে?

.তাদের সাথে সফরে গেলে আসরের নামাজ পড়েও বের হলে দেখা যায় যে মাগরিবের নামাজ কাযা হ‌ওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আমি যদি জেদ করি যে পরদিন সকালে যাবো,এটা কি ঠিক হবে নাকি তাদের সাথে ওইদিন‌ই যাওয়া উচিত উচিত?তাতে তারা আমাকে অভিশাপ দিলে কি আমার লাগবে?


মুহতারাম, কষ্ট করে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিয়েন।আমি এখন সত্যিই ডিপ্রেসড,আল্লাহ আমাকে কি ক্ষমা করবেন?

বিবিধ-মাসয়ালা জায়েজ-নাজায়েজ #halal_haram

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।
وَإِن جَاهَدَاكَ عَلَىٰ أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا ۖ وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا ۖ وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।(সূরা লুকমান-১৪/১৫)

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনি ইসরাঈল-২৩)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মাতাপিতার সাথে সর্বদা উত্তম আচরণ করতে হবে। কখনো তাদের সাথে রাগ করা যাবে না। আপনি মাতাপাতার কাছে ক্ষমা চাইবেন।তবে আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না। যেহেতু আপনি সহশিক্ষা বিষয় নিয়ে তর্ক করতে যেয়ে বলেছেন, তাই আপনার গোনাহও হবে না।


মাগরিবে সফরে যেতে না করার ক্ষেত্রে মাতাপিতা যদি যাওয়ার জন্য বলে, তাহলে এক্ষেত্রে জেদ ধরাতে কোনো গোনাহ হবে না।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1707


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) আপনি মাতাপিতার কাছে ক্ষমা চাইবেন, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন।তবে আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।


(২)আপনি মাফ চাওয়ার পর যদি তারা মাফ না করেন, তাহলে শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই ক্ষমা চাইবেন।


(৩)যখনই মনে রাগ চলে আসবে, আপনি আউযু বিল্লাহি মিনাশ-শাইতানির রাজিম পড়ে নিবেন।দাড়ানো থাকলে বসে যাবেন।


(৪) আল্লাহর অবাধ্যতায় মাতাপিতার বিধিনিষেধকে মান্য করা যাবে না। সুতরাং গায়রে মাহরাম কারো সামনে মুখ খুলার আদেশ দিলে তখন সেই আদেশকে মান্য করা আপনার জন্য জায়েয হবে না।

(৫)জ্বী, আপনার আম্মুর গোনাহ হবে।আল্লাহ উনাকে তাওবাহর তাওফিক দান করুক।আমীন।

জ্বী , নামাযের সময়কে যত্নসহকারে মূল্যায়ন করার নিমিত্তে সফরের সিডিউলকে ঠিক করার জন্য আপনি জেদ ধরতে পারবেন।এখানে মাতাপিতার আদেশ নিষেধকে মান্য করা ওয়াজিব নয়।কেননা আল্লাহর বিধানের উল্টো কারো কথাকে মান্য করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...