আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (72 points)
আসসালামু আ'লাইকুম
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বাসায় দুই রিলেটিভ রাখা নিয়ে প্রায়শই ঝগড়া হচ্ছে
কারণ স্বামীর অনিচ্ছাসত্ত্বেও রাখতে হবে পরিবারের কারণে..স্বামী একক কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।এটা স্ত্রীও বুঝে কিন্তু কোনভাবে মানতে পারছে না বিষয়টা (কারণ স্ত্রী ওয়াসওয়াসা রোগী আর একজন রিলেটিভ নিয়ে মাথায় পোকা ঢুকছে)

আর দুই রিলেটিভের মধ্যে একজনকে নিয়ে স্ত্রী স্বপ্নও দেখছে (ওরকম কিছুই না... স্ত্রীর ওভারথিকিং এর কারণে হতে পারে)

স্বামী বলে ইগনোর করো....তুমি তোমার মত থাকো...ওরা তো তোমার অসুবিধা করছে না.... আল্লাহ চাচ্ছেন বলে ওরা আমাদের বাসায় আছে...এইরকম আরো অনেক কথা...মূলত স্বামী স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছে....তখন বলে পজিটিভ ভাবো... স্ত্রী তখন বলে নেগেটিভও তো হতে পারে।স্ত্রী যা ভাবছে তা হয়ত আল্লাহ স্ত্রীকে আগে থেকে জানান দিচ্ছেন? হুবহু কি কথা সেটা মনে নেই।এতটুকু মনে আছে আল্লাহ মনের মধ্যে নেগেটিভ ভাইভটা দিতে পারেন যাতে সতর্ক হয়।মূল কথা এটাই ছিল হয়ত শব্দ চয়নে ভুল ছিল(এইরকম কিছু)
স্বামী তখন বলে ওঠে তোমার এই কথায় শিরক হবে

স্ত্রী বুঝাতে চেয়েছিল অনেক সময় বিপদ আপদ আসলে তো মানুষ কিছুটা আন্দাজ করে.. নেগেটিভ ভাইভ কাজ করে...রিলেটিভকে নিয়ে এলোমেলো চিন্তা এইরকমও হতে পারে এতটুকুই।কিন্তু স্বামী মানতে নারাজ বলে এগুলো তোমার অতিরিক্ত চিন্তার কারণে মনে হচ্ছে।আমি তো এমন না তাহলে তুমি কি নিয়ে ভয় পাচ্ছো?
১।আসলেই কি স্বামীর কথা সত্য( শি* এর ব্যাপারটা)

২। স্ত্রী বেশকিছুদিন বাপের বাড়ি থেকে বেড়ায় আসছে কিন্তু এই রিলেটিভ সমস্যার কারণে স্বামীর সাথেও কোনভাবে ইজি হতে পারছে না।

স্ত্রীর এমন বিহেভিয়ারে স্বামী বলে "তুমি আমার থেকে দূরে সরতে চাচ্ছো, সম্পর্কটা তিতা বানাচ্ছো,দূরত্ব চলে আসতেছে নিজেদের মধ্যে,বাপের বাড়ি থেকে আসছো কয় স্বামীর সাথে সুন্দর করে কথা বলবা তা না করে এমন বিহেভ করতেছো যেন আমি তোমার পরপুরুষ"

তুমি আমার সাথে কথা বলবা না কোনদিন,তুমি তোমার মত থাকো আমি আমার মত থাকি,তুমি আগে সুস্থ হও,তুমি ওদের সাথে ওরকম বিহেভ করলে আমার সাথেও কথা বলিও না এইরকম আরো অনেক কথা

স্ত্রী স্বামীকে বলে বাচ্চা হচ্ছে না সেটা বাসায় বলে দাও...তখন স্বামী বলে উঠে তোমাকে তোমাদের বাসায় রাখার জন্য বিয়ে করিনাই। স্ত্রী আবার জিজ্ঞেস করে স্ত্রী তো বাপের বাড়ির কথা বলে নাই জাস্ট বলতে চায়ছে তোমার বাসায় জানাও।তখন স্বামী বলে তুমি কথাটা বলসো কারণ তুমি ভাবতেছো বাচ্চা না হলে আম্মা তোমাকে তোমাদের বাসায় পাঠায় দিবে এইরকম কিছু

স্ত্রী বলে এইরকম কিছু না তুমি বলসো কথা...তাহলে তোমার মনে এটা ছিল মানে স্ত্রীকে পাঠায় দেয়ার ব্যাপারটা..স্বামী বলে সে বলসে বাপের বাড়ি রাখার জন্য বিয়ে করে নাই।বাচ্চা এখন না হলে ১০বছর হবে,২০ বছর পরে হবে

স্ত্রী বলে নাহলে? স্বামী বলে ওটা আল্লাহ জানেন

আরো অনেক কথা স্ত্রীর মনে নাই
স্ত্রী পুরো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
হুজুর  উপরোক্ত স্বামী-স্ত্রীর এমন আলোচনায় তাদের বৈবাহিক জীবনে কোন অসুবিধা হবে?

1 Answer

0 votes
by (564,720 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এ কথা গুলি দ্বারা শিরক হবেনা।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★★শরিয়তের পরিভাষায় অস্পষ্ট বাক্যে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ (যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়।)
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে তালাক হবে।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,আপনার স্বামী আপনাকে বলেছেঃ-
"তুমি আমার সাথে কথা বলবা না কোনদিন,তুমি তোমার মত থাকো আমি আমার মত থাকি"

উক্ত কথা গুলি স্বামী তালাক প্রদানের উদ্দেশ্যে বলে থাকলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। 

আর যদি উক্ত বাক্য গুলি বলার সময় স্বামীর তালাক প্রদানের কোনো নিয়ত না থাকে,সেক্ষেত্রে কোনো তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (72 points)
স্বামীকে উত্তরটা দেখানো হয়েছে.... সে পড়ে বলে উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে
স্ত্রী বলে স্বামীর উদ্দেশ্য সে জানে নাকি,স্বামী বলে আমি জানি আমার উদ্দেশ্য 
তুমি কি আমার ভিতর ঢুকে দেখসো?
এই কথায় স্বামী মিথ্যা বললেও কি অসুবিধা হবে?
by (564,720 points)
স্বামী যদি বলে যে তার তালাক প্রদানের নিয়ত ছিলোনা,তাহলে তালাক হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...